করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে উদ্বেগ। পরিস্থিতি উপর নজর রাখতে ইতিমধ্যেই নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে। স্বাস্থ্য দফতর বিভিন্ন জেলার সমস্ত ব্লক হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতন করে পরামর্শ প্রদান করলেও আশঙ্কা ঊর্ধ্বগামী।
সর্বোপরি দুশ্চিন্তার বিষয় এই যে, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পরিকাঠামো না থাকায় উদ্বিগ্ন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। এই মূহুর্তে একমাত্র উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কিছু পরিকাঠামো রয়েছে। বাকি ব্লকের হাসপাতালগুলোতে সে ধরনের পরিকাঠামো ত দূর, এমনকী উপযুক্ত মাস্ক বা বিশেষ সুরক্ষাযুক্ত পোশাকও নেই। ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকার ব্লক হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর অবস্থা আরও শোচনীয়। চিকিৎসকদের বক্তব্য, যাঁরা এ ধরনের রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার কাজে যুক্ত থাকবেন, তাঁদের সুরক্ষার জন্য এন-৯৫ মাস্ক বা ‘পার্সনাল প্রোটেকটেড ইকুইপমেন্ট’ (পিপিই) দেওয়া হয়নি। এতে রোগীদের কাছে যাওয়া বা প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গেলে তাঁরা কতটা নিরাপদে কাজ করতে পারবেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। তবে মিরিক ব্লক হাসপাতালে মাস্ক বা পিপিই কিছু দেওয়া হয়েছে, সীমান্তে শিবিরে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য।
করোনা ভাইরাসের প্রভাব কলকাতাতেও। বেলেঘাটায় হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ চিনা তরুণী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলেই সন্দেহ চিকিৎসকদের। প্রয়োজনে তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পুণের ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অফ ভাইরোলজিতে পাঠানো হতে পারে।
কীভাবে ঘটল এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব?
অনুমান অনুযায়ী, উহানের অবৈধ বন্য প্রাণীর বাজার থেকেই প্রসার লাভ করেছে এই করোনাভাইরাস। চিনের স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন) (WHO) ঠিক কীভাবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটল, তা নিশ্চিত করতে তদন্ত চালাচ্ছেন।
সংক্রমণ মানেই কি মৃত্যু?
এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কবলে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪,৫০০ জনেরও অধিক এবং প্রাণ হারিয়েছেন ১০৬ জন ব্যক্তি। আশঙ্কাজনক তথ্য এই যে, এখনও এটির বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন অথবা প্রতিষেধক টীকা আবিষ্কৃত হয় নি। তবে WHO-এর একটি বিবৃতি অনুযায়ী, “একাধিক উপসর্গেরই চিকিৎসা সম্ভব, অতএব চিকিৎসা হবে আক্রান্তের শারীরিক অবস্থা বিবেচনার মাধ্যমে”।
নববর্ষের ছুটি থাকায়, অনেকেই ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যাচ্ছেন, ফলে এই ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। তাই এর প্রসার রুখতে করোনাভাইরাসের প্রসার রোধে চিনের সরকার উহান শহর থেকে বন্ধ করেছে সমস্ত বহির্গামী উড়ান এবং অচল করে দেওয়া হয়েছে শহরের জনপরিবহণ ব্যবস্থা।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments