ইউনিভার্সিটি অফ সাও পাওলোর গবেষকদলের প্রধান দানি এজেনবার্গ জানিয়েছেন, ‘‘অঙ্গ দাতা মৃত ব্যক্তি হলে গোটা প্রক্রিয়ার ঝুঁকি অনেকটা কম হয়। পাশাপাশি গোটা প্রক্রিয়ার খরচ অনেকটা কমে যায়। কারণ, দাতা মৃত হওয়ায়, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা, তাঁর দীর্ঘ অপারেশন করার ঝক্কি থাকে না। জীবিত দাতার ক্ষেত্রে কাজটা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়।”
চিকিত্সকদের তরফে জানানো হয়েছে, ৩৫ সপ্তাহ ৩ দিন গর্ভধারণের পর সিজারের মাধ্যমে ওই কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়া হয়েছে। জন্মের সময় বাচ্চাটির ওজন ছিল ২ কিলোগ্রাম ৫৫০ গ্রাম।
যে ব্রাজিলীয় মহিলার দেহে ওই গর্ভাশয়টি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল তাঁর বয়স ছিল ৩২ বছর। জন্ম থেকেই তাঁর দেহে গর্ভাশয় ছিল না। দেহের এই খামতিকে চিকিত্সার ভাষায় বলা হয় ‘মেয়ার রকিটান্সকি কাস্টার হাউজার সিনড্রোম’।
তবে ওই ব্রাজিলীয় মহিলার গর্ভাশয় না থাকলেও ডিম্বাশয় ছিল। তাই তাঁর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বানু সংগ্রহ করে ‘আইভিএফ’ বা ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন’ পদ্ধতিতে প্রতিস্থাপিত গর্ভাশয়ে রোপন করা হয়েছিল ভ্রূণ। গর্ভাশয় প্রতিস্থাপনের সাত মাস দশ দিন পর এই ভ্রূণ রোপনের কাজটি হয়েছিল।
এর আগে মৃত মহিলার গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন করে সন্তান জন্ম দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আমেরিকা, চেক প্রজাতন্ত্র ও তুরস্কের চিকিত্সক-গবেষকরা। কিন্তু তাঁরা সে কাজে সাফল্য পাননি। অবশেষে ব্রাজিলের সাও পাওলোর চিকিত্সকদের হাতে ধরা দিল সাফল্য।
এর আগে প্রতিস্থাপিত গর্ভাশয় থেকে সন্তানের জন্ম হয়নি, তা নয়। কিন্তু সেই প্রতিস্থাপিত গর্ভাশয়ের দাতারা ছিলেন জীবিত। জীবিত মহিলার গর্ভাশয় প্রতিস্থাপন করে প্রথম সন্তানের জন্ম হয়েছিল সুইডেনে, ২০১৩ সালে। তখন থেকে মোট ৩৯ বার এই পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের চিকিত্সক-বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সাফল্য পেয়েছেন মাত্র ১১ বার। সেদিক থেকে দেখলে, মৃত মহিলার গর্ভাশয় থেকে সন্তানের জন্ম দেওয়া আধুনিক চিকিত্সা বিদ্যার এক অভূতপূর্ব সাফল্য।
তথ্য সহায়তা - আনন্দবাজার পত্রিকা
- অভিষেক চক্রবর্তী(abhishek@krishijagran.com)
Share your comments