Marigold Flower – গাঁদা ফুলের জাত পরিচিতি ও লাভজনক চাষ পদ্ধতি

গাঁদা সাধারণত উজ্জল হলুদ ও গাঢ় খয়েরী হয়ে থাকে,একটি সুগন্ধী ফুল যা সর্বত্র সহজে হয়ে থাকে এবং গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। বৈজ্ঞানিক নাম Tagetes erecta। অঞ্চলভেদে এটি গন্ধা>গেন্ধা>গেনদা>গাঁদা। বাগানের শোভা বর্ধন ছাড়াও বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বন ও গৃহসজ্জায় এর ব্যাপক ব্যবহার ফুলটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

স্বপ্নম সেন
স্বপ্নম সেন
Marigold farming
Marigold Flower (Image Credit - Google)

গাঁদা ফুল (Marigold Flower) সাধারণত শীতকালীন ফুল হলেও বর্তমানে এটি গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালেও চাষাবাদ হয়ে থাকে। বাগানের শোভা বর্ধন ছাড়াও বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বন ও গৃহসজ্জায় এর ব্যাপক ব্যবহার ফুলটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় অধিক হারে চাষ হয়। এই ফুল চাষে চাষীরা এখন আগ্রহী হয়েছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই ফুলের বিভিন্ন প্রজাতি সম্পর্কে এবং এর চাষ পদ্ধতি।

বিভিন্ন প্রজাতি (Variety) :

আফ্রিকান গাঁদাঃ এই শ্রেণীর গাঁদা হলুদ রঙের, গাছের আকৃতি বেশ বড়। উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ হলঃ ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলা সুপ্রিম, গোল্ডস্মিথ, ম্যান ইন দি মুন, ইত্যাদি।

ফরাসি গাঁদাঃ এই শ্রেণীর গাঁদা কমলা হলুদ হয়ে থাকে। এজন্য এদের রক্তগাঁদাও বলা হয়। এর গাছ ক্ষুদ্রাকৃতির। পাপড়ির গোড়ায় কালো ছোপ থাকে। উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ হলঃ মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার, ইত্যাদি।

এছাড়াও সাদা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা, হাইব্রিড এবং রক্ত বা চাইনিজ গাঁদার চাষ হয়ে থাকে।

চাষ কৌশল (Method of cultivation) :

গাঁদা ফুলের  চাষ করতে হলে পর্যায়ক্রমে যে কাজগুলো করতে হয় তা এখানে আলোচনা করা হলো-

জমি নির্বাচনঃ 

ফুলের চাষ করতে হলে প্রথমেই জমি নির্বাচন করতে হবে। সাধারণত এঁটেল দো-আঁশ মাটি ফুল চাষের জন্য বেশি উপযোগী। যে জমিতে ফুল চাষ করা হবে, খেয়াল রাখতে হবে তা যেন নিচু না হয়। অর্থাৎ জমিতে যেন পানি জমে না থাকে। পাশাপাশি জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

জমি চাষঃ 

জমি নির্বাচন করার পর জমিতে ৩/৪ টা চাষ দিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে। মাটি যেন ঝুরঝুরে ও ছোট টুকরো হয়। শেষ চাষের আগে জমিতে গোবর সার দিতে পারলে ভাল হয়। শেষ চাষের আগে মাটিতে কেঁচোনাশক যে কোন ওষুধ প্রয়োগ করলে ভালো হয়। তারপর মই দিয়ে মাটি সমান করে দিতে হবে।

