কাশ্মীরি আপেল কুল (Kashmiri Apple Ber) দেখতে অনেকটা মাঝারি সাইজের আপেলের মতো। রং আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। স্বাদ হালকা মিষ্টি, অনেকটা বাউকুলের মত। বর্তমানে আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা।
আপেল কুল চাষ:
কৃষিবিদদের মতে, উর্বর বা অনুর্বর জমিতে কম খরচে সহজে আপেল কুল চাষ করা যায়। তবে, চাষের আগে চাষিদের সঠিক জাতের চারা নির্বাচন করতে হবে। নতুন চাষিরা গাছ লাগানোর আগে ভালো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা থেকে গুণমানের চারা লাগাতে পারলে ভালো ফলন পেতে পারেন।
সময়:
বর্ষার পর কাশ্মীরি আপেল কুলের চারা লাগানো উচিত। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এর চারা বোনা হয়। গাছ থেকে গাছ ও সারি থেকে সারির দূরত্ব ১০ ফুট বাই ১০ ফুট রাখতে হবে। বিঘা প্রতি ২০০টির বেশি গাছ লাগানো যাবে। আকারে ছোট হওয়ায় গাছটি খুব সহজে পরিচর্যা করা যায়।
সেচ প্রদান -
কুল চাষে ঘন ঘন সেচ প্রদানের দরকার হয় না। মাটিতে রস পর্যাপ্ত থাকলেই এর ফলন সঠিক থাকে। তবে মাটি একদম শুষ্ক যেন না থাকে, মাটির অবস্থা বুঝে জল দিতে হবে।
রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ (Disease & pest management) -
রোগের মধ্যে এই ফলের উপর পাউডারি মিলডিউ এবং লিফ স্পট খুব সাধারণ। ছোট ফলের উপর ছোট সাদা দাগ দেখা যায়, যা পরবর্তীতে পুরো ফলের উপর বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত ফল হয় ঝরে যায়। নিয়ন্ত্রণে সালফার ডাস্ট ১৫০-২০০ গ্রাম /গাছ ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে স্প্রে করতে হবে।
বের ফ্রুটফ্লাই এই চাষে প্রধান অন্তরায়। আক্রান্ত ফল বাদামী হয়ে যায় এবং পচে যায়। এর সমাধানে কারবারিল ৫০ ডাব্লুপি ০.২ শতাংশ বা ডাইমেথোয়েট ৩০ ইসি ০.০৩ শতাংশ জলে মিশিয়ে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
পরিচর্যা:
এপ্রিলে ফলন তোলার পর পরিচর্যার জন্য বেশি উচ্চতার গাছগুলি কেটে দিতে হয়। এছাড়া ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে মাছি ক্ষতি করতে পারে। মাছির হাত থেকে ফল রক্ষা করতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে চাষ করতে হবে। মাছি ধরার ফাঁদ ব্যবহার করে দমন করতে হবে। কিংবা মিষ্টি গন্ধযুক্ত গুঁড় বা পাকা ফলের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে রাখলে এর মধ্যে আকৃষ্ট হয়ে মাছি মারা যাবে।
আরও পড়ুন - Greater yam - আধুনিক পদ্ধতিতে গাছ আলু চাষ করে দ্বিগুণ মুনাফা অর্জন করুন
ফলন:
বছরে দু’বার ফলন পাওয়া যায়। রোপণের ১০ মাসের মাথায় চারাগুলো পরিপক্ব হয়। ১২ মাসের মাথায় গাছে ফুল আসে। গাছে প্রথম বছরেই বিঘা প্রতি ৬০-৭০ কেজি ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। পরবর্তীতে গাছের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন বাড়তে থাকে।
গাছগুলো পরিপক্ব হলে প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। প্রায় ৭০ টাকা কেজি পাইকারিতে আপেল কুল বিক্রি হয়। সুতরাং, এর চাষ করে কৃষকবন্ধুরা ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন - Tuberose Disease Management - রজনীগন্ধা ফুলের বিভিন্ন রোগবালাই দমনের পদ্ধতি ও চাষের কৌশল
Share your comments