একটি শিশু একটি ফুলের মত হয়। তাকে সযত্নে বড় করে তুলতে হয়। তবেই সেই ফুল নিজের আকার, গন্ধ আর রং নিয়ে প্রস্ফুটিত হয়। আর যত্নে যদি একটু কমতি থাকে তাহলে সেই ফুল প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই ঝরে পড়ে যায়। তাই ছোট থেকেই নিজের সন্তানের প্রতি নজর দিন। তার কি চাই কি চাইনা সেগুলি বোঝার চেষ্টা করুন। তবেই সেই সন্তানও ছোট্ট চারা থেকে গাছ হয়ে উঠবে।
ছোটদের মানসিক স্বাস্থ্য
আমরা সবসময় ছোটদের শারীরিক দিক নিয়ে আলোচনা করি। ডাক্তারের কাছে যায়। চিন্তিত হয়ে পড়ি। কিন্তু তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য? সেদিকে খেয়াল করা হয়? ওদেরও মানসিক রোগ হতে পারে সেটা আমাদের ভাবতেই কেমন একটা লাগে। কিন্তু বর্তমানে এই শিশুদের মানসিক রোগের সংখ্যাটা বাড়ছে। বাবা মায়ের এই বিষয়ে অনেক সচেতন হতে হবে। শিশু মনের গতিপ্রকৃতি বুঝতে হবে। যদি আপনার সন্তানের বয়স তিন বছরের কম হয় সেক্ষেত্রে শিশুর আচরণ লক্ষ্য করুন। সবসময় মায়ের পিছনে ঘুরছে, ঘুমের মধ্যে ভয় পাচ্ছে। তার মধ্যে একা একা থাকার প্রবনতা বাড়ছে এগুলি দেখেই আপনাকে বুঝতে হবে কিছু সমস্যা হচ্ছে।
এরপর আসা যাক ৫ থেকে ১২ বছর বয়সের সন্তান এর ক্ষেত্রে। সমীক্ষা বলছে এই বয়সে মানসিক সমস্যা বেশি দেখা গেছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে বাড়ির পরিবেশ, স্কুলে নির্যাতিত, মনের মত বন্ধু না পাওয়া। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার।
আরও পড়ুনঃ আপেলে রয়েছে মৃত্যুফাঁদ! গবেষণায় উঠে এল অবিশ্বাস্য তথ্য, জেনে নিন
এই রোগের আরও একদল শিকার সেগুলি হল টিন এজ। এই বয়সে তাদের শারীরিক এবং মানসিক অনেক পরিবর্তন আসে। তাই অভিভাবকদের প্রচুর সচেতন হতে হবে। সন্তানদের সময় দিতে হবে। তাদের বন্ধু হয়ে উঠতে হবে।
দাদু ঠাকুমার সঙ্গে সময় কাটানো
অনেক অভিভাবক সন্তানদের দাদু ঠাকুমার থেকে দূরে রাখতে পছন্দ করেন। কিন্তু জানেন কি বাচ্চাদের সঙ্গী তারাই হতে পারে। কারণ বয়সকালে তাঁদের চাওয়া পাওয়া আর কিছু থাকে না। তারা আনন্দ খোঁজে। তাই তাঁদের মধ্যে থাকে শুধু পজিটিভ অ্যানার্জি। আর সেই অ্যানার্জির প্রতিফলন আপনার সন্তানের ওপরও পড়বে। দাদু ঠাকুমার কাছে গল্প শুনে ঘুমিয়ে পড়বে আপনার সন্তান। তখন আর ওই ফোনের দরকার পড়বেনা। আমাদের দেশের সংস্কৃতি নিয়ে আপনার সন্তানদের অবগত করবে ওই দাদু ঠাকুমা।
চাইলেই দামি উপহার নয়
জিনিসের মূল্য বোঝাতে হবে। শিশুদের বোঝানো উচিত সকলের পক্ষে সব খরচ করা সম্ভব নয়। ছোট থেকেই আপনার সন্তান জীবনের মূল্যবোধ বোঝে তাহলে ভবিষ্যতে সে যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে। আপনার সন্তান যদি দামি উপহার চাইছে সেক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গেই তার হাতে সেটি ধরিয়ে দেবেন না। তাকে বোঝান সময় চান। তাকে বলুন দেবেন কিন্তু সময় লাগবে। তাহলে সে বুঝবে কিছু জিনিস পেতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বাদাম খেলে আপনি সুস্থ থাকবেন, সকালে খালি পেটে খেলে অসাধারণ উপকার পাবেন
সময় দিন
আপনার সন্তানের জন্য সবচেয়ে দামি উপহার হল আপনার সময়। তার বন্ধু হয়ে উঠুন। তার মনে কি চলছে সেটি বোঝার চেষ্টা করুন। আজ স্কুলে কি হল সারাদিন সে কি করলো সেগুলি জিজ্ঞেস করুন। সে প্রাণ খুলে বলবে যখন আপনি এদিক ওদিক মনোযোগ না দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে শুনুন।
স্মার্ট ফোনকে বাই বাই
সন্তানের সামনে মা এবং বাবা দুজনেই ফোন থেকে দূরে থাকুন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন। আপনার খুদে আপনার থেকেই শিখবে সব। তাই তার আশেপাশের পরিবেশ আপনি যা করবেন আপনার খুদেও সেটাই শিখবে।
আরও পড়ুনঃ China Coronavirus: করোনা থেকে বাঁচতে চিনাদের নতুন হাতিয়ার পাতিলেবু
শাসন সবার সামনে নয়
শিশুদের শাসন করা উচিত কিন্তু সকলের সামনে নয়। সে কিছু দুষ্টুমি করলে বাড়ি ভরতি লোকের সামনে নয় তাকে পরে আলাদাভাবে বুঝিয়ে বলবেন। শিশুদেরও আত্মসম্মান হয়। সকলের সামনে কিছু বললে সেটি তাদের মনে জমা থেকে যায়। আর এর থেকেই মানসিক সমস্যার সূচনা হয়।
প্রশংসা সকলের সামনে
আপনার শিশুর মন খুলে প্রশংসা করুন। যদি সে একটি ছবি আঁকে সেটি সকলকে দেখান। সন্তানের রুমের দেওয়ালে রাখুন। বাড়িতে বন্ধু আত্মীয় এলে তাঁদের দেখান।
Share your comments