রাগি এবং বিভিন্ন ধরনের বাজরার মিশ্রণে তৈরি আটা গ্লুটেনমুক্ত হওয়ায় এর উপকারীতা অনেক। এটি যেমন হার্টের পক্ষে উপকারি তেমনই প্রচুর ফোলেট ও আয়রন থাকায় এটি রক্তালাপতা কমাতে সাহায্য করে, সর্বোপরি কার্বোহাইড্রেটের পরিমান কম থাকার কারণে এটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী।
এখনকার গ্রাহকদের খাদ্যতালিকার বৈচিত্র এবং স্বাস্থ্যসচেতনতার কথা মাথায় রেখে গ্লুটেনমুক্ত আটা, রাগির আটা এবং বিভিন্ন ধরনের বাজরার মিশ্রণে তৈরি আটা বাজারে আনল আইটিসি। তাদের আশীর্বাদ ব্র্যান্ডের নেচার্স সুপার ফুডস রেঞ্জের আওতায় এগুলি বাজারে আনছে তারা।
এই প্রসঙ্গে আইটিসি-র ডিভিশনাল চিফ এগজিকিউটিভ (ফুডস) হেমন্ত মালিক জানিয়েছেন, 'বর্তমানে ক্রেতারা আরও বেশি করে স্বাস্থ্যগুণসম্পন্ন খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। এমন একটি আশীর্বাদের নেচার্স সুপার ফুডস হাজির করা হল। এতে আছে যথাযথ পুষ্টি যা মানবদেহের পরিপূর্ণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। গ্রাহকদের খাদ্যতালিকায় যে ফাঁকগুলি ছিল, তা পূরণ করতে সফল হবে আইটিসি-র এই নতুন রেঞ্জ। এই নতুন খাবারগুলি গ্রাহকদের পুষ্টিগুণের চাহিদা এবং পছন্দমতো স্বাদের জোগান দিতে পারবে বলে আমাদের আশা’।
আসুন আমরা এবার জেনেনি বাজরার নানা উপকারীতা -
- ডায়াবেটিস কমায় - আটা বা চালের থেকে বাজরায় অনেক বেশি ফাইবার থাকে। এছাড়াও এতে বেশী পরিমাণে প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিডস থাকে। আটায় যেখানে আয়রন ৪.৯ মিলিগ্রাম থাকে, বাজরায় থাকে ৮ মিলিগ্রাম। এনার্জি আটা থেকে পেতে পারি ৩৪১ কিলো ক্যালরি, আর বাজরা থেকে পেতে পারি ৩৬১ কিলো ক্যালরি। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ আটায় থাকে ৭১.২ গ্রাম, যেখানে বাজরায় থাকে ৬৭.৫ গ্রাম।
বাজরা ম্যাগনেসিয়ামের অত্যন্ত উৎকৃষ্ট একটি উৎস। আর ম্যাগনেসিয়াম আছে বলেই ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কম হয়। রক্তে গ্লুকোজের সরবরাহও ঠিক থাকে। ম্যাগনেসিয়াম এমন অনেক এনজাইম তৈরি করে যা ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ডায়াবেটিসের কথা ভুলতে বাজরাকে সঙ্গী করতেই হবে।
- হার্ট সুস্থ্য রাখে - বাজরায় একটি উপাদান আছে, যার নাম লিগনান্স। এই লিগনান্স ফারমেন্টেড হয় কিছু ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে। তার থেকে তৈরি হয় এনটারোল্যাকটন বলে একটি উপাদান, যা হার্টের পক্ষে ভাল বলে গবেষণা করে জানা গিয়েছে। কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে এই উপাদানটি। তাই হার্ট ভাল রাখতে বাজরার হাত ধরুন।
- এতে থাকা ইনসল্যুবল ফাইবার গলব্লাডার স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
- ফল বা সবজির মধ্যে যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, তা সম পরিমাণে থাকে বাজরাতেও। তাই ফল খেলে যে উপকার আমরা পাই, তা আমরা সমান ভাবে পেতে পারি বাজরা থেকেও।
- ১০০ গ্রাম বাজরা খেলে তার মধ্যে থেকে ৯ গ্রাম এমন ফাইবার পাই আমরা যা যে কোনও হজম জনিত সমস্যার সমাধান করে দেয়। সহজে খাদ্যকনা পরিপাক করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি পেপটিক আলসার বা কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
- গবেষণা বলছে, বাজরার ফাইবার ব্রেস্ট ক্যানসারের আশঙ্কা অনেক কম করে দেয়। তাই মহিলাদের বাজরার রুটি খাওয়া খুবই দরকার।
- রক্তাল্পতা দূর করে - মহিলাদের মধ্যে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা খুবই সাধারণ একটা রোগ। বাজরার মধ্যে থাকা ফলিক অ্যাসিড, ফোলেট, আয়রন রক্ত বাড়ানোর প্রধান উপাদান। এছাড়া বাজরা কপারেরও অন্যতম উপাদান যা লোহিত রক্ত কণিকা বাড়াতে সাহায্য করে।
- টক্সিন মুক্ত সতেজ শরীর আমাদের সকলেরই লক্ষ্য। তাই আমরা যদি নিয়মিত বাজরার সঙ্গে থাকি তাহলে আমাদের শরীর থেকে টক্সিন আমরা সহজেই দূর করতে পারি। টক্সিন অনেক জীবাণু বহন করতে পারে, যা বিভিন্ন গুরুতর রোগের জন্ম দেয়। তাই বাজরা নিয়মিত খাবারে রাখলে তার মধ্যে থাকা কোয়ারসেটিন টক্সিন দূর করে। ভিতর থেকে শরীর অনেক সতেজ থাকে।
রুনা নাথ(runa@krishijagran.com)
Share your comments