মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে একটি বৈঠকের পরে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত স্থায়ী করা হবে। পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাস-এর সংক্রমণ রুখতে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী দুজনেই তৎপর হয়েছেন এবং বর্তমান পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাঁদের এই সিদ্ধান্ত।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করার পরে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে, প্রাথমিকভাবে লকডাউন ১৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত স্থায়ী করা হবে, পরে জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে লকডাউন প্রত্যাহার করা হবে, না কি বাড়ানো হবে, তা জানানো হবে। আজ জানানো হয় ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন জারি করা হল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি জুন মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে।
লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী –
১) ওষুধের দোকান ছাড়া সব বাজার দোকান বন্ধ থাকবে।
২) হটস্পট এলাকা থেকে কাউকে বাইরে বেরোতে দেওয়া হবে না। কেউ এলাকায় ঢুকতেও পারবেন না। জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে।
৩) এলাকার সবার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। শ্বাসকষ্ট, গলায় সমস্যা, জ্বর এই উপসর্গগুলি দেখা গেলেই লালারসের নমুনা নিয়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে।
৪) খাদ্যসামগ্রী বা অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে পুলিশ-প্রশাসন থেকে সাহায্য করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গে কোভিড-১৯ –এর বিস্তার রোধ করতেই সকলকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। একমাত্র সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমেই সম্ভব এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধ করা। কিন্তু সচেতন মানুষের দেশে সত্যই বড় অভাব।
সরকার থেকে রাজ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকানগুলি খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের কিছু কিছু জায়গায় শাকসবজি, মাছ-মাংসের বাজারে এবং দোকানে অনেকেই নিয়মনীতি অমান্য করছেন অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
লকডাউনের জেরে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন প্রত্যাহার করার বিষয়ে পূর্বেই আপত্তি জানিয়েছিলেন। কারণ মানুষের জমায়েত এখনও অনেক জায়গাতেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সম্পর্কিত দোকানগুলিও অনেকেই বিনা অনুমতিতে খুলে রাখছেন। বিশেষ করে কলকাতার রাজাবাজার, নারকেল ডাঙ্গা, তপসিয়া, মেটিয়াবুর্জ, মানিকতলায় মানুষের ভিড় যথেষ্ট।
এভাবে চলতে থাকলে পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী হবে। তাই সরকার থেকে লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওড়িশায় পূর্বেই লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল। এরপর মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। মন্ত্রকের ঘোষণা অনুযায়ী, সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা আদেশের লঙ্ঘন করলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৫ এর অধীনে লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments