
এ বছর বর্ষায় খাতড়া মহকুমায় এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। তাই খরিফ ফসল হিসেবে অন্যান্য ব্লকের পাশাপাশি সারেঙ্গা ব্লকেও আমন ধানের চাষ কিছুটা মার খেয়েছে। এই ক্ষতিপূরণে ব্লক কৃষিদপ্তর বাদাম চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। সারেঙ্গার গোয়ালবাড়ি, সারেঙ্গা ও বিক্রমপুর, এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দেড়শো বিঘে জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। সারেঙ্গা ব্লক কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, আমন ধানের বিকল্প হিসেবে এখানে ডাল ও তৈলবীজ শস্য হিসেবে বাদামের চাষ করা হয়েছে। যে জমিগুলি মূলত অনুর্বর ও আমন ধান চাষের অনুপযোগী, সেখানে বাদাম চাষ করা হয়েছে।

বাদাম তেল স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব উপকারী। বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে। তাই চাষিদের কাছে এটি যথেষ্ট অর্থকরী ফসল। সেই জন্য আগামী দিনে আরও বেশি এলাকায় বাদাম চাষের পরিকল্পনা রয়েছে। কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, আমন ধানের ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু, এবারের বর্ষার মরশুমে বেশ কিছু এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়নি। তার ফলে এখনও অনেক জমিতে এলাকার চাষিরা ধান রোপন করতে পারেননি। কৃষিদপ্তর সেই কারণে চাষিদের আয়ের কথা মাথায় রেখে বাদাম চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া বাদাম চাষে অনেক কম জল লাগে। বাদাম গাছে নাইট্রোজেনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে বলে জমিতে সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। এমনকী, এই চাষে জমির উর্বরতা বাড়ে। তাই সামান্য পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ করে এই ফসল ফলানো যায়।

তবে, শুধুমাত্র ফসল ফলানোই নয়। কীভাবে এখানকার উৎপাদিত বাদাম বাজারজাত করা হবে, ব্লক কৃষিদপ্তর সেই দিকেও নজর রেখেছে। হুগলির আরামবাগ ও পাশের মেদিনীপুর জেলার রামগড়ের বাজারে উৎপাদিত বাদাম বিক্রির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তিন মাসের মধ্যে বাদামের ফলন কৃষকের ঘরে উঠবে। কৃষকরা সরাসরি বাজারে গিয়ে বাদাম বিক্রি করতে পারবেন।
কৃষিদপ্তর আরও জানিয়েছে, এই চাষে প্রতি বিঘায় দশ-পনেরো কেজি বাদামের বীজ লাগে। বাদামের শক্ত খোসা ছাড়িয়ে বীজ কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর জমিতে সারি দিয়ে বীজ লাগাতে হয়। তিন মাসের মধ্যে জমি থেকে বাদআম বাজারজাত করা যায়। এছাড়া চাষের সময় কুড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করা আবশ্যক।
- Sushmita Kundu
Share your comments