বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার কৃষকদের অনেকেই গম, সরিষার পাশাপাশি আলু চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তবে অর্থকরী এই ফসলের চাষে নাবিধসা রোগের কারণে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন অনেক চাষি। এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে মোটা আর্থিক লাভ করবেন চাষিরা।
ঘন কুয়াশা বা হাল্কা বৃষ্টির ফলে বাতাসে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে এবং আবহাওয়া স্যাতস্যাতে হলে আলুর জমিতে নাবি ধ্বসা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।
রোগের লক্ষণ -
এই রোগে আক্রান্ত গাছের পাতা ও উঁটিতে বাদামী রঙ-এর জলে ভেজা, অনিয়মিত ছোপ বিশেষ করে পাতার ডগা ও ধারে দেখা যায়। এই রোগ প্রথমে নিম্ন অংশের পাতার নীচের দিকে শুরু হয়।
(ক) রোগহীন আলু গাছের বয়স ৪-৫ সপ্তাহ হলে প্রতিষেধক হিসাবে নিম্নলিখিত ছত্রাকনাশকগুলি সঠিক মাত্রায় স্প্রে করুন -
১) কপার অক্সি ক্লোরাইড - ৫০% ডব্লিউ. পি. @ ৪ (চার) গ্রাম / লিটার জলে অথবা
২) ম্যানকোজেব - ৭৫ % ডব্লিউ. পি. @ ২.৫ গ্রাম / লিটার জলে অথবা
৩) কপার হাইড্রক্সাইড - ৭৭ % ডব্লিউ. পি. @ ২.৫ গ্রাম / লিটার জলে অথবা
৪) মেটিরাম - ৫০% ডব্লিউ. পি. @ 4 (চার) গ্রাম / লিটার জলে অথবা
৫) প্রপিনেব -৭০ % ডব্লিউ. পি. @ ৩(তিন) গ্রাম / লিটার জলে।
আক্রান্ত গাছে নিম্নলিখিত ছত্রাকনাশকগুলি সঠিকমাত্রায় স্প্রে করুন -
১) ডাইমিথোমরফ - ৫০ % ডব্লিউ. পি. @ ১.৩ গ্রাম / লিটার জলে, ম্যানকোজেব - ৭৫ % ডব্লিউ. পি. @ ২ গ্রাম / লিটার জলে (দুটি ছত্রাকনাশক একসাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে) অথবা
২) সাইমক্সানিল ৮ % + ম্যানকোজেব - ৬৪ % ডব্লিউ. পি. @ত গ্রাম / লিটার জলে অথবা
৩) ফেনামিডন ১০% + ম্যানকোজেব - ৫০ % ডব্লিউ. পি. @ ৩ গ্রাম/ লিটার জলে অথবা
৪) ক্লোরাথ্যোলোনিল ৭৫ % ডব্লিউ. পি. @ ২.৫ গ্রাম / লিটার জলে অথবা
৫) আজোক্সিস্টবিন ২৩ % এস. সি. @ ১ মিলি / লিটার জলে অথবা
৬) পাইরাক্লোস্টবিন ৫ %ডব্লিউ. জি + মেটিরাম ৫৫ % ডব্লিউ. জি. @ ৩-৩.৫ গ্রাম / লিটার জলে অথবা
৭) আইপ্রোভ্যালিকার্ব ৫.৫% + প্রপিনেব ৬১.২৫% ডব্লিউ. পি. @ ২ গ্রাম/ লিটার জলে অথবা ৮) মেটাল্যাক্সিল ৮% + ম্যানকোজেব - ৬৪ % ডব্লিউ. পি. @২.৫ গ্রাম/ লিটার জলে অথবা
৯) অ্যামেটোক্টাডিন +ডাইমিথোমরফ - ২০.২৭ % এস. সি. @ ২ মিলি / লিটার জলে অথবা ১০) ফুপিকোলাইড ৫.৫৬ % + প্রোপমোকার্ব হাইড্রোক্লোরাইড ৫৫.৬ % এস. সি. @ ৩ মিলি / লিটার জলে।
নাবি ধ্বসা রোগ প্রতিকারের জন্য -
- নিয়মিত ভোরবেলা নিজের মাঠ নিজেই পরিদর্শন করুন এবং গাছের নীচের অংশের কান্ড ও পাতাগুলিতে লক্ষ রাখুন।
- অযথা জমিতে বেশি জল দেবেন না।
- এই সময় রাসায়নিক সার ও অনুখাদ্য না দেওয়াই ভাল।
- ছত্রাকনাশক দ্বারা পাতার নীচগুলিতে ও কান্ড ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। একই ছত্রাকনাশক বারবার প্রয়োগ না করে ওষুধ পর্যায়ক্রমে পাল্টে ব্যবহার করতে হবে।
- ছত্রাকনাশক স্প্রে করার জন্য বিঘা প্রতি (৩৩ শতক) ৮০-১০০ লিটার জলের অবশ্যই প্রয়োজন।
- নাবিধ্বসায় কার্বেনডাজিম, থায়োফানেট মিথাইল কখনই স্প্রে করবেন না।
বিশদ পরামর্শের জন্য ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তার অফিসে যোগাযোগ করুন।
তথ্য সূত্র - ADA, Sitai block
Image source - Google
Related link - (Paddy rot disease management) ধানের খোলা পচা রোগের লক্ষণ ও তার ব্যবস্থাপনা
Share your comments