দীর্ঘ জীবন ও যৌবনের আশা করেনা এমন মানুষ কোথাও পাওয়া যাবে না।এই পাওয়ার আশা মেটাতে গিয়ে চোরা শিকারিদের হাতে তক্ষক নামক একটি প্রাণী আমাদের জঙ্গল থেকে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে।তরাই ও ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গলে (বিশেষত বক্সা) তক্ষক নামে এই গিরগিটির দেখা আগে হামেসাই পাওয়া যেত।এমনকি জঙ্গলে বিভিন্ন ঘরের আনাচে কানাচে হটাৎ দেখা পাওয়া কিংবা এর ডাক শোনা যেত মাঝে মাঝেই। কিন্তু এই প্রাণীটির শরীর থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈয়ারী করা তেল "মানুষের দীর্ঘ জীবন ও যৌবন ফিরে পেতে সাহায্য করে এইরকম কথা প্রচলিত আছে এবং সেই জন্য নাকি এই প্রাণীটি চোরাচালনের শিকার এবং বন বিভাগের ও পুলিশের কাছে মাঝে মাঝেই এর চোরাচালানকারীরা ধরা পড়ে।চীন ছাড়াও মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলিতে এর পাচার করা হয়।তবে এটাও সত্যি যে আধুনিক স্যাটেলাইট ক্যামেরা হওয়া সত্বেও শুধুমাত্র তক্ষকই নয় ভারতবর্ষের বনজ সম্পদের একটা বিশাল অংশই এই চোরাচালান এর শিকার!! এটা শুধু চুরি নয় রীতিমতো জোচ্চুরি। দেশের জনগণের কাছে এটা একধরনের চিটিং! যাই হোক এটা অন্য বিষয় সময়ে আলোচনা করা যাবে।
এখন এই তক্ষক সম্পর্কে মানুষের সঠিক ধারণা নেই বললেই চলে। তাই এই সম্পর্কে একটু তথ্য জানালাম: তক্ষক (ইংরেজি: Tokay gecko, বৈজ্ঞানিক নাম:Gekko gecko) গেকোনিডি গোত্রের একটি গিরগিটি প্রজাতি। পিঠের দিক ধূসর, নীলচে-ধূসর বা নীলচে বেগুনি-ধূসর। সারা শরীরে থাকে লাল ও সাদাটে ধূসর ফোঁটা। পিঠের সাদাটে ফোঁটাগুলি পাশাপাশি ৭-৮টি সরু সারিতে বিন্যস্ত। কমবয়সী তক্ষকের লেজে পরপর গাঢ-নীল ও প্রায় সাদা রঙের বলয় রয়েছে। মাথা অপেক্ষাকৃত বড়, নাকের ডগা চোখা ও ভোঁতা। চোখ বড় বড়, মণি ফালি গড়নের। লেজ সামান্য নোয়ানো। দৈর্ঘ্য নাকের ডগা থেকে পা পর্যন্ত ১৭ সেমি এবং লেজও প্রায় ততটা। তক্ষকের ডাক চড়া, স্পষ্ট ও অনেক দূর থেকে শোনা যায়। ডাকের জন্যই এই নাম। কক্কক্ আওয়াজ দিয়ে ডাক শুরু হয়, অতঃপর ‘তক্-ক্কা’ ডাকে কয়েক বার ও স্পষ্টস্বরে। এরা কীটপতঙ্গ, ঘরের টিকটিকি ছোট পাখি ও ছোট সাপ খেয়ে থাকে। ছাদের পাশের ভাঙা ফাঁক-ফোঁকড় বা গর্তে অথবা গাছে বাস করে। ব্যাপক নিধনই বিপন্ন হওয়ার কারণ। অনেকে ভুলক্রমে তক্ষককে বিষাক্ত সরীসৃপ হিসেবে চিহ্নিত করে। দেশী চিকিৎসায় এদের তেল ব্যবহূত হয়। ভারত ও বাংলাদেশসহ মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্পুচিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬০০ প্রজাতির তক্ষকের বাস। বাংলাদেশে প্রায় ২ প্রজাতির তক্ষক দেখা যায়।
- অমরজ্যোতি রায়
Share your comments