সোমবার থেকে শুরু হয়েছে লকডাউনের তৃতীয় পর্যায়৷ চলবে আগামী ১৭ ই মে পর্যন্ত৷ এই দু সপ্তাহব্যাপী তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনে দেশব্যাপী কিছু নিয়ম শিথিল করা হলেও বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই অনেক ক্ষেত্রেই বিধিনিষেধ বহাল রাখা হচ্ছে৷ করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪২,০০০ এরও বেশি৷ এর মধ্যে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হলেও এই করোনাকে মূল থেকে উপড়ে ফেলতে লকডাউন জারি রয়েছে৷ তবে এক্ষেত্রে কিছু কিছু প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে৷
পরিবহণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে দেশে বিমান, রেল, মেট্রোয় পরিবহণে এখনও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে৷ বন্ধ স্কুল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, শপিং মল, সিনেমা, ধর্মীয় স্থান(যেখানে জমায়েতের সম্ভাবনা রয়েছে) প্রভৃতি৷ তবে রাজ্যের মধ্যে জরুরি পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই৷ তবে জোন-এর ভিত্তিতে এই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে৷
রেড জোন এবং কন্টেনমেন্ট জোন- সব মেট্রো শহরগুলিকে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে রেড, অরেঞ্জ, গ্রীণ এই তিন জোনে ভাগ করা হয়েছে৷ রেড জোনে, অনুমতিপত্র থাকলে তবেই গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে৷ খোলা যাবে না সেলুন, স্পা, জিম৷ হাসপাতালের আউটডোর বিভাগ খোলার অনুমতি রয়েছে৷ তবে সামাজিক দূরত্ব অবশ্যই মেনে চলতে হবে৷ কৃষিকাজ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, চটকলে কাজ, গ্রামীণ এলাকায় নির্মাণ কাজে, আইটি হার্ডওয়্যার নির্মাণ, স্পেশাল ইকোনমিক জোনে ছাড় রয়েছে৷ গ্রামীণ এলাকায় দোকান খোলার অনুমতি রয়েছে৷ ই-কমার্সের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহণে ছাড় রয়েছে৷ প্রবীণ ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের বাড়ির বাইরে সন্ধ্যা ৭টার পর বের হওয়াতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ সংবাদ মাধ্যম, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, দমকল, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে৷
অরেঞ্জ জোন- রেড জোনে যে বিষয়গুলিতে ছাড় রয়েছে বা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, অরেঞ্জ জোনেও সেগুলি খোলা যাবে৷ এছাড়া, অরেঞ্জ জোনে ট্যাক্সি চলতে পারে৷ ট্যাক্সিতে গাড়ির চালক ছাড়া একজন যাত্রীই উঠতে পারবে৷ চার চাকার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়িতে চালক ছাড়া মাত্র ২জন যাত্রী থাকতে পারবে এবং বাইক বা মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আরোহী একজনই থাকতে পারবে, সঙ্গে কাউকে নেওয়া যাবে না৷ রিক্সা, অটো-তে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷
গ্রীণ জোন- এই জোনে, রেড বা অরেঞ্জ জোনের থেকে বিভিন্ন নিয়ম অনেকটা শিথিল করা হয়েছে৷ এখানে ৫০ শতাংশ বাস চলতে পারে৷ তবে তাতে ৫০ শতাংশ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে, তার বেশি নয়৷ সেই সঙ্গে খোলা যেতে পারে মদের দোকান, তবে সেক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ বেসরকারি অফিস খোলা যেতে পারে, তবে তাতে ৩৩ শতাংশ কর্মী কাজ করতে পারবে, বাকিদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে৷
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রমণের ধরণ অনুযায়ী আগেই দেশকে কয়েকটি ভাগে বা জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। এগুলি হল- রেড জোন, যেখানে সংক্রমণের সংখ্যা বেশি, কনটেনমেন্ট জোন অর্থাৎ রেড জোনের মধ্যে হাই রিস্ক এলাকা, অরেঞ্জ জোন যেখানে সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম এবং গ্রীন জোন অর্থাৎ গত ২১ দিনে যেখানে নতুন করে সংক্রমণের কোনও খবর নেই। এই তিন ভাগে এলাকা ভাগ করে তার ভিত্তিতেই কাজকর্মে ছাড় দেওয়া হয়েছে৷ তৃতীয় দফার এই লকডাউনের মেয়াদ জারি করা হয়েছে আগামী ১৭ ই মে পর্যন্ত৷
বর্ষা চ্যাটার্জি
Share your comments