কৃষকদের ধান চাষে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া/ঝলসা রোগ এক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এ রোগের ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া কোষগুলো একত্রে মিলিত হয়ে ভোরের দিকে হলদে পুঁতির দানার মত গুটি সৃষ্টি করে, এ গুটিগুলো এ রোগের জীবাণু চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। গাছের বিভিন্ন বয়সে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ (ক্রিসেক, পাতা পোড়া ও ফ্যাকাশে হলুদ) দেখা দেয়।
লক্ষণঃ (Symptoms)-
আক্রান্ত গাছের নিচের পাতা প্রথমে নুয়ে পড়ে এবং শুকিয়ে যায় ও পরে মারা যায়। এভাবে গাছের সকল পাতাই মরে যেতে পারে, এ অবস্থাকে ক্রিসেক বা নেতিয়ে পড়া বলা হয়। গাছের বয়স্ক পাতাগুলো স্বাভাবিক সবুজ বর্ণের থাকে, কিন্তু কচি পাতাগুলো সমানভাবে ফ্যাকাশে ও হলদে হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে মারা যায়। পাতা পোড়া রোগের লক্ষণের ক্ষেত্রে বয়স্ক গাছে প্রথমে পাতার কিনারায় এবং আগায় ছোট ছোট জলছাপের মতো দাগ দেখা যায়। এ দাগগুলো আস্তে আস্তে বড় হয়ে পাতার দুপ্রান্ত দিয়ে নিচের বা ভিতরের দিকে অগ্রসর হয়, আক্রান্ত অংশ বিবর্ণ হতে থাকে ও ধূসর বাদামীবর্ণে পরিণত হয়, যা ঝলসানো বা পাতা পোড়া বলে মনে হয়। রোগ সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে পড়লে জমি পুড়ে গেছে বলে মনে হয়।
(Paddy rot disease management) ধানের খোলা পচা রোগের লক্ষণ ও তার ব্যবস্থাপনা
পাতা পোড়া/ঝলসা রোগের প্রতিকার (Treatment of bacterial leaf blight) -
১) সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করুন।
২) ক্রিসেক আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে পার্শ্ববর্তী গাছ থেকে কুশি এনে লাগিয়ে দিন।
৩) যত শীঘ্র সম্ভব আক্রান্ত ক্ষেতের জল বের করে দিয়ে জমি ভেদে ৭-১০ দিন শুকাতে হবে।
৪) আক্রান্ত ক্ষেতে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করবেন না।
৫) আক্রান্ত ক্ষেতে বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার প্রয়োগে এ রোগের তীব্রতা কমে।
৬) প্রতি লিটার ১ গ্রাম হারে চিলিটেড জিংক স্প্রে করলে রোগের তীব্রতা কমে যায়।
৭) ০.০৫ গ্রাম স্ট্রেপ্টোসাইক্লিন এবং ০.০৫ গ্রাম কপার সালফেটের স্প্রে প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
Image source - Google
Related link - (Phytophthora Infestans disease of potato) আলুর নাবি ধ্বসা রোগ প্রতিকার করুন এই পদ্ধতিতে
(Soil examination) অম্লমাটি ও ক্ষারমাটি চিহ্নিত করা হয় কিভাবে? সংশোধনের উপায় কী?
Share your comments