
আমাদের দেশের সংখ্যাগুরু মানুষ দৈনিক পুষ্টি সংগ্রহের জন্য দুধের মত পণ্যের উপর নির্ভরশীল। দুধের মধ্যে আমরা আমাদের প্রয়োজনিয় অন্যতম পুষ্টি উপাদানগুলি যেমন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পাই। কিন্তু বর্তমানে দুধের মধ্যে প্রচুর পরিমান দূষিত পদার্থ যেমন হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক থাকে যা পশুদের দুধ উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োগ করা হয়। আবার অধিক লাভের নেশায় দুধের মধ্যে মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ডিটার্জেন্ট, কস্টিক সোডা, সাদা রং ও অন্যান্য ভেজাল।
পশুদের দুধ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ও চাহিদা অনুযায়ী যোগানের ব্যবস্থা করতে পশুদের ওপর অমানবিক আচরণ ও পশুদের সাথে পণ্যের ন্যায় ব্যবহার সমাজে কুপ্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া ৭০-৮০% মানুষের দুধে উপস্থিত ল্যাক্টোজ সহ্য হয় না আবার পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণের প্রয়োজন থেকে যায়।
বর্তমানে মানুষের বিবিধ চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাজারে এসেছে উদ্ভিদজাত দুধ বা ভেজান দুধ। যা তন্ডুল শস্য, বিভিন্ন বাদাম, শিম্বী জাতীয় শস্য ও অন্যান্য উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন করা হয়। এই পরিপূরক দুধ খুব তাড়াতাড়ি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, বিশেষ করে তাদের যারা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্থ। বর্ধিত চাহিদা, স্বাস্থ্যসচেতনতা ও নিয়ত উদ্ভাবনের জন্য উদ্ভিদজাত দুধ বা ভেজান দুধ বাজারে ঝড় তুলতে বাধ্য।
আরও পড়ুন জলাধারে অপর্যাপ্ত জল, বোরোধান চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা
বেশ কিছু ভেজান দুধ কিছু অনুপম উপাদান সমৃদ্ধ হয়। যেমন – ওট মিল্কে থাকে বিটা গ্লুকাগন যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। আবার সোয়া মিল্কে প্রানিজ দুধের থেকে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। উদ্ভিদজাত দুধের কোম্পানীগুলি এই দুধের সাথে ক্যালসিয়াম যুক্ত করে দুধকে আরো বেশি পুষ্টিকর করে তুলছে গ্রাহকদের সম্পূর্ণ পুষ্টি জোগাতে।
উদ্ভিদজাত দুধগুলির মধ্য সব থেকে জনপ্রিয় দুধ হল সোয়া মিল্ক, এছাড়া আলমন্ড, চাল, ওট ও নারকেলের দুধের ভালোই জনপ্রিয়তা আছে। উদ্ভিদজাত দুধ এখন বেকারি শিল্প যেমন কেক, বিস্কুট তৈরিতে ও পানীয় প্রস্তুক করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
Share your comments