কলা চাষ করে এক একর জমি থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন কৃষক

১০ একর জমিতে কলা চাষ থেকে প্রভূত ফসল পেয়েছেন, যা বাজারে বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করেছেন। কয়েক বছরে, কলা চাষ তাদের কোটিপতি করেছে। এক একর জমিতে কলা চাষে ড্রিপ ব্যবস্থার জন্য এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়, আর সেখানে প্রতি একরে গড়ে দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। একটি উদ্ভিদ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি ফলন দিতে সক্ষম, বাজারে একর প্রতি কলা ১৫-২০ টাকা লাভে বিক্রয় করতে পারবেন।

KJ Staff
KJ Staff

ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। তবে এখন কৃষিতে এসেছে আধুনিকতা। প্রাচীনকালের মতো কৃষকদের অধিক শ্রম ও ব্যয় জমিতে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। উদ্ভাবনী কৌশল এবং সংস্থানগুলির সহায়তায় খুব স্বল্প খরচে বর্তমানে ফলন বাড়ানো সম্ভবপর হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের করিমপুর-২ ব্লকের কাঠালিয়া গ্রামের শ্রী মৃণাল কান্তি সিকদার এবং এই রাজ্যের বাইরের অন্য আর এক কৃষক সঞ্জীব নয়ার (মধ্য প্রদেশ) তা সত্য বলে দেখিয়েছেন। এনারা দু’জন সফল কৃষক হিসাবে তাদের পরিচয় তৈরি করেছেন।

সঞ্জীব ইউক্যালিপটাস, ডালিম, গোলাপ, লেবু এবং অন্যান্য উদ্ভিদের চাষ করেন। তবে মূলত কলা চাষের জন্যই তিনি সফল কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি ১০ একর জমিতে কলা চাষ থেকে প্রভূত ফসল পেয়েছেন, যা বাজারে বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করেছেন। কয়েক বছরে, কলা চাষ তাদের কোটিপতি করেছে। নিজের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "এক একর জমিতে কলা চাষে ড্রিপ ব্যবস্থার জন্য এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়, আর সেখানে প্রতি একরে গড়ে দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হয়।"

কয়েক বছর আগে প্ল্যান্ট স্থাপন করেন -

তিনি বলেছেন যে, কলার চাষ তাঁর জন্য এক নতুন ধরণের পরীক্ষা ছিল। কারণ এই ক্ষেত্রে তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি ৩ বছর আগে কলা চাষ শুরু করেছিলেন। তারপরেও, অনেকেরই মতামত ছিল যে কেবল গম এবং ধানই লাভ দিতে পারে। তবে আজ তাদের সাফল্য দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও কলা চাষ করতে উত্সাহিত হচ্ছেন।

স্বল্প ব্যয় উচ্চ মুনাফা -

তিনি অন