রাজ্যজুড়ে অকাল বর্ষণে রাজ্যের আলু ও পেঁয়াজ চাষিরা ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত। তিনদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিপাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আলু ও পেঁয়াজ চাষে। যেহেতু দুটি ফসলই কন্দ জাতীয় ফসল ও মাটির নীচে উৎপন্ন হয়, অতিবৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ফসলগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এই সময় ফসল তোলার মুখে। কিছু ফসল মাটি থেকে তুলে জমিতেই কৃষকরা বস্তা বন্দী করে। সংগৃহিত প্রচুর পরিমাণে আলু জমিতেই রাখা অবস্থায় বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময় শুষ্ক ও রৌদ্রজ্বল আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়। তার বদলে অতি বৃষ্টি চাষিদের হতাশ করেছে। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদীয়া প্রভৃতি জেলায় আলু ও পেঁয়াজ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
গত তিনদিনের বৃষ্টিতে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৪১ হাজার ২৭৫ হেক্টর আলুর জমি ক্ষতিগ্রস্ত। পাশাপাশি ২২০০ হেক্টর জমির সর্ষে, ৩৩৫০ হেক্টর জমির পেঁয়াজ, ১৩ হাজার ৯৫৬ হেক্টর জমির বোরো ধান ৩৬৫০ হেক্টর জমিতে থাকা সব্জি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবারই ক্ষয়ক্ষতির ওই রিপোর্ট কৃষি দপ্তরের জেলা উপ অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় রাজ্য কৃষি অধিকর্তার অফিসে পাঠিয়েছেন। জেলায় মোট ৫০ হাজার ৮১১ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছে। তারমধ্যে ৪১ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত। মাঠ থেকে আলু তোলার মুখে এই বিপর্যয়ে হাজার হাজার চাষি মুষড়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন।
উত্তর ২৪ পরগণা জেলাতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ৩২২৭৫ হেক্টর জমিতে যার মধ্যে পেঁয়াজ সহ সবজিচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭৫০ হেক্টর জমিতে। এখানে ফল চাষ হয়েছে ৯৭০০হেক্টর জমিতে এবং ক্ষতি হয়েছে ৬৩৭০ হেক্টর জমির ফল। ফুল চাষ হয়েছে ১৭০০ হেক্টর জমিতে ও ক্ষতি হয়েছে ৮৭০ হেক্টর জমিতে।
উত্তর ২৪ পরগণা ও নদীয়া জেলার ফুল ও ফল চাষিরাও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ফুল নষ্ট হয়ে গেছে, গাছ ঢলে পড়েছে। ক্ষতি হয়েছে সরষে ও তিল চাষেও। যদিও এই বৃষ্টিতে বোরো ও আমন ধান চাষে কিছুটা আশার আলো দেখতে পাবেন কৃষক বন্ধুরা।
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
Share your comments