ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) -এর মতে খাদ্য সুরক্ষা বলতে খাদ্যে উপস্থিত বিপজ্জনক মাইক্রোবায়োলজিকাল, রাসায়নিক যৌগ উপাদানগুলির অনুপস্থিতি বা গ্রহণযোগ্য স্তরকে বোঝায়, যা খাদ্য গ্রহণকারীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। জাতিসংঘের একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, উত্পাদন থেকে শুরু করে ফলন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সঞ্চয়, বিতরণ, প্রস্তুতকরণ এবং গ্রহণের সমস্ত উপায় পর্যন্ত খাদ্য শৃঙ্খলের প্রতিটি পর্যায়ে খাদ্য সুরক্ষার বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে এবং তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
কেন পালন করা হয় এই দিনটি?
আজ ‘ওয়ার্ল্ড ফুড সেফটি ডে’- ২০২০। দূষিত খাবার ও জলের স্বাস্থ্যের দিকে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রতি বছর ৭ ই জুন বিশ্ব খাদ্য সুরক্ষা দিবস পালিত হয়। খাবারে প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, বিতরণ সঠিক পদ্ধতিতে না হলে তা সরাসরি খাদ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে প্রভাবিত করে। নিরাপদ অনুশীলন বর্তমানে প্রতি বছর আনুমানিক ৬০০ মিলিয়নেরও বেশি ক্ষেত্রে খাদ্যজনিত অসুস্থতার মত ঘটনাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
বিশ্ব খাদ্য সুরক্ষা দিবস ২০২০: থিম -
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এর মতে, 'খাদ্য সুরক্ষা, প্রত্যেকের ব্যবসা' প্রতিপাদ্য কর্মসূচি ভিত্তিক এই অভিযানটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সুরক্ষা সচেতনতাকে উত্সাহিত করবে এবং দেশের বেসরকারী খাত, নাগরিক সমাজ, জাতিসংঘের সংস্থাগুলির প্রতি এবং সাধারণ জনগণকে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাবে।
বৈশ্বিক খাদ্য মানের সাথে সম্মতি, জরুরি প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া সহ কার্যকর নিয়ন্ত্রক খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, পরিষ্কার জল সরবরাহ করা, কৃষিক্ষেত্র ভালো মানের সার প্রয়োগ করা, খাদ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপনার বিষয়টি জোরদার করা - এই উপায়গুলি নাগরিক সমাজে খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন খাদ্য সুরক্ষার বিষয়টি আরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও ভাইরাসটি খাদ্যের মাধ্যমে কতটা সক্রিয় হতে পারে, তার কোনও প্রমাণ নেই। তৎসত্ত্বেও নিরাপদ স্বাস্থ্যকর অনুশীলন জরুরী। গ্লোবাল ফুড স্ট্যান্ডার্ডের সাথে সহমত হয়ে, ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করেছে, যা সাধারণ মানুষ ঘরে বসে অনুশীলন করতে পারেন এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করে সুস্থ থাকতে পারেন।
সতর্কতা -
খাবার তৈরির আগে ২০ সেকেন্ডের জন্য সাবান এবং জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
বাজার থেকে কিনে আনা ফল এবং শাকসব্জী ধুয়ে পরিষ্কার জায়গায় শুকিয়ে নিন।
রান্নার পরে রান্না করা পাত্র শুধু সাবান জলেই নয়, বরং তা ধোয়ার সময় গরম জল ব্যবহার করুন।
কার্টন সমেত ডিম কিনলে সেখান থেকে ডিমগুলি সরিয়ে আলাদা স্থানে রাখবেন।
মাছ, মাংস অথবা অন্য কোন খাবার রেফ্রিজারেটরে রাখলে তা থেকে খাবার বের করে আগে সাধারণ তাপমাত্রায় আসতে দিন। তারপর তা রান্না করবেন।
৩২ ডিগ্রীর উপর তাপমাত্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে খাবার রান্না করুন।
উপসংহার – স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের প্রথম ধাপ হল স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা। এই বিশ্ব খাদ্য সুরক্ষা দিবসে নিজেকে সচেতন করুন এবং বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী বেশ কয়েক মাস এখন বাইরের খাদ্য গ্রহণ না করাই উচিৎ। ৮ ই জুন থেকে রেস্তোঁরাগুলি পুনরায় চালু হতে চলেছে। সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মান এবং অনুশীলনগুলি বজায় রাখা হবে বলে আগেই আশ্বস্ত করছেন গ্রাহকদের তারা। তবে আমাদের নিজেদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
Related Link -
Share your comments