কালো চাল হল একটি বিশেষ ধরণের চাল যার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে৷ কিছু কিছু কালো চাল বেশ আঠালো প্রকৃতিরও হয়ে থাকে৷ খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে এটি বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত না হলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান-উৎসবে এর ব্যবহার রয়েছে৷ খিচুড়ি, পায়েস, পোলাও বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায় এটি৷ এই চালে থাকা বিভিন্ন ধরণের উপাদান শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী৷ সাদা চালের ভাত থেকেও অনেক বেশি গুণসম্পন্ন এই কালো চাল৷
সম্প্রতি মণিপুরে কালো চাল, যা চক-হাও বা চাখাও নামে পরিচিত, তা তার স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে ভৌগোলিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে৷ মণিপুর স্মল ফার্মারস এগ্রি বিজনেস কনসোর্টিয়াম-এর মতে, চাখাও আমুবি এবং চাখাও পোইরিটন, এই দুই প্রকারের কালো চাল জনপ্রিয়৷ দ্বিতীয়টি তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়৷ তবে এই চাল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয় না৷
কাপের এক চতুর্থাংশ চালে (রান্না না করা) থাকে- ১৬০ ক্যালোরি, ৪গ্রাম প্রোটিন, ১.৫গ্রাম ফ্যাট, ১ গ্রাম ফাইবার, ১ মিলিগ্রাম আয়রন বিদ্যমান৷ জলে দ্রবীভূত অ্যান্থোসায়ানিন মূলত এর কালো বর্ণের জন্য দায়ী।
এই কালো চাল উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ৷ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানও৷ মনে করা হয়, এই কালো চাল হাইপারটেনশন, আর্থ্রাইটিসের মতো বেশ কিছু রোগ বা শারীরিক সমস্যাকে প্রতিহত করতে সাহায্য করে৷ এছাড়া, অ্যালঝাইমার্স-এর মোকাবিলা থেকে ক্যানসারের মতো রোগকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে এই চাল, এমনও মনে করা হয়৷
ভারতে সাধারণত উত্তর-পূর্বদিকে এবং দক্ষিণে এর চাষ হয়৷ এই চালের ঔষধি গুণও প্রচুর৷ এই চাল ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রনে ভরপুর৷ ওজন নিয়ন্ত্রণ, পরিপাকে সাহায্য, শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই কালো চাল৷
১) কালো চালে চিনির পরিমাণ খানিকটা কম, এতে রয়েছে আঁশ, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়৷ এতে বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদানও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়৷
২) কালো চালে ক্যালোরির পরিমাণ কম, এবং এতে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেশি। এটি লিভার ঠিক রাখতে যেমন সাহায্য করে তেমনই হজমেও সহায়তা করে৷
৩) রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে৷
৪) এই কালো চালে থাকে দু প্রকারের ক্যারোটিনয়েডস যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷
৫) এটি কোলোরেক্টল ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে বলেও দাবি করা হয়৷ যদি ক্যানসার প্রতিরোধে এর ভূমিকা কতখানি তা নিয়ে গবেষণা চলছে বলে জানা গিয়েছে৷
৬) কালো চালের ভাত খেলে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হওয়ার কোনও আশঙ্কাই হ্রাস পায়৷
বর্ষা চ্যাটার্জি
Share your comments