তীব্র বেগে ধেয়ে আসা ঘুর্ণিঝড় ‘বায়ু’ আজ বৃহস্পতিবার সকালেই গুজরাতের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে। ১৯৯৩ সালে তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছিল রাজস্থান। ওই বছর ১ জুন চুরুতে তাপমাত্রার পারদ চড়েছিল ৪৯.৮ ডিগ্রির ঘরে। চলতি বছরের ১ জুন তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৫০.৮ ডিগ্রিতে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, ঘণ্টায় ১৪৫ থেকে ১৭০ কিলোমিটার বেগ থাকবে ‘বায়ু’র। ঝড়ের প্রভাব পড়বে মুম্বই সহ দমন এবং দিউতেও। ফলে বুধবারই লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহওয়া দপ্তর। সেই মতো ‘বায়ু’র মোকাবিলায় তৎপরতা তুঙ্গে তুলেছে গুজরাত সরকার। ইতিমধ্যেই সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূল এলাকা থেকে প্রায় দু’ লক্ষ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
‘বায়ু’র তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে গুজরাত সরকার। পুলিস, বায়ুসেনা, উপকূলবাহিনী থেকে শুরু করে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা সবরকম পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি। গুজরাত সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি জানিয়েছেন, ‘বায়ু’র তাণ্ডবে প্রাণহানি এড়াতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে আসা পর্যটকদের ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। যাঁরা ফিরতে পারবেন না তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। এরই পাশাপাশি, দু’দিন গুজরাতের সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশিকাও জারি করেছে গুজরাত সরকার। সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। উপকূল বাহিনী সূত্রে খবর, সমুদ্রে মাছ ধরতে আসা চীনের বেশ কিছু মৎস্যজীবী নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মহারাষ্ট্র প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। ছ’ সাতটি নৌকা নিয়ে রত্নগিরি জেলার আশে পাশে আশ্রয় চেয়েছেন তাঁরা।
বুধবার থেকে ‘বায়ু’র প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গুজরাতে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হালকা বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঝড়ো বাতাস বইছে। মুম্বই সহ মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি উপকূল এলাকাতেও শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গুজরাতের বীরাবল উপকূল থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ‘বায়ু’ অবস্থান করছে। আজ সকালের মধ্যেই শক্তি বাড়িয়ে গুজরাতের উপকূল এলাকায় ঢুকে পড়বে ‘বায়ু’। সঙ্গে ভারী বৃষ্টি ও বজ্রপাতের পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ‘বায়ু’র তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূল। গুজরাতের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এই দুই উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। বুধবার রাত পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ‘বায়ু’র জেরে বিপর্যস্ত হতে পারে বনসকাঁথা, সবরকাঁথা, আমরেলি, ভাবনগর, গির সোমনাথ সহ দক্ষিণ গুজরাতের নবসারি, দাদরা নগর হাভেলিও। দমন এবং দিউও লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে গুজরাতের পাশাপাশি এই দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
তথ্য: বর্তমান পত্রিকা
রুনা নাথ(runa@krishijagran.com)
Share your comments