মাছে ভাতে বাঙালি। পঞ্চব্যঞ্জনে অন্তত একটা মাছের পদ চাই। পুজো কিংবা উৎসবের মরশুমে আবার গলদা, ভেটকি, ইলিশ, পাবদা না হলে ভোজনরসিক বাঙালির তৃপ্তি মেলে না। কিন্তু এবার পুজোয় বাঙালির পাতে মাছের জোগান কতটা দিতে পারবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে মৎস্য দপ্তর।
বর্ষণ ও জলাধারের ছাড়া জলে বিপন্ন ভেড়ি ও পুকুর। মাছ ভেসে গিয়েছে। তাই উৎসবের মরশুমে বাঙালির পাতে মাছের টান থাকবে। পুজোর বাজারে চাহিদা মতো মাছের জোগান দিতে পারবে না রাজ্য মৎস্য দপ্তর। দক্ষিণ ভারত থেকে রুই-কাতলা আমদানি করে বাঙালির চাহিদা অনেকটা মেটাতে হয়।
উৎসবের দিনে রাজ্যে মাছের চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকে। কিন্তু এবার অতিবৃষ্টিতে ভেড়িগুলো ভেসে গিয়েছে। তার উপর ঘনঘন ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ চোখ রাঙাচ্ছে। আতঙ্কে সমুদ্রে নামতে পারছেন না মৎস্যজীবীরা। ফলে এবছর পুজোয় সামুদ্রিক মাছেরও জোগান কম থাকবে। এমনকী, প্রতিদিন বাজারে যে পরিমাণ মাছের জোগান দেওয়া হয় পুজোর সময় সেই তুলনায় জোগান আরও কম থাকবে বলে মৎস্য দপ্তর জানিয়েছে।
এ রাজ্যে মাছের চাহিদা থাকে বছরে ১৮.২০ লক্ষ মেট্রিক টন। কিন্তু রাজ্যে মাছচাষ হয় বছরে ১৭.৯৫ লক্ষ মেট্রিক টন। প্রতিদিন বাজারে চাহিদা থাকে ৫১৯২ মেট্রিক টন মাছের। সেখানে জোগান থাকে ৫১৫৮ মেট্রিক টন। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে প্রায় ৩৪ মেট্রিক টন মাছের ঘাটতি রয়েছে। মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “সারা বছর মাছের যা চাহিদা থাকে সেই তুলনায় পুজোর সময় চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু এবার অতিবৃষ্টিতে অনেক ভেড়ি ডুবে রয়েছে। সেখানে থেকে প্রচুর মাছ বেরিয়ে গিয়েছে। পুজোর মুখে এত ঘন ঘন নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্ত হচ্ছে। দুর্যোগের সময় মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে নামতে দেওয়া হয় না। যে কারণে বাজারে সামুদ্রিক মাছেরও টান রয়েছে। ফলে এবার পুজোয় মাছের জোগান স্বাভাবিক থাকবে না। পুজোয় দিনগুলোতে প্রতিদিন ৫০৪১ মেট্রিক টক টন মতো মাছ বাজারে জোগান দেওয়া যাবে।”
আরও পড়ুন -PM Kisan Yojana: শীঘ্রই কৃষকদের অ্যাকাউন্টে আসতে চলেছে টাকা, দেখে নিন তথ্য
রাজ্য মৎস্য দপ্তরের প্রায় ১৭টি বড় ভেড়ি রয়েছে। এছাড়া ছোট ভেড়ি সংখ্যা প্রায় ১১৮টি। এর মধ্যে অতিবৃষ্টিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হেনরি, ফ্রেজারগঞ্জের ভেড়িগুলো এখন জলমগ্ন। কলকাতার বাইপাসের ভেড়িগুলোও জল থইথই করছে। মন্ত্রী বলেন, “সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেনরি আইল্যান্ড, ফ্রেজারগঞ্জের ভেড়িগুলো। এখানে যশ বা ইয়াসে (Cyclone Yaas) ব্যাপক পরিমাণ মাছের ক্ষতি হয়েছে। অতিবৃষ্টিতেও প্রচুর মাছ বেরিয়ে গিয়েছে। কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘এ বছর সমুদ্রেও মাছের টান রয়েছে। এখানে দশ হাজার নৌকা রয়েছে। সমুদ্রে মাছ না মেলায় এখন দিনে দুই থেকে আড়াই হাজার নৌকা সমুদ্রে যাচ্ছে। যে পরিমাণ মাছ উঠছে তা দিয়ে প্রতিদিনের চাহিদা মেটানো যায় না।”
আরও পড়ুন -Duare Ration Pilot Project: চলতি মাসে পাইলট প্রকল্পের কাজ হবে আট দিন, জানিয়ে দিল খাদ্য দপ্তর
Share your comments