কৃষিবিষ প্রয়োগের ভয়াবহতা – এক অশনি সংকেত

২০১১ সালের পর থেকে কৃষিক্ষেত্রে গড়-পড়তা বৃদ্ধি ২ শতাংশ কম। অথচ জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় ২.২৫ শতাংশ। বিষ আর রাসায়নিক প্রয়োগের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি কেন কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পারল না?

KJ Staff
KJ Staff

১৯৫১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে আমাদের জনসংখ্যা বেড়েছে ৩.৫ গুন এবং ঐ সীমায় খাদ্য শস্যের উৎপাদন বেড়েছে ৪.৭৪ গুন। ১৯৫১ সালে মাথা পিছু খাদ্যশস্য উৎপাদন হত দৈনিক ৪০০ গ্রাম। ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় দৈনিক ৫৪৫ গ্রামে। আরও দৈনিক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে প্রচার ও প্রয়োগ বেড়েই চলেছে রাসায়নিক বিষের। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে কৃষিক্ষেত্রে গড়-পড়তা বৃদ্ধি ২ শতাংশ কম। অথচ জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় ২.২৫ শতাংশ। বিষ আর রাসায়নিক প্রয়োগের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি কেন কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পারল না?

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে মাটি তার উর্বরতা হারিয়েছে, পৃথিবী হারিয়েছে তার জৈব বৈচিত্র্য। তবু থামল না লোলুপ জিহ্বা। নানান মোড়কে পোষাকের রং বদলে  বাজারে চালু থাকলো রাসায়নিক কীটনাশক। সরল বিশ্বাসের অধিকারী কৃষক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে নতুন নতুন রূপে তারাই হাজির করল আই পি এম , আই এন এম ইত্যাদির নামে কীটনাশকের সতেজ বাজার। শুধুমাত্র ভারতেই বহুজাতিক সংস্থা গুলি রাসায়নিক কীটনাশকের  বাজার আনুমানিক ২৩ হাজার কোটি টাকা। এখান থেকেই তারা মুনাফা করেছে আমাদের দেশের ক্ষুধার্ত কৃষকের পেট কেটে। তাদের এই মুনাফার জন্য আমরা যা পাচ্ছি তা বড়ই মজার। ফসল বৃদ্ধির হার ক্রমশ নিম্নমুখী, অথচ রোগ পোকার উপদ্রব উর্দ্ধমুখী, পরিবেশ দূষন ঘটছে আর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে জর্জরিত।

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ১৯২০-৩০ সালে ধানের ৪০ টি পোকার উপদ্রব দেখা যেত বর্তমানে তা বেড়ে ২০০ এর বেশী। ডাল শস্যে ১৬০ টি থেকে বেড়ে ২৮০ টি শত্রু পোকা হয়েছে। গমে ৩০ টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০ টি। এভাবে প্রত্যেকটি ফসলের পোকার উপদ্রব বেড়েছে। কৃষি বিষের সঠিক ব্যবহার, প্রয়োজন ভিত্তিক ব্যবহার এরকম নানাবিধ কথার কারসাজি দেখিয়ে ক্রমান্নয়ে বেড়ে চলেছে কৃষি বিষের ব্যবহার ও বাজার। এক প্রকার বিষ বেশি মাত্রায় প্রয়োগ করেও কাজ না হওয়ায় নতুন দামি বিষ বাজারে আসছে। কিছু বিষ নিষিদ্ধ হয়, প্রচার হয় কৃষি কল্যানে নীতি নির্ধারকদের নিবেদিত প্রানের। সঙ্গে সঙ্গে বাজারে চলে আসে নতুন বিষ। আসে অতি গোপনে প্রচার ব্যতিরেকে। কৃষি বিষ, কৃষি রাসায়নিকের ব্যবহার করে বাজার করে, বহুজাতিকের মুনাফা হয় আকাশ ছোঁয়া। কেবল মাত্র ২০১৪-২০১৮ এই সময়ের মধ্যে ভারতে পেস্টিসাইড কোম্পানী গুলোর সার্বিক যৌগিক বৃদ্ধির হার (সি. এ. জি. আর) ১৪.৭ % আর তার বিপরীতে কৃষি বৃদ্ধির ফলনের হার ২,২৫%।

তথ্যসূত্র: ড. নিত্যানন্দ ত্রিবেদী

- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)

Published On: 08 March 2019, 12:08 PM English Summary: Dangerous affects of pesticide use

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters