পশ্চিমবঙ্গে বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাঁকুড়ার আবহাওয়া সবচেয়ে অনুকূল। সেই সুবাদে সরকারি উদ্যোগে বাঁকুড়ায় তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক বীজ হাব। বাঁকুড়া জেলায় বর্তমানে প্রায় ৮৬ টি বীজ উৎপাদন কোম্পানী রয়েছে। সব মিলিয়ে বছরে টার্ন ওভার প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। জেলায় বীজ হাব গড়ে উঠলে সেখানে প্রচুর পরিমানে উন্নত বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে । তবে এর সাথে প্রয়োজন বীজ সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা। এই রকম হলে বাইরের থেকে আমদানি করা উন্নত মানের বীজের উপর চাষীদের আর নির্ভর করে চাষবাস করতে হবে না। তারা প্রয়োজন মতো বীজ সাধ্যের মধ্যই পেয়ে যাবেন, আর উন্নত বীজ বাইরে রপ্তানি করে মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
রাজ্যে ব্যবহৃত বীজের শতকরা ৬০ শতাংশ বাঁকুড়ায় উৎপন্ন হয়। ধান বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। এবার তৈলবীজ এবং ডালের বীজ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ফসলের বীজ উৎপাদন এবং জেলার বাইরে রপ্তানির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধানের বীজ পরপর তিনবার ব্যবহার করা যায়। ফলে প্রতি তিন বছর অন্তর নতুন বীজের প্রয়োজন হয়। অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর বীজ পাল্টাতে হয়। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রায় ৪০টি ছোট বড় সংস্থা বীজ রপ্তানি করে। তাদের এক ছাতার তলায় এনে হাব গড়া হবে।
প্রসঙ্গত উন্নত মানের বীজ উৎপাদিত হলে ইন্টার ন্যাশনাল সিড সার্টিফিকেশন পাওয়ার পথ খুলে যাবে, আর সেক্ষেত্রে বাইরে বীজ রপ্তানি করে কৃষকরা আরো লাভবান হবেন। তবে এটি একটি বিশাল কর্মকান্ড কারণ এর জন্য প্রচুর পরিকাঠামোর প্রয়োজন, যেমন –
- সিড প্রসেসিং ও কন্ডিশনাল স্টোরেজ কাঠামোর জন্য কমপক্ষে ৩০ একর জমির প্রয়োজন;
- বিভিন্ন ব্লকে ফসল ভিত্তিক ক্লাস্টার করে বীজ উৎপাদন করতে হবে, এর জন্য পর্যাপ্ত জমি প্রয়োজন;
- ব্রিডার সিডের পর্যাপ্ত যোগান রাখতে হবে, এর জন্য কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়গুলি ও কেন্দ্রীয় কৃষি গবেষণা সংস্থাগুলির সহায়তার প্রয়োজন।
রুনা নাথ(runa@krishijagran.com)
Share your comments