এই সময় প্রাক বর্ষাকালীন লাভ জনক সবজি হিসেবে ভেন্ডি চাষ করা যায়। বর্তমানে টাটকা সবজি রপ্তানির ৩০ ভাগ এই সবজি থেকে আসে। মূলত কচি অবস্থায় রান্নার জন্য এটি একটি অন্যতম সবজি। এটি প্রাক বর্ষাকালীন সবজি হিসেবেও চাষ করা যায়।
ভেন্ডির সাহেব রোগ সহনশীল উন্নত জাতগুলি –
আর্কা অনামিকা, আর্কা অভয়, কাশি বিভূতি, কাশি মোহিনী, পুসা এ-৪।
হাইব্রিড জাতগুলি – সম্রাট, রোহিনি ১০০১, তানিয়া, জীবন, গুঞ্জন ইত্যাদি।
বীজের হার –
১.৫ কেজি প্রতি বিঘা।
চাষ পদ্ধতি –
বিঘা প্রতি ২৫-৩০ কুইন্টাল কম্পোস্ট সার দিয়ে ৩-৪ বার চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। এর পর শেষ চাষে ২৫ কেজি ইউরিয়া, ৭৫ কেজি সি. সু ফসফেট ও ১০ কেজি মিউরেট অফ পটাশ দিতে হবে। বীজ বোনার আগের রাত্রে বীজকে ০.২ % কার্বেন্ডাজিম দিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখলে ঢলে পড়া রোগ থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যায়। বীজ বোনার আগে জমিতে হালকা সেচ দেওয়া ভালো । ২ ফুট / ১.৫ ফুট ব্যবধানে বীজ লাগানো উচিত। বর্ষাকালে প্রয়োজন অনুযায়ী জলসেচ দিতে হবে। গাছে ফুল ও ফল এলে জলসেচের বিশেষ প্রয়োজন, অন্যথা ফলন হ্রাস পাবে। বীজ বোনার ৩ সপ্তাহের মধ্যে আগাছা তুলে প্রয়োজনে গাছ পাতলা করে দিয়ে চাপান সার দিতে হবে। সাধারণত বীজ তোলার ৪০-৫০ দিন পর ফসল তোলার উপযুক্ত হয়। বিঘা প্রতি উন্নত জাতে ১০-১৫ কুইন্টাল ও হাইব্রিড জাতে ২০-২৫ কুইন্টাল ফলন পাওয়া যায়।
কীট ও রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ (Pest & disease management)-
ঢ্যাঁড়শের মোজাইক ভাইরাস রোগ –
এ রোগে পাতাগুলোতে হলুদ ও সবুজ রংয়ের মোজাইক দেখা যায়। পাতা কুঁকড়ে যেতে পারে এবং গাছের বৃদ্ধি ও ফলন খুব কমে যায়। এ রোগের কোন ঔষধ নেই। আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট করে দিতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছ থেকে বীজ ব্যবহার করা উচিত নয়। এ রোগ সাধারণত সাদা মাছি দ্বারা বিস্তার লাভ করে। সাদা মাছি দমনের জন্য এছাড়া ভাইরাস প্রতিরোধক জাত ব্যবহার করা ভালো। যেমন- বারি ঢ্যাঁড়শ-১।
ঢ্যাঁড়শের লিফ স্পট –
অল্টারনারিয়া ছত্রাক দ্বারা আক্রমনের ফলে পাতার উপরে বিভিন্ন আকৃতির গোলাকার বাদামি রং পড়ে। রোগের মাত্রা বেশি হলে পাতা মুড়ে যায় এবং পরে ঝলসে যায়।
প্রতিকার -
ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম/ডাইথেন এম-৪৫ ২ গ্রাম/লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
পোকামাকড় -
সাদা মাছি এবং ঢেঁড়স উৎপাদনের বিশেষ ক্ষতি করে।
ফসল সংগ্রহ -
বীজ বপনের ৬০ থেকে ৭০ দিনের পরে ঢ্যাঁড়শ তোলার জন্য প্রস্তুত হয়। ছোট ও নরম ঢ্যাঁড়শ বাছাই করে তুলতে হবে। সকালে এবং সন্ধ্যায় ঢ্যাঁড়শ তোলা উচিত। কচি ঢ্যাঁড়শ তুলতে বিলম্ব হলে এরা এদের কোমলতা এবং স্বাদ হারাতে পারে। বর্ষাকাল প্রতি হেক্টরে ১২০ – ১৫০ কুইন্টাল ঢ্যাঁড়শ পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন ঢ্যাঁড়শ ৮০-১০০ কুইন্টাল / হেক্টর উৎপাদিত হয়। প্রজাতি অনুযায়ী ফসল পরিপক্ক ও সংগ্রহের সময়কাল যথাক্রমে ১০০ এবং ৯০ দিন।
ঢ্যাঁড়শের কয়েকটি প্রজাতি -
- ‘অ্যানি ওকলে-২’, যা পরিপক্ক হতে ৫২ দিন সময় নেয়।
- ‘কাজুন ডিলাইট’ গাঢ় সবুজ বর্ণের রোঁয়াযুক্ত এবং প্রায় ৪ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
- ‘লুইসিয়ানা গ্রিন ভেলভেট'- বড় অঞ্চলের পক্ষে ভাল; এটি জোরালো এবং এই প্রজাতির উদ্ভিদ ৬ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
Image Source - Google
Related Link - রেড লেডি হাইব্রিড পেঁপের চাষ (Red Lady Hybrid Papaya) করে কৃষক উপার্জন করতে পারেন দ্বিগুণ মুনাফা
(Kanyashree Prakalpa) সরকারের এই প্রকল্পে এখন আপনার সন্তানও পাবে ২৫,০০০ টাকা, এই পদ্ধতিতে আবেদন করুন
Share your comments