বাংলার উচ্চ মানের ধানের চাহিদা প্রায় সকল অঞ্চলে এবং এমনকি এখান থেকে তা বিদেশেও রফতানি হয়। রাজ্য সরকার সবুজ বিপ্লব প্রকল্পের আওতায় রাজ্যে ধানের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা করে চলেছে। খারিফ মরসুমে আমন ধানের আবাদ বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার কেবল উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে ৭০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করে ৩৫০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্ষা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কৃষকদের ধানের বীজ বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে কৃষি বিভাগ। এই সময় জমিতে আমন ধানের বপন শুরু হবে। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে, রাবি এবং খারিফ উভয় মরসুমেই তিন ধরণের ধানের চাষ হয়। আউশ, আমন, বোরো, তুলাইপাঞ্জি বিভিন্ন ধরণের ধান উৎপাদিত হয়। বাংলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত এবং ভাল জলবায়ু উচ্চমানের ধান উৎপাদনে বিশেষ সহায়ক।
বীজ বিতরণ (Seed Distribution)-
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক ভারতে সবুজ বিপ্লব আনয়ন (বিজিআরআই) প্রকল্পের আওতায় যে অঞ্চলে ভাল ধান চাষের সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে ধানের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত খারিফ মরসুমে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪.৪৫ মেট্রিক টন আমন ধানের আবাদ হয়েছিল এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩১১৫ মে.টন.। এবার হেক্টরপ্রতি ৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতএব, আশা করা হচ্ছে এবার অতিরিক্ত ৩৮৫ মেট্রিক টন ধানের উত্পাদন বৃদ্ধি পেয়ে তা হবে প্রায় ৩৫০০ মেট্রিক টন । শিলিগুড়ি জেলার খড়িবাড়ী, নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া ইত্যাদি অঞ্চলে ধানের উন্নত ফলন লক্ষ্য করা যায়। শিলিগুড়িতে, কৃষি বিভাগ উন্নতমানের ধানের বীজ বিতরণের জন্য প্রায় ২০০০ কৃষককে যোগাযোগ করেছে। রাজ্য বীজ কর্পোরেশন ২৫-২৬ হাজার মেট্রিক টন উচ্চমানের ধানের বীজের ব্যবস্থা করেছে। বর্ষা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কৃষকরা জমিতে এই বীজ রোপণ শুরু করবেন।
ধান উৎপাদনে সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ -
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার আবহাওয়া অনুকূল, সঠিক সময়ে রাজ্যে বর্ষার অনুপ্রবেশ ঘটেছে, ধান চাষের জন্য উপযুক্ত মরসুম। ভাল বৃষ্টির কারণে অমিতে আর্দ্রতার পরিমাণও পর্যাপ্ত রয়েছে। ধানের বীজ রোপণ করতে কৃষকদের জমি সমতল করতে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। ইতিমধ্যে আর্দ্র জমির কারণে ধানের বীজ জমিতে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে এবং এবার ধানের ফসল খুব ভাল হবে। ভাল আবহাওয়ার কারণে ধান আবাদ নিয়ে কৃষকদের মধ্যেও প্রচুর উদ্দীপনা রয়েছে। এবার ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের সম্ভাব্য সকল সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ৭৫ শতাংশ কৃষি জমিতে ধানের চাষ হয় এবং সুতরাং পশ্চিমবঙ্গই ভারতের শীর্ষ ধান উত্পাদনকারী রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ বছরে গড়ে ১৫ থেকে ১৬ মিলিয়ন টন ধান উত্পাদন করে।
Related link - #বর্ষা ২০২০, খরা প্রবণ অঞ্চলগুলিতে অপর্যাপ্ত বৃষ্টি মোকাবেলায় শীর্ষ পাঁচটি পদক্ষেপ
কৃষক বন্ধু প্রকল্প, ২০২০ -এর স্থিতি (beneficiary status) অনলাইনে চেক করুন
কৃষকবন্ধু প্রকল্প (Krishakbandhu Online Application) অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া, ২০২০
Share your comments