আমাদের পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু ফুল চাষের জন্য উপযুক্ত। প্রভূত পরিমাণে ফুলের চাষ করা হয় এখানে। প্রায় সারা বছর ধরে রাজ্যে গাঁদা, গোলাপ, জারবেরা, অর্কিড ইত্যাদির চাষ হয়। সর্বত্র এই ফুল বিক্রি হয় এবং তা বাইরে রপ্তানি করা হয়। কিন্তু এই বছর লকডাউনের ফলে মন্দির, হোটেল, রেস্তোঁরা, সকল অনুষ্ঠান বন্ধ। এ কারণে কৃষকরা ফুল বিক্রি করতে পারেননি। প্রতিদিন ফুল তোলা হলেও তা বিক্রি করা যায়নি। এতে কৃষকদের যথেষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
এমতাবস্থায় কৃষকদের আর্থিক উন্নতির জন্য কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র (KVK) কৃষকদের রোদে গাঁদা ফুল শুকানোর পরামর্শ দিয়েছেন। যদি আপনি প্রায় ১০০ কেজি চরে ২ থেকে ৩ কেজি ফুলের পাপড়ি মিশ্রণ করেন তবে মুরগির থেকে ভাল ডিমের উত্পাদন পাওয়া যায়। ডিমগুলিতে ক্যারোটিনের পরিমাণ বাড়বে।
লকডাউন –এর সময়কালে, কৃষক এবং পশুপালকরা পশু খাদ্যকে কেন্দ্র করে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যে পোল্ট্রি পালক এবং গবাদি পশু পালকরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আসামের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র খাদ্য রূপে মুরগিদের শুকনো গাঁদা ফুল খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ গাঁদা ফুলের পাপড়িগুলি রোদে শুকিয়ে মুরগির খাদ্য হিসাবে খাওয়ানো যায় এবং কৃষি বৈজ্ঞানিকদের মতে তা যথেষ্ট উপকারী মুরগির জন্যে। এই খাদ্য খাওয়ালে মুরগি ডিমের মধ্যে ক্যারোটিনের পরিমাণ খুব বেশী পাওয়া যায়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে।
গাঁদা ফুলের নিষ্কাশন প্রস্তুতিটি কীভাবে প্রস্তুত করবেন (How to prepare MFE) –
গাঁদা ফুলের পাপড়ি শুষ্ক করে পিষে নিষ্কাশন প্রস্তুত করতে হবে। এই নিষ্কাশন ৯০% ইথানল ব্যবহার করে প্রস্তুত করা হয়।
ফিড ফর্মুলেশন (Feed Formulation)-
পোল্ট্রি ফিড ২৮০০ কিলোক্যালরি কেজি–১ মেটাবলিক এনার্জি (এমই) সরবরাহের জন্য ২০% সিপি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
মুরগির ডিম উত্পাদনের উপর প্রভাব - ডায়েটে এমএফই এর মাত্রা প্রভাবিত (পি <0.05) কোটর্নিক্স, কোটর্নিক্স জাপোনিকা কোয়েলস মুরগির ডিমের উত্পাদনকে প্রভাবিত করে। বেসাল ডায়েটে এমএফই স্তর বাড়িয়ে মুরগির ডিমের গড় উত্পাদন ৭৪.৩৩-৮০.৬৯% বৃদ্ধি করেছে।
শুকনো গাঁদা ফুল অথবা ফুলের নিষ্কাশন মুরগিকে খাদ্য হিসাবে খাওয়ালে শুধু যে পশুখাদ্যের অভাব মিটছে তাই নয়, এই খাদ্যের ফলে মুরগির ডিম উৎপাদনের ক্ষমতাও বাড়ছে এবং ডিমে থাকা প্রোটিনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে একদিকে চাষিকে পশুখাদ্য ক্রয়ও করতে হচ্ছে না, অপরদিকে তার উৎপাদিত ফুলও নষ্ট হচ্ছে না, উপরন্তু প্রাণীর থেকে বেশী পরিমাণে উচ্চ গুণমানের ডিম পাওয়া যাচ্ছে, স্বাভাবিকবভাবেই এই ডিমের মূল্যও কিছুটা বেশী।
আরও পড়ুন - গ্রামের বেকার যুবকরা মুরগী পালন করে আয় করুন অতিরিক্ত (Poultry Farming)
Share your comments