আকন্দ একটি মহৌঔষধি উদ্ভিদ। প্রাচীন কাল থেকেই ভেষজ চিকিৎসালয়ের জন্য় আকন্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এর পাতা গ্রামাঞ্চলের মানুষের প্রাথমিক সেবাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত পাশাপাশি পাতা, ফুল, মূল, রসালো আটা, চূর্ণ ব্যবহার করে ঘরোয়া, কবিরাজি, আয়ুর্বেদিক, ইউনানী, হোমিও চিকিৎসা ও ওষুধ তৈরিতে ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সভ্যতার উষালগ্ন থেকে মানুষের বহুবিধ রোগ মুক্তি বা নিরাময়ে মন্ত্র শক্তির মতো কাজ করতো।
কিন্তু কালের পরিক্রমায় ভেষজ গুরুত্বের অভাবে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আকন্দ। এক সময় গ্রাম গঞ্জের গলিতে গলিতে দেখা যেত আকন্দ গাছ । মেঠো পথের ধারে, সৌখিন প্রিয় মানুষের উঠোন বাড়ির সৌন্দর্য বিন্যাসে এই গাছ ছিল অতুলনীয়। সবজি ক্ষেতে বেড়া দিতে কাজে লাগত এই গাছ ।প্রাকৃতির ইশারায় জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠত অনাদরে। আর গ্রামীণ লোকজন তাদের লোকায়েত জ্ঞানে এ গাছের পাতা ভাঙা-মোচকা, হাড়-জোড়, বাত ব্যাথা, হাঁপানি শ্বাসকষ্ট, একশিরিয়া রোগের চিকিৎসা করত। নতুন প্রজন্ম এ গাছ না চেনা বা বিশদ গুনাগুন সম্পর্কে না জানা বা আস্থা না থাকায় মহামূল্যবান সনাতনী চিকিৎসা ব্যবস্থা হারিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বাজার ছেয়ে গেছে নিম্নমানের পাট বীজে, জেলার পাট চাষিদের জন্য় রইল সতর্কবার্তা
একসময় বয়স্করা ভাঙা-মোচকা, হাড় জোড়, বাত ব্যাথায়, হাত ভাঙ্গা মহাশংকর তেল, কেরোসিন, সরিষা তেল সহনীয় গরম করে মালিশের পর আকন্দ পাতা আগুনে হালকা স্যাক দিয়ে প্রলেপ দিত।
তাতে ব্যথা উপশম হত দ্রুত । এ চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল খরচ সাশ্রয়ী ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এবাং স্বাস্থ্যসম্মত । এখনকার চিকিৎসা ব্যবস্থা আধুনিক হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এর চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটাতে গিয়ে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও কম নয়।তাই এ ভেষজ চিকিৎসা ব্যবস্থা জিয়ে রাখা উচিত।
আরও পড়ুনঃ আর কিছু দিন পরেই ১লা বৈশাখ, মাসের শুরুতে কৃষকদের জন্য় রইল কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য়
Share your comments