মালটা ফসলে রোগ পোকা ও তার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

মালটা ফসলে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এবং রোগের আক্রমণ হতে পারে। পোকার মধ্যে সাইলিড সবচেয়ে ক্ষতিকর। এছাড়া রয়েছে পাতা সুড়ঙ্গকারি পোকা, ফল ছিদ্রকারি পোকা, খোসা পোকা, উঁই পোকা।

KJ Staff
KJ Staff
Disease & pests management
Malta crop pest (Image Credit - Google)

মালটা ফসলে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এবং রোগের আক্রমণ হতে পারে। পোকার মধ্যে সাইলিড সবচেয়ে ক্ষতিকর। এছাড়া রয়েছে পাতা সুড়ঙ্গকারি পোকা, ফল ছিদ্রকারি পোকা, খোসা পোকা, উঁই পোকা।

এই ফলের কিছু রোগ হলো আগামরা রোগ, গ্রিনিং, ক্যাংকার এবং আঠাঝড়া।

রোগ নিয়ন্ত্রণ (Disease management) -

১) আগামরা রোগ-

এ রোগ দেখা দিলে পুরো গাছ বা গাছের ডাল আগা থেকে শুরু করে ক্রমে নিচের দিকে মরে যায়। রোগটি ছত্রাকের আক্রমণে হয়। প্রতিকার হিসেবে কিছুটা সুস্থ অংশসহ আক্রান্তস্থান কেটে পুড়ে ফেলা এবং কর্তিত অংশে বোর্দোমিশ্রণ বা নোইন (ছত্রাকনাশক) ২ গ্রাম/লিটার অথবা কুপ্রাভিট ৭ গ্রাম/ লিটার হারে জলেতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

২) গ্রিনিং রোগ-

এ রোগে পাতার মধ্যশিরা হলদে হয়ে যায় এবং শেষ পর্যায়ে হলুদাভ রং ধারণ করে। শিরা উপশিরাগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ হতে থাকে, শিরা দুর্বল ও পাতা কুঁকড়ে যায়। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাইলিড পোকা এর বাহক। তাই পোকা দমন (ব্যবস্থাপনা পূর্বে দেওয়া আছে) করতে হবে। আক্রান্ত হলে অন্য গাছে রোগ যেন না ছড়ায় সেজন্য গাছ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

কীট নিয়ন্ত্রণ (Pest management) -

সাইলিড পোকা-

পোকার বাচ্চা গাছের পাতা, পাতার বোঁটা, কচি ডগা এবং ফলের রস চুষে খায়। এতে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। রস চোষার সময় এরা গাছের রসের মধ্যে গ্রিনিং রোগের ভাইরাস ছড়ায়। সেই সাথে মিষ্টি আঠালো পদার্থ নির্গত করে। প্রতিকার হিসেবে পোকাসহ আক্রান্ত পাতা বা ডাল অপসারণ করতে হবে। মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে একবার ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: অ্যাডমায়ার বা ফেনিট্রথিয়ন জাতীয় কীটনাশক যেমন: সুমিথিয়ন ২ মিলিলিটার/ লিটার পানিতে মিশিয়ে মালটা গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। তাহলে ডিম ও পোকা থাকলে তা ধ্বংস হবে এবং গ্রিনিং রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

পাতা সুড়ঙ্গকারি পোকা-

এ পোকা ছোট অবস্থায় (কীড়া) মালটাপাতায় আক্রমণ করে। এরা রাতের বেলা গাছের কচি পাতায় গর্ত খুঁড়ে আঁকাবাঁকা দাগের সৃষ্টি করে। আক্রান্ত পাতা কুঁকড়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে আক্রান্ত অংশ কেটে ফেলতে হয়। তামাক নির্যাস ও সাবান গোলা জল স্প্রে করা যেতে পারে। আক্রমণ বেশি হলে ইটাপ ৫০ এসপি ১.২০ গ্রাম হারে প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন - ননী: এই অপ্রচলিত ফলের চাষ করে কৃষকরা আয় করুন অতিরিক্ত অর্থ

ফলের মাছি পোকা -

এ পোকার আক্রমণে ফল নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা সম্ভব।

মাকড়-

এক ধরনের ক্ষুদ্র মাকড়ের কারণে গাছের পাতা নিচের দিকে কুঁকড়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে ভার্টিম্যাক অথবা ইকোম্যাক ১ মিলিলিটার হারে প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে পাতার নিচের দিকে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

মালটা নামক লেবু গোত্রীয় এই ফলের ব্যাপক চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতে প্রতি বছর মালটা আমদানির জন্য প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয় । তাই এই জাতটির চাষ সম্প্রসারিত হলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করার পাশাপাশি ভিটামিন সি এর অভাব অনেকাংশে পূরণ হবে এবং কৃষক বন্ধুরা এই ফল বিক্রি করে লাভবান হবেন।

আরও পড়ুন - চাষের জমিতে পেঁয়াজ চাষের মৌপালনের মাধ্যমে কৃষক বন্ধুরা করুন দ্বিগুণ আয়

Published On: 16 April 2021, 01:35 PM English Summary: Disease & pests management method of Malta crop

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters