
জলপাইগুড়ি জেলার মেটেলি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষিরা অনাবাদি জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে একদিকে যেমন লাভের মুখ দেখছেন অপরদিকে তেমনই এই ফসল তাদের অন্যান্য ফসলকে হাতির আক্রমণের হাত থেকে বাচাচ্ছে। বছর তিনেক আগে এই অঞ্চলের চাষিরা ক্যাক্টাস গোত্রীয় ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেছিলেন। এবছর ফসল ঘরে তুলে ও বিক্রি করে লাভবানও হয়েছেন।
এই সমস্ত অঞ্চলে প্রায়ই হাতির হামলা হয়। জমি অনাবাদি হোয়ায় ধান, পাট সহ অনান্য সব্জি বিভিন্ন সময়ে চাষ করে সেভাবে ফসল ভালো হতো না। ড্রাগন ফল চাষে খুববেশি খরচ হয় না। ক্যাক্টাস গোত্রীয় হওয়ায় এতে জলও কম লাগে। ড্রাগন ফলের গাছে যেহেতু কাঁটা রয়েছে তাই এখন হাতির হামলা কমে গিয়েছে এবং ফসলের ক্ষতিও হচ্ছে না। তাই ড্রাগন ফল চাষ করে এলাকার চাষিরা অনেকেই বেশ লাভবান হয়েছেন। গ্রামের অনেক কৃষকই এখন ওই ফল চাষ করছেন। ড্রাগন ফল খেতে সুস্বাদু, এর পুষ্টিগুণও প্রচুর। এই ফলের রস থেকে তৈরি সিরাপ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ কাজ করে। ড্রাগন ফলের চাষ করে বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক কৃষকই লাভবান হয়েছেন। তাই যাঁরা এতদিন ধান, পাট চাষ করতেন তাঁরাও ওই ফল চাষ করতে শুরু করেছেন। তাছাড়া ধান, পাট চাষ করলে গ্রামে হাতির হামলা হয়। কিন্তু এই ফলের গাছে কাঁটা থাকায় হাতি ফল খেতে আসে না। তাই এই চাষ অনেক নিরাপদ। ধান, পাট ও সবজি ক্ষেতের চারপাশে যদি এই ফলের চাষ করা হয় তাহলে ধান, পাট ও সবজিকেও হাতির হামলার হাত থেকে বাঁচানো যাবে।

বসন্ত বা প্রাক বর্ষায় ড্রাগন ফলের গাছ লাগানো হয়। নির্দিষ্ট দূরত্বে লাইন করে গাছগুলি লাগাতে হয়। একটি সারি থেকে অপর সারির দূরত্ব ১৪ ফুট ও চারা থেকে চারার দূরত্ব ১০ ফুট রাখতে হয়। মাটিতে ফুট খানেকের গর্ত করে ১০ কেজি গোবর বা কেঁচো সার , এক মুঠো হাড় গুঁড়ো ও ৫ গ্রাম দানা বিষ দিয়ে মাটি উচু করে চারা লাগাতে হয়। গাছগুলির বৃদ্ধি শুরু হলে গাছের সঙ্গে লোহার ফ্রেম কিংবা শক্ত বাটাম জুড়ে দিতে হয়। ড্রাগন ফলের গাছ লাগানোর পর তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে। তারপর বর্ষার সময় প্রতি বছর ফল পাওয়া যাবে।
তথ্য সহায়তায় – ড: শুভদীপ নাথ
রুনা নাথ
Share your comments