Cash Crop Garlic Farming: জেনে নিন কিভাবে অর্থকরী ফসল রসুন চাষ করা যায়

রসুন পশ্চিমবঙ্গের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৬৬ হাজার একর জমিতে রসুনের আবাদ হয় এবং মোট উৎপাদন প্রায় ১০২ হাজার টন কিন্তু তা আমাদের চাহিদার মাত্র ৪ ভাগের এক ভাগ পূরণ করে।

KJ Staff
KJ Staff
Garlic Farming
Garlic Cultivation (image credit- Google)

রসুন পশ্চিমবঙ্গের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৬৬ হাজার একর জমিতে রসুনের আবাদ হয় এবং মোট উৎপাদন প্রায় ১০২ হাজার টন কিন্তু তা আমাদের চাহিদার মাত্র ৪ ভাগের এক ভাগ পূরণ করে। রসুন রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় এছাড়া, এর পুষ্টিগুণও অনেক বেশি | রসুনে আমিষ, প্রচুর ক্যালসিয়াম ও সামান্য ভিটামিন ‘সি থাকে | রসুন থেকে তৈরি ঔষুধ নানা রোগ যেমন-ফুসফুসের রোগ, আন্ত্রিকরোগ, হুপিংকাশি, কানব্যাথা প্রভৃতিতে ব্যবহৃত হয়। তাই, চাষীরা অনায়াসে রসুনের চাষ (Garlic Cultivation) করে উপকৃত হতে পারেন |

মাটি (Soil):

জল জমে না এমন উর্বর দো-আঁশ মাটিতে রসুন ভাল জন্মে তবে এঁটেল দো-আঁশ মাটিতেও চাষ করা যায়। এঁটেল মাটিতে কন্দ সুগঠিত হয় না। জমিতে জল বের হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকলে কন্দ বড় হয় না এবং রসুনের রং খারাপ হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর, রংপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর ও বরাইগ্রাম, পাবনা জেলার চাটমহর এবং সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলায় রসুন বেশি উৎপাদিত হয়।

বীজ বপন:

সাধারণত, শুকনো রসুনের বাইরের সারির কোয়া লাগানো হয়। ১৫ সে.মি. দূরত্বে সারি করে ১০ সে.মি. দূরে ৩-৪ সে.মি. গভীরে রসুনের কোয়া লাগানো হয়। প্রতি হেক্টরে ৩০০-৩৫০ কেজি বীজ রসুনের প্রয়োজন হয়।

সার প্রয়োগ (Fertilizer):

রসুনে হেক্টর প্রতি সার লাগবে, গোবর ১০ টন, ইউরিয়া ২০০ কেজি, টিএসপি ১২৫ কেজি, এমওপি ১০০ কেজি, জিংক সালফেট ২০ কেজি, বোরাক্স ১০ কেজি ও জিপসাম ১০০ কেজি। জমি তৈরির সময়  গোবর, টিএসপি, জিংক সালফেট, বোরাক্স ও জিপসাম মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। রসুন লাগানোর ৩০ দিন ও ৬০ দিন পর যথাক্রমে ১ম ও ২য় কিস্তির উপরি সার প্রয়োগ করা হয়। প্রতিবারে প্রতি হেক্টরে ১০০ কেজি ইউরিয়া ও ৫০ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করা হয় |

আরও পড়ুন Shahi Papaya Farming: শাহী পেঁপের চাষ পদ্ধতি ও উৎপাদন তথ্য

আগাছা দমন:

রসুন লাগানোর ১৫ দিন পর আগাছা বেশি হলে অর্থাৎ আগাছাগুলো নাড়ার উপর দিয়ে যখন উঠে তখন রনষ্টার ৫০ মিলি প্রতি বিঘাতে ৪০-৫০ লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। জমিতে আগাছা হলে অবস্থা বুঝে একাধিকবার নিড়ানী দিতে হবে। বন্যা এলাকায় জিরো টিলেজে মালচিং এর মাধ্যমে রসুন লাগানো যাবে। তবে কোন কোন সময় বীজ রোপণ হতে রসুন তোলা পর্যন্ত একটি নিড়ানী লাগতে হবে।

সেচ:

রসুন লাগানোর পর জমির রস বুঝে সেচ দিতে হবে। রসুনের কোয়া লাগিয়েই একবার সেচ দেওয়া হয়। এর পর চারা বের না হওয়া পর্যন্ত জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকতে হবে। চারা একবার হয়ে গেলে ১০-১৫ দিন অন্তর সেচ দিলেও চলে। রসুনের জমিতে বিশেষ করে, কন্দ গঠনের সময় উপযুক্ত পরিমাণে রস থাকা দরকার। সে জন্য এ সময় অবশ্যই সেচ দিতে হবে। কন্দ যখন পরিপক্ক হতে থাকে তখন সেচ কম দিতে হয়। এই ফসলে মোটামুটি ৪-৫ টি সেচের দরকার হয়। ড্রেনের দু পাশের নালা দিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া সুবিধাজনক।

রোগবালাই ও দমন (Disease management system):

থ্রিপস

এ পোকা ছোট কিন্তু পাতার রস চুষে খায় বিধায় গাছ দূর্বল হয়ে পড়ে। এরা রস চুষে খায় বলে আক্রান্ত পাতা রূপালী রং ধারণ করে। আক্রান্ত পাতায় বাদামী দাগ বা ফোঁটা দেখা যায়। অধিক আক্রমণে পাতা শুকিয়ে যায় ও ঢলে পড়ে। রাইজোম আকারে ছোট ও বিকৃত হয়।

প্রতিকার:

সাদা রংয়ের আঠালো ফাঁদ ব্যবহার। ক্ষেতে মাকড়সার সংখ্যা বৃদ্ধি করে এ পোকা দমন করা যায়। আক্রমণ বেশি হলে সাইপারমেক্সিন গ্রুপের সাইপেরিন, সাইপার অথবা ইমাডিক্লোরো ফিড গ্রুপের এডমায়ার প্রতি লিটারে ১ মিলি সাইপারমেক্সিন অথবা ইমিডা ক্লোরোফিড প্রতি লিটারে ০.৫ মিলি গাছে ৪ থেকে ৫ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।

কান্ড পচা রোগ:

স্কেলরোসিয়াম রলফসি ও ফিউজারিয়াম নামক ছত্রাক দ্ধারা এ রোগ হয়। যে কোন বয়সে গাছ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত গাছের পাতা হলদে হয়ে যায় ও ঢলে পড়ে।

প্রতিকার:

আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংশ করতে হবে। মাটি সব সময় স্যাঁত স্যাঁতে রাখা যাবে না। আক্রান্ত জমিতে প্রতি বছর পেঁয়াজ /রসুন চাষ করা যাবে না। ম্যানকোজেব গ্রুপের এগ্রিজে ডাইথেনএম-৪৫ অথবা ব্যাভিষ্টিন (কার্ববোন্ডাজিম) ছত্রাকনাশক প্রতি কেজি বীজে ১০০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধণ করে বপন করতে হবে।

ফসল সংগ্রহ:

রসুন গাছের পাতা শুকিয়ে বাদামী রং ধারণ করলে ঢলে পড়ে তখন রসুন তোলার উপযোগী হয়। প্রতি হেক্টরে ১০-১২ টন ফলন পাওয়া যায়।

নিবন্ধ: রায়না ঘোষ

আরও পড়ুন -Ladies Finger Farming: জেনে নিন আধুনিক উপায়ে ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

Published On: 28 June 2021, 12:34 PM English Summary: Cash Crop Garlic Farming: Learn how to cultivate a cash crop garlic

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters