পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের বিখ্যাত চা, যেগুলি ভারতের চা ফসলের সিংহভাগ গঠন করে, এ বছরের শুরুর দিকে সেই চা-এর মূল্য সমান থাকলেও দীপাবলির আগে এই শিল্পটির মূল্য বৃদ্ধির আশা করা যায়, কারণ এই সময় চায়ের চাহিদা সাধারণত বেড়ে যায়।
ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বিবেক গোয়েনকা বলেন, “চা শিল্পের জন্য এটি একটি বৈচিত্র্যহীন বছর। পশ্চিমবঙ্গে উত্পাদিত সিটিসি এবং গুঁড়ো চা-এর মূল্য বিগত বছরের মূল্যের সমান, যার অর্থ মূল্যের কোনও গতিবৃদ্ধি নেই, তবে আসাম সিটিসি এবং গুঁড়ো চা-এর মূল্য ২০১৮ সালের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। ”
জুলাই মাসে চা-এর ফলন বছরে ৮.৩% বৃদ্ধি পেয়ে ১৭৬.০৭ মিলিয়ন কেজি হয়েছে, শীর্ষ উত্পাদনশীল রাজ্য আসামের অবদান এতে প্রভূত। রাজ্যটি বিগত বছরের তুলনায় বেশি চা উৎপাদন করেছে, এক বছর আগে উৎপাদিত চা-এর পরিমাণ ছিল ৯৩.৭১ মিলিয়ন কেজি। এবছর এখনও পর্যন্ত ৯৭.০২ মিলিয়ন কেজি চা উত্পাদিত হয়েছে।

টিবোর্ড এখনও পর্যন্ত আগস্টের ফসলের পরিসংখ্যান ঘোষণা করেনি। তবে, রাজ্যগুলি থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে, ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মতানুযায়ী, আগস্টে আসামে চা উৎপাদন ১৭.৯% হ্রাস পেয়েছিল এবং পশ্চিমবঙ্গে এটি ৫.৫% হ্রাস পেয়েছে। বিবেক গোয়েনকা বলেছেন, আগস্ট মাসে গড় উৎপাদন হ্রাস পেয়েছিল ১৪.৮%।
তবে আগস্টে সংগঠিত চা খাত থেকে উৎপাদন কমে যাওয়ার পরেও বাজারে এর মূল্য বৃদ্ধি হয়নি। ২০১৮ থেকে চা-এর কিছু স্টক ছিল এবং জুলাই মাসে প্রয়োজনাতিরিক্ত চা উত্পাদিত হয়।

জুলাই মাসের প্রথম বিক্রির পর থেকে আসাম সিটিসি এবং গুঁড়ো চা-এর মূল্য ২-৩% হ্রাস পেয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে চায়ের রপ্তানি বছরে ৩.৫৮ % হ্রাস পেয়েছে।
গোয়েনকা আরও বলেন যে, উত্পাদন ব্যয় বৃদ্ধি এবং চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে মূল্য স্থবিরতার কারণে এই খাতটি ব্যয়বহুল চাপের মধ্যে পড়েছে। দেশে যে প্রয়োজনাতিরিক্ত চা উত্পাদিত হচ্ছে, তা আরোহণ করে তার ব্যবহার করতে হবে।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থোডক্স চায়ের মূল্য বর্ধিত হচ্ছে। ইরান জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ৩৫ মিলিয়ন কেজি পণ্য ক্রয় করেছে।
গোয়েনকা তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন যে, " অগ্রবর্তী সময়ে অর্থোডক্স চা অধিক উত্পাদন করাই তাদের লক্ষ্য। বর্তমানে সরকারের পক্ষ অর্থোডক্স চায়ের উপর প্রতি কেজি তিন টাকা ভর্তুকি রয়েছে। আমরা সরকারকে আরও অর্থোডক্স চা তৈরির জন্য প্রতি কেজি ২৫ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার জন্য বলেছি। ”
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments