গরম যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে ততই বাড়ছে অসুস্থতা । পচন্ড গরমে নানারকম অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারন মানুষ । বিশেষ করে শিশু বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে গরমের সময়টা একটু বেশিই বিপজ্জনক। অতিরিক্ত গরমে প্রায়ই দেখা যায় হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারন মানুষ ।
প্রচন্ড গরমে প্রায়ই হিট স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে। একটি মারাত্মক পরিস্থিতি হচ্ছে হিট স্ট্রোক। দ্রুত এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা সেবা না পেলে একজন আক্রান্ত ব্যক্তির ব্রেইনসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গসমূহ পুরোপুরি অকেজো হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে । তাই হিট স্ট্রোক সম্পর্কে প্রত্যেকেরই কমবেশি কিছু ধারণা থাকা প্রয়োজন । তাহলে চলুন হিট স্ট্রোক কি, এর লক্ষন ,এবং হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় সর্ম্পকে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ।
আরও পড়ুনঃ দক্ষিনবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা! কী করবেন আর কী করবেন না
হিট স্ট্রোক কি ?
হিট স্ট্রোক এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া। আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্ত দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখ যোগ্য় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু কোনো কারনে তাপমাত্রা যদি ১০৫ ডিগ্রী ফারনহাইটের উপরে চলে যায় তখন একে হিট স্ট্রোক বলে।
হিট স্ট্রোক কেনো হয় ?
আমাদের শরীরের ভেতরে নানা রাসায়নিক ক্রিয়ার কারণে সব সময় তাপ সৃষ্টি হতে থাকে। ঘামের সাহায্যে সেই তাপ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু একটানা রোদে থাকলে গরমে ঘামের সঙ্গে শরীরের অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যায়। অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যাওয়ার কারনে শরীরে জলের প্রয়োজন (ডিহাইড্রেশন) সৃষ্টি হয়। ঘামের সঙ্গে লবণ বেরিয়ে যাওয়াতে লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা প্রবল হয়ে হঠে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলি কি কি?
হিট স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ হল মাথাঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে হয়ে পরা । তৎক্ষণাৎ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে আক্রান্ত ব্য়ক্তির মৃত্যু হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। সাধারনত হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্য়ক্তির দেহের তাপমাত্রা অধিক পরিমানে বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও মাথা ঘোরা,ঝিম ঝিম ভাব,খিচুনি ভাব, ইত্য়াদি লক্ষণ হিট স্ট্রোকে আক্রান্তা ব্য়ক্তির মধ্য়ে দেখা যেতে পারে ।
আরও পড়ুনঃ গরমে কিনুন এই AC, যত ইচ্ছে চালান, দিতে হবে না বিদ্যুতের বিল
হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়
-
যতটুকু সম্ভব এই গরমে রোদে কম বের হতে হবে। একান্তই বের হতে হলে সঙ্গে জলের বোতল রাখা দরকার এবং ঘন ঘন জল খেতে হবে । তা না হলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
-
যদি শারিরিক অবস্থা খারাপ মনে হয় তাহলে ঠান্ডা জলে ভেজানো কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। শরীরের লবণ ও জলের ঘাটতি মেটানোর জন্য় খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
-
অজ্ঞান হয়ে গেলে বা মাথা ঘোরালে মাথায় জল দিতে হবে। তাতেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্য়ক্তিকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
-
রোদের উত্তাপ যেই সময়টাতে বেশি থাকে (বিশেষকরে বেলা ১১.০০ তা থেকে বিকাল ৩.০০ টা) সেই সময়ে প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বের না হওয়া এবং যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে হবে।
-
যখনই বাইরে বেরনোর প্রয়োজন হবে সবসময় ছাতা ব্য়বহারের চেষ্টা করুন । হাত,পা,মুখ ঢেকে বাইরে বের হবেন ।
-
প্রচুর জল ও অন্যান্য তরল যেমন- খাবার স্যালাইন, ফলের রস, লস্য়ি, ডাবের জল , আখের রস ইত্যাদি বেশি করে খান।
Share your comments