
একজন অস্ট্রেলিয়ান এগ্রোনমিস্ট স্টিভ কেপনেস তাঁর কুইন্সল্যান্ড শহরে অবস্থিত নিউট্রি-টেক্ সলিউশন সংস্থার পক্ষ থেকে নিউট্রিশন ফার্মিং পদ্ধতি ও ভারতে এই পদ্ধতির পরিচয় ঘটানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয় এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে এই দেশের চাষীরা বিশেষ সুবিধা লাভ করবে, কারণ এই পদ্ধতি চাষিদের অতিরিক্ত ব্যয় ও মাটির রুক্ষতা থেকে রক্ষা করবে। তাঁর বক্তব্য হলো ২৩ বৎসরের গবেষণার পর কেপনেস এবং তাঁর সংস্থা এই উন্নত ও অত্যাধুনিক প্রথায় মাটি ও গাছের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজে সাফল্যলাভ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার এই কৃষিবিদের কথা অনুসারে, এই ধরণের চিকিৎসা শস্যের পুষ্টিগত গুরুত্বকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয় এবং গাছের মধ্যে সহনশীলতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে উদ্ভিদের অনাক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফলে গাছ খুব সহজেই কীট পতঙ্গের আক্রমণ ও অন্যান্য বিবিধ রোগ সংক্রমণ এর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। কেপনেস তাঁর একটি বক্তব্যতে বলেছেন আমরা আমাদের মূল লক্ষ্যমাত্রা রাখছি দুটি নীতির উপর ভর করে, একটি হল মাটির ভারসাম্য রক্ষা ও অপরটি হল উদ্ভিদের রোগ নিরাময়। এই পদ্ধতি খাদ্য বা অ-খাদ্য সমস্ত উদ্ভিদের উপর প্রয়োগ করা সম্ভব। ফুলগাছের চাষের ক্ষেত্রেও এই ফসল চাষ করা যায়। মাটির বৃদ্ধি ও সুরক্ষা হলো ৩ থেকে ৫ বছরের একটি প্রক্রিয়া, কিন্তু গাছের পরিচর্যা একটি প্রতিনিয়ত কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়া সারা বৎসরই চালিয়ে যেতে হয়।
জিরো রেসিডিউ ফার্মিং এর ধারণাকে উস্কে দিয়ে তিনি বলেন ভারতের মাটিতে এই পদ্ধতির যথেষ্ট সাফল্যলাভের সম্ভাবনা রয়েছে, কিছু বিশেষ শস্য যেমন তুলা ও উদ্যান পালনের ক্ষেত্রে তো এই পদ্ধতির সাফল্যের সম্ভাবনা সব থেকে বেশী। এই ধরণের পরিচর্যার একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়ে মাটির সংগঠনের উপর, ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেতে বাধ্য তাছাড়া মাটির উপরিভাগ খুবই মসৃণ হয় যা সাধারণত আজকাল খুব বেশী পরিমাণে নাইট্রোজেন সার ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে গেছে, তাছাড়া ভারতীয় কৃষকদের গাফিলতিও অনেকটা দায়ি।
কেপনেস চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেন, নিউট্রিশন ফার্মিং পদ্ধতি এমন একটি নতুন পদ্ধতি যাতে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছে অনেক বেশী গ্রহণযোগ্য হবে, এর প্রয়োগে গাছকে অনেক উন্নত জাতের উদ্ভিদে পরিণত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পদ্ধতির সফল প্রয়োগে মাটির উৎপাদন ক্ষমতা অনেকটাই বাড়ানো সম্ভব। এখনো পর্যন্ত গুজরাটের বিভিন্ন অংশে এই পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটিয়ে এখনো পর্যন্ত সাফল্য লাভ হয়েছে, তাই এই কোম্পানির তরফ থেকে বীজের কোটিং এর ব্যাপারে অনেকটা এই একই রকমের প্রযুক্তির প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
- প্রদীপ পাল
Share your comments