টোল ফ্রি হেল্পলাইন, ভয়েস মেসেজ এবং অডিও কনফারেন্সগুলির মতো রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ইনফরমেশন-এর সার্ভিসগুলি সারা দেশে কৃষকেরা পরামর্শের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন। প্ল্যাটফর্মটি কৃষকদের বিপদ হ্রাস করতে সময়োপযোগী তথ্য এবং গাইডেন্স সরবরাহ করে।
এটি বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত, ইন্দপুর ব্লকের তেতুলিয়া গ্রামের পেশায় কৃষক লক্ষ্মীকান্ত লায়েকের গল্প। তিনি গত কয়েক বছর ধরে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত রয়েছেন। গত বছর খরিফ মৌসুমে তার তিন বিঘা (এক একর) ধানের জমিতে তীব্র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, এই ঘটনায় তিনি খুবই ব্যথিত হয়ে ছিলেন।
লক্ষ্মীকান্ত লায়েক কীটপতঙ্গ আক্রমণ ও গাছের রোগ নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহারের প্রক্রিয়া বা ব্যবহারের পরিমাণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন না। স্থানীয় বাজার থেকে তিনি প্রচলিত পদ্ধতি অনুসারে রাসায়নিক ক্রয় করতেন। ফলস্বরূপ, তিনি কাঙ্ক্ষিত ফল থেকে বঞ্চিত হন এবং গত মরসুমে কীটপতঙ্গের আক্রমণের কারণে তার তিন বিঘা জমির সমস্ত ধান প্রায় নিশ্চিতভাবে নষ্ট হতে চলেছিল।
এই সময়কালে, তিনি একটি প্রোগ্রামের সহায়তার মাধ্যমে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এবং তার এলাকার কৃষকদের সহযোগিতায় রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর অডিও কনফারেন্স সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। তিনি এই অডিও সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন এবং এখানকার সহায়তাকারী ব্যক্তিকে তিনি জানান, তার ধানের পাতায় বাদামি বর্ণের দাগ দেখা যাচ্ছে ও পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করছে। এই লক্ষণ শোনার পরে, কৃষি বিভাগের ব্যক্তি তাকে জানান যে তার ধানের ক্ষেত খায়রা রোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রতি বিঘায় নয় কিলো পটাস ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এছাড়াও, তিনি তাকে এক লিটার জলে এক মিলি প্রপিকোনাজ্ল মিশিয়ে তিন বিঘা জমিতে স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, তিনি নির্ধারিত ওষুধ প্রয়োগ করেছিলেন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তিনি ইতিবাচক ফলাফল পেতে শুরু করেছিলেন। আশাহীন পরিস্থিতি থেকে তিনি তার তিন বিঘা জমিতে ২১ কুইন্টাল ধান উত্পাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। পরে তিনি বাজারে প্রতি কুইন্টাল ১৩৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি করেন এবং মুনাফা অর্জন করেন প্রায় ২০০০০ / - টাকা। সময়মতো এই রোগের চিকিত্সা এবং তার ফসলকে গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচাতে আরএফের দেওয়া সহায়তায় তিনি প্রভূত পরিমাণে সন্তুষ্ট হয়েছেন।
বর্তমানে তিনি নিয়মিত আরএফস টোল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর ব্যবহার করেন ধান এবং অন্যান্য সবজি চাষ সম্পর্কিত পরামর্শের জন্য। এ ছাড়া নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সহযোগিতায় আরএফের মাধ্যমে গত বছর তাঁর জমিতে মাটি পরীক্ষাও করা হয়েছিল।

লক্ষ্মীকান্ত লায়েক জানিয়েছেন যে, এটি সর্বদা লাভের বিষয় নয়, এখান থেকে অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষণীয় অনেক বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়া যায়। তিনি আশা করছেন, আরএফ এর সহায়তার মাধ্যমে আগামী দিনে আরও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তিনি ভালো মানের ফসল সংগ্রহ করবেন। তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণার বিষয়টি ছিল, ঘরে বসে তিনি কৃষিক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানীদের কাছে পরামর্শ পেয়েছিলেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর সহায়তায়।
এখন তিনি তার গ্রাম এবং আশেপাশের গ্রামের কৃষকদের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ সম্পর্কিত প্রশ্নগুলির সমাধানের জন্য আরএফ আইএস প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
তথ্য সূত্র
প্রদীপ পান্ডা
অনুবাদ
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)