মূলত বর্ষায় (Monsoon) সব্জি চাষই (Vegetable farming) হোক বা বাড়ির গাছ (Terrace farming) ভালো করে যত্ন নিতে হবে | তবে, প্রচুর ফলন বৃদ্ধি হবে | বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা জোর ধাক্কা খেয়েছে৷
করোনা আবহ ও লকডাউনে প্রতিটি ক্ষেত্রে আর্থিক টানাপোড়েন ৷ কাজ হারিয়েছেন বহু কৃষক | এছাড়াও, ঘূর্ণিঝড়ে হয়েছে কয়েক কোটি টাকার ফসল নষ্ট | তাই, ফের আবার যখন বর্ষা হাজির হয়েছে, তাই আগে থেকে হতে হবে সতর্ক
ফসলের যত্ন-আত্তি (Crop Care):
কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, বর্ষায় এই সব সবজি চাষের (Monsoon Vegetable Seeds) দিকে কৃষকেরা জোর দিতে পারেন৷ তবে ফসলকে রোগ-জীবাণু মুক্ত রাখতে পারলে তবেই এটি বাস্তবায়িত হবে৷ তবে এর জন্য বারবার কীটনাশকের প্রয়োগ করলে সব্জি ফলনে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে৷ উপরোক্ত সবজিগুলির চাষের আগে বীজের পরিচর্যা প্রয়োজন৷ এর জন্য প্রতি কেজি বীজে ১-২ গ্রাম হারে কার্বেন্ডেজিম প্রয়োগ করতে হবে | সবজিতে রুট গ্রন্থি রোগের প্রকোপ রোধ করতে হলে প্রথমে বীজ বপনের আগে প্রতি হেক্টরে কার্বোফিউরন ২৫ কেজি ছড়িয়ে দিতে হবে | এর পাশাপাশি এই রোগের শিকার হয়েছে যে গাছগুলি সেগুলিকে উপড়ে ফেলে দিতে হবে | যদি সবজি গাছের পাতা কুঁকড়ে যায় বা মুড়ে যায় তাহলে তা মোজাইক রোগের কারণে হয়েছে | এটি রুখতে অ্যাসিফেট, ডাইমিথোয়েট, ইমিডাক্লোপ্রিড কমপক্ষে এক লিটার জলে দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে এবং তা ফসলে ছড়িয়ে দিতে হবে | তবে, এই বর্ষায় খেয়াল রাখতে হবে যেসব গাছ বেশি জলাবদ্ধ সহ্য করতে পারেনা তাদের শেডের নিচে রাখতে হবে |
ঘরের গাছের যত্ন (Terrace farming care):
১) বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি ক্যাকটাস বা সাকুলেন্ট সদস্যদের গাছের জন্য ক্ষতি বয়ে আনে। তাই এদের খোলা আকাশের নিচে না রাখাই ভালো। এই জাতীয় গাছগুলোকে ছায়ার মধ্যে বা ঘরের মধ্যে রাখা উচিত।
২) গাছে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যেকোনো ঘরোয়া গাছের জন্য এমন টব বা পাত্র বাছাই করা দরকার যেটায় জল নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনমত ছিদ্র থাকে।
৩) গরমে যেমন টবের মাটি কয়েক ইঞ্চি নিচ পর্যন্ত ভরাট করতে হয়, তেমনই বর্ষাকালে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য টবে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া উচিত যাতে জল তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
৪) বর্ষাকালে সার প্রয়োগ না করাই ভালো। কেননা বৃষ্টির জলে যে পরিমাণে নাইট্রোজেন বা অন্যান্য উপাদান থাকে তা গাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। তাই সার দেওয়া উচিত নয়।
৫) অনেক সময় পিঁপড়ে বা অন্যান্য ছোট ছোট পোকা টবের নিচে বাসা তৈরি করে। এসব পোকামাকড় গাছের অনেক ক্ষতি করে। তাই গাছের টব সরিয়ে নিয়ে পোকামাকড় ধ্বংস করতে হবে।
৬) গাছে যদি মুকুল ধরে তখন কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিত তাতে অন্যান্য মুকুল বা পাতায় পোকা আক্রমণ করার আশংকা কমে যায়।
আরও পড়ুন - Pudina Farming: ছাদ বাগানে পুদিনা পাতার সহজ চাষ পদ্ধতি
৭) মাঝে মাঝে দেখা যায় গাছের মাটিতে অনেক কেঁচো। এতে ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই। কারণ কেঁচোকে প্রকৃতির লাঙল বলা হয়। এই কেঁচো মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে থাকে।
৮) গাছের মরা ডাল পাতা বা মরা ফুল, ফল কেটে ফেলা উচিত। অবাঞ্চনীয় কান্ড বা পাতা থাকলে গাছকে যেমন অসুন্দর লাগে তেমনি গাছে খাদ্য বা জল চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Pani Kachu Cultivation: জেনে নিন আধুনিক পদ্ধতিতে পানিকচুর চাষাবাদ পদ্ধতি
Share your comments