শরীর সুস্থ রাখতে, কড়াইশুঁটি হবে খেতে!

কড়াইশুঁটি, স্বাস্থ্য, সুস্থ, শরীর, খাওয়া দাওয়া, আগাছানাশক

KJ Staff
KJ Staff
matar

সম্প্রতি হওয়া এই গবেষণায় দেখা গেছে কড়াইশুঁটি কাঁচা অবস্থায় হোক কী রান্নায় দিয়ে, যে কানও অবস্থাতেই যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে নানা উপকার মেলে, বিশেষত শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে এই সবজিটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ কড়াইশুঁটির অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন কে, ম্যাঙ্গানিজ, ডায়াটারি ফাইবার, ভিটামিন বি১, কপার, ভিটামিন সি, ফসফরাস, ফলেট, ভিটামিন বি৬, নিয়াসিন, ভিটামিন বি২, জিঙ্ক, প্রোটিন, আয়রন এবং পটাসিয়াম শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন খেল দেখায় যে একাধিক রোগ দূরে পালাতে বাধ্য হয়। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু শারীরিক উপকারও মেলে। যেমন ধরুন -

১. ভাবী মায়েদের জন্য উপকারি: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় বেশি করে ফলেট সমৃদ্ধি খাবার খাওয়া শুরু করলে মা এবং বাচ্চার যেমন শারীরিক উন্নতি ঘটে, তেমনি প্রসবকালে কোনও ধরনের জটিলতা হওয়ার আশঙ্কাও কমে। তাই তো ভাবী মায়েদের নিয়মিত কড়াইশুঁটি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। আসলে এই সবজিটির অন্দরে এত মাত্রায় ফলেট রয়েছে যে তা দেহের অন্দরে এই বিশেষ উপাদানটির ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. শরীরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা কমতে শুরু করে: কড়াইশুঁটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, বি৬ এবং ফলেট, যা রক্তে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বের করে দিতে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। ফলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে গিয়ে নানাবিধ রোগ ঘাড়ে চেপে বসার সম্ভাবনাও আর থাকে না বললেই চলে।

৩. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখে: একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধুরা! আধুনিক স্টাডিতে ইতিমধ্যেই একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে স্টমাক ক্যান্সারের প্রকোপ কমাতে কড়াইশুঁটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই সবজিটিতে উপস্থিত বিশেষ এক ধরনের পলিফেনল এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এক কাপ কড়াইশুঁটিতে কম-বেশি ১০ মিলিগ্রাম পলিফেনল থাকে, যেখানে মাত্র ২ মিলিগ্রাম শরীরে প্রবেশ করলেই স্টামাকে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্যে এসে পৌঁছায়।

৪. অতিরিক্ত মেদ ঝরে যায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কড়াইশুঁটির অন্দরে থাকা ফাইবার, প্রোটিন এবং মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট শরীরের অন্দরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন পুষ্টির ঘাটতি দূর করে, তেমনি এত মাত্রায় পেট ভরিয়ে দেয় যে বারে বারে ক্ষিদে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে। ফলে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়। তাই তো ওজনকে যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, তাহলে প্রতিদিন কাড়াইশুঁটি খেতে ভুলবেন না যেন!

mater

৫. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে: লুটেইন, ক্যারোটেনিন, জিয়া-জেনন্থিন সহ আরও বেশ কিছু উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে কড়াইশুঁটির শরীরে, যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি নানাবিধ চোখের রোগের প্রকোপ হ্রাসেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। টাক মাথায় চুল গজাতে অনেকে নতুন পদ্ধতি নিচ্ছেন। আরও জানুন মহেশের কেমো থেরাপি দরকার ক্যানসার প্রতিরোধে, আপনার সাহায্য প্রয়োজন টাকের রেখায় চুল গজাতে ভারতীয়রা নতুন পদ্ধতি নিয়েছে।

৬. হাড়কে শক্তপোক্ত করে: একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধুরা! রোজের ডায়েটে কড়াইশুঁটিকে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে ভিটামিন কে-এর পরিমাণ এতটা বেড়ে যায় যে হাড়ের শক্তিও বাড়তে শুরু করে। ফলে জয়েন্ট পেন বা আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, ৪০-এর পর থেকে মহিলাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে যেতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ হাড়ের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই কারণেই তো ৩০ পেরতে না পেরতেই প্রতিটি মহিলাকে দিনে কম করে এক কাপ কড়াইশুঁটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

৭. শরীরের বয়স কমে: বয়স বাড়লে শরীর এবং ত্বকের উপর তার প্রভাব পরাটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এমনটা আপনার সঙ্গে নাও ঘটতে পারে, যদি রোজের ডায়েটে কড়াইশুঁটি রাখেন তো? কারণ এই সবজিটির অন্দরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ত্বকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে শরীরকেও বিষ মুক্ত করে। ফলে শরীর এবং ত্বকের বয়স কমতে সময় লাগে না।

৮. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: কড়াইশুঁটিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ মস্তিষ্কের অন্দরে প্রদাহ সৃষ্টি হতে দেয় না। ফলে ব্রেন সেল ড্যামেজ হয়ে অ্যালঝাইমারস বা ঐ জাতীয় কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, সবজিটির অন্দরে থাকা ভিটামিন ই, বি এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ত্বকের বয়স কমাতেও নানাভাবে সাহায্য় করে থাকে।

৯. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: কড়াইশুঁটিতে উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার শরীরে প্রবেশ করার পর পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে একেবারেই সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মেটাবলিজম রেটেরও উন্নতি ঘটে।

১০. কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমে যায়: সকালটা কি আপনার একেবারেই ভাল যায় না? তাহলে বন্ধু কড়াইশুঁটি খাওয়া ছাড়া যে আর কোনও উপায় নেই যে! কারণ এর মধ্যে উপস্থিত ফাইবার, শরীরে প্রবেশ করার পর বর্জ্যের পরিমাণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময়ই লাগে না।

- Sushmita Kundu

Published On: 06 October 2018, 05:44 AM English Summary: Eat Pea

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters