Brinjal Farming: জেনে নিন বর্ষায় বেগুন চাষ ও পরির্চযার সম্পূর্ণ পদ্ধতি

বেগুন সবজি হিসেবে সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণও মন্দ নয়। প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায় এই সবজি। দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতা আনা সম্ভব। বেগুন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের একটি অন্যতম মুখ্য সবজি যার চাহিদা সারাবছরই বাজারে রয়েছে। অনেক কৃষকই বেগুন চাষ করে ভালো অর্থ উপার্জন করছেন। তবে, অনেক কৃষকের বেগুন চাষে সমস্যাও দেখা দিচ্ছে |

মাটি(Soil):

সব মাটিতেই বেগুন জন্মে। তবে দো-আঁশ, এটেল দো-আঁশ ও পলিমাটি বেশি উপকারী।

পলিমালচিং(Poly mulching):

বেগুন চাষে কৃষক যদি পলিমালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তবে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়, রোগ পোকার থেকেও ফসলকে সুরক্ষিত রাখা যায়। সাধারণত ২০ জি এস এম –এর পলিমালচ্‌ হলে ভালো হয়। বিভিন্ন কোম্পানির পলিমালচ্‌ বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। পলিমাল্চ-এর ফিল্মগুলি বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরী করা হয়, যার উপরের দিকটি রুপোলী ও ভেতরের দিকটি কালো বর্ণের। বাইরের দিকের রুপোলী বর্ণ সূর্যের আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে বেগুন গাছের সালোকসংশ্লেষের মাত্রা বাড়িয়ে উদ্ভিদটির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, এতে ফলন অনেক বেশী পাওয়া যায়। আবার কালো রঙের ভেতরের দিকটি মাটিতে প্রখর সূর্যরশ্মি প্রবেশ করতে না দেওয়ায় আগাছা একেবারেই জন্মাতে পারে না। তবে পলিমাল্চ বেডের জন্য ড্রিপ সেচ হল সর্বোৎকৃষ্ট। ড্রিপ সেচ না দিলে ঘন ঘন অল্প পরিমাণ জল সেচের জন্য প্রয়োজন।

আরও পড়ুন - Seedless Lemon Farming: বীজহীন লেবু চাষে লাখোপতি কৃষক শহীদুল

রোপণ:

প্রথমে বীজতলায় চারা তৈরি করে নিন। এরপর ৫-৬ সপ্তাহ বয়সের চারা ৭৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারি করে ৬০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাগাতে হয়। গাছের আকার অনুযায়ী দূরত্ব ১০-১৫ সেন্টিমিটার কম-বেশি করা যায়।

চাষ পদ্ধতি:

 চারা রোপণের আগে মূল জমিতে ৪০ কুইন্টাল জৈব সার বা ২৫ কুইন্টাল কেঁচো সার, ১৫ কেজি নিম কোটেড ইউরিয়া, ৭৫ কেজি সি.সু.ফসফেট, ১০ কেজি মিউরেট অফ পটাশ মিশিয়ে বেড তৈরি করতে হবে। বেডের উপর পলিমালচ্‌ বিছিয়ে দিতে হবে। এর পর পলিমালচে্‌ মাপ অনুযায়ী উদ্ভিদের এক সারি থেকে অপর সারির দূরত্ব অনুযায়ী ছিদ্র করে চারা বসাতে হবে। উঁচু বেডের মাঝের নিচু নালাগুলিতে অল্প পরিমাণে কিন্তু ঘন ঘন জলসেচ দেওয়া দরকার।

বর্ষায় বেগুনের রোগ(Monsoon disease management):

বর্ষায় বেগুনে ছত্রাকঘটিত রোগ, ফল ও গোড়া পচা রোগ, ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। এ সম্পর্কে চাষিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি দপ্তর। অনেক সময় নিমাটোডের আক্রমণের কারণে বর্ষায় বেগুনের গোড়া ফুলে যায়। গাছের গোড়া ও ফল পচা রোগের কারণে চাষীরা তো প্রায় প্রতি বছর লোকসানের মুখে পড়েন। তাই এবার কৃষি দপ্তর এই রোগ সম্পর্কে চাষীদের আগাম সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, এই রোগের প্রকোপে বেগুনের গোড়া পচে গিয়ে গাছ মরে যায়। পরে পাতা হলদে হয়ে ঝরে পড়ে, ফুল-ফলও আশানুরূপ হয় না।

এছাড়া এই সময়ে বেগুনে ফল, পাতা ও কাণ্ড ছিদ্রকারী এক ধরনের পোকারও উপদ্রব হয়। এই রোগ ও পোকা দমনের জন্য জলের মধ্যে কার্বেনডাজিম ও ম্যানকোজেবের মিশ্রণ গুলিয়ে বেগুন গাছে স্প্রে করতে হবে। কীটের আক্রমণে অনেক সময় উদ্ভিদটি মাটি থেকে জল ও সার শোষণ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে, ফলে গাছে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। এর প্রতিকারের জন্য এক লিটার জলে দেড় মিলিমিটার কার্বোসালফান গুলিয়ে বেগুন গাছে স্প্রে করলে দ্রুত ভালো ফল পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন -Magur Fish Farming: দেশি মাগুর মাছ চষে বিপুল অর্থ উপার্জন করুন