বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত অনেক ধরণের কার্যকরী উপাদান। এই উপাদানগুলি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যায়, ফলে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি চোখে পড়ার মতো বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মনোযোগ বাড়াতেও ব্রাহ্মী বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে, কারণ ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতার উপর মনোযোগ কমা বাড়ার তারতম্য নির্ভর করে। তাই ব্রাহ্মী শাক নিয়মিত খেলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
তবে শুধু শরীরের উপকারই নয়, ব্রাহ্মী চাষ (Bacopa) করে কৃষক লাভবান হতে পারেন। রাজ্যে ব্রাহ্মীর চাষ করে সফল হয়েছেন, এমন একজন কৃষক হলেন হরিয়া সিং।
কৃষকের সফলতার কাহিনী (Success Story) –
এই কৃষক জানিয়েছে, চাষের (Waterhyssop Farming) আগে সাধারণত তিনি প্রধান প্রধান ফসল চাষেই জোর দিয়েছিলেন৷ কিন্তু পরে তিনি ব্রাহ্মী এবং এই জাতীয় গাছ, ফসল চাষের ইতিবাচক দিক সম্পর্কে অবহিত হন৷ শুরুর দিকে তিনি পরীক্ষা করার জন্য এর চাষ করেছিলেন৷ লাভ হলে বড় স্তরে চাষের পরিকল্পনা ছিল৷ বর্তমানে ৪ বিঘা জমির ওপর তিনি ব্রাহ্মীর চাষ করছেন, যার থেকে উপার্জনও করছেন লক্ষাধিক৷
কীভাবে চাষ করবেন ব্রাহ্মী ? সেই সম্পর্কে রইল কিছু তথ্য-
মাটি এবং জলবায়ু –
প্রধানত জলজ এলাকায় অর্থাৎ আদ্র জলাভূমিতে এবং খালে এর চাষ হয়। নিষ্কাশিত মাটিতে স্বাভাবিকভাবেই এই উদ্ভিদগুলি বৃদ্ধি পায়। অম্লীয় প্রকৃতির মাটি এই ব্রাহ্মী চাষের জন্য যথোপযুক্ত। এই উদ্ভিদ উপ-ক্রান্তীয় এবং ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলের অধীনে বৃদ্ধি পায়। ৩৩০-৪০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এবং ৬০-৬৫ শতাংশ আপেক্ষিক আদ্রতা এই উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত।
আরও পড়ুন - কৃষিকাজের পাশে এই প্রজাতির গো-পালন করে আয় করুন অতিরিক্ত
উদ্ভিদটির সম্প্রসারণ –
উর্বর নরম মাটিতে এর সম্প্রসারণ ঘটে। উদ্ভিদটি যাতে দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে, সেজন্য সমগ্র উদ্ভিদটিকে ছোট ছোট অংশে কাটা হয় এবং মাটিতে নিমজ্জিত করা হয়। এক হেক্টর এলাকা রোপণ করার জন্য প্রায় ৬২,৫০০ টি ক্ষুদ্র অংশের প্রয়োজন হয়। শিকড় এবং কিছু পাতা সহযোগে ৫-৬ মি. দৈর্ঘ্যে এবং ১০*১০ সেমি. ব্যাসার্ধে আদ্র মাটিতে প্রতিস্থাপিত করা হয় এই উদ্ভিদটি। উদ্ভিদটি রোপণ করার পরেই শুধুমাত্র সেচ প্রদান করা হয়। সর্বোচ্চ পরিমাণে ফলনের জন্য উদ্ভিদের কাটা অংশগুলিকে জুলাই থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে প্রতিস্থাপন করা উচিৎ।
সার –
ব্রাহ্মী চাষের ক্ষেত্রে জৈব সার প্রয়োগ করলে প্রতি হেক্টরে প্রায় ৫ টন ফার্ম ইয়ার্ড ম্যানিয়োর (এফওয়াইএম) সার দিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে। অজৈব সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে নাইট্রোজেন,ফসফরাস,পটাশিয়াম (NPK) প্রয়োগ করতে হবে।
Share your comments