চারা সংগ্রহ (Seedling collection) - 

অগ্রহায়ণ - 

পৌষ মাসে সাধারণত গরম জাতের ফুলের চারা লাগাতে হয়। এই জাতের ফুলের চারা সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এই ফুলের চারা সাধারণত বাংলাদেশে কম উৎপাদন হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এই ফুলের চারা বেশি আসে। চারা তৈরির জন্য বীজ সংগ্রহ একটি জটিল ব্যাপার। আমাদের দেশের কিছু চাষি এই চারা উৎপাদন করে ঠিকই কিন্তু গুণগত মান ভালো হয় না। ভারতে অনেক আগ থেকেই ফুলের চাষ হয় এবং দীর্ঘদিন ঐ দেশের চাষিরা চারা উৎপাদন করছে। সুতরাং ফুল চাষে তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আমাদের চেয়ে বেশি। এই জন্য তাদের উৎপাদিত চারার মানও ভালো। তাই গরম জাতের ফুল চাষ করতে হলে বিশ্বস্ত মাধ্যম দ্বারা ভারত থেকে চারা এনে চাষ করাই ভালো। চারা সংগ্রহের আগে থেকেই যোগাযোগ করতে হবে।

চারা রোপণ (Plantation) -

চারা তৈরি থাকলে সে দিনই জমিতে শেষ চাষ এবং কেঁচো মারার ওষুধ দিয়ে দুপুরের দিকে সেচ দিয়ে সমস্ত জমি ভেজাতে হবে। বিকালে রোদের তাপ কমে যাওয়ার পর চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণ করার সময় রশি ধরে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব হবে দুই হাত এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব হবে ৬ ইঞ্চি। চারা লাগানোর আগে পাত্রে জল নিয়ে দুই চা চামচ "ডায়াথেন এম-৪৫" ওষুধ মিশিয়ে চারাগুলো ঐ জলে ভিজিয়ে ৫/৬ মিনিট পর তুলে লাগালে চারার মৃত্যু হার অনেকাংশে কম হয়।

পরিচর্যা - 

যে কোন ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিচর্যা প্রধান একটি বিষয়। ফসলের সঠিক পরিচর্যা যদি না করা হয়, সঠিক ভাবে সার ও ওষুধ যদি না দেয়া হয় তাহলে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও অর্থলাভ হয় না।

১) গাঁদার পাতায় ও ফুলে দাগ ধ্বসা

(রোগের কারণ: ছত্রাক – অল্টারনেরিয়া; সারকোস্পোরাসেপ্টোরিয়া স্পিসিস)

এই মরশুমে কুয়াশা ও শিশিরের আর্দ্রতায় গাঁদা গাছের পাতায় বাদামী দাগ পরে পচা কালো রূপ নেয়। অল্টারনেরিয়া ছত্রাকের দাগে গোল রিঙের মত কালো দাগ পরে। বেশী আক্রমণে ফুলেও বাদামী দাগ ও ধ্বসা ফলন পুরো নষ্ট করে। মাঠে যত গাঁদাচাষ হয় তার প্রধান শত্রু এই রোগ।

প্রতিকার ব্যবস্থা –

কার্বেন্ডাজিম + ম্যান্কোজেবের মিশ্র ছত্রাকনাশক ১.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে আঠা সহযোগে স্প্রে।

২) পাউডারি মিলডিউ –

পাতার উপরে সাদা পাউডারের মত ছত্রাকে গাছ দুর্বল হয়ে মারা পরে।

প্রতিকার -

কার্বেন্ডাজিম + ম্যান্কোজেবের মিশ্র ছত্রাকনাশক ১.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে আঠা সহযোগে স্প্রে।

আরও পড়ুন - Grape Terrace Farming - সহজ পদ্ধতিতে নিজের বাড়িতেই করুন দ্রাক্ষার চাষ

৩) জাব পোকা, থ্রিপস বা চোষী পোকা –

পাতার রস শোষনকারী পোকা

প্রতিকার

ইমিডাক্লোপ্রিড ১ মিলি প্রতি ৩ লিটার জলে গুলে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন - Thankuni Leaves - সঠিক নিয়মে বাড়ির টবেই থানকুনি চাষের কৌশল

Published On: 16 July 2021, 05:25 PM English Summary: Introduction to marigold varieties and profitable cultivation method

Like this article?

Hey! I am স্বপ্নম সেন . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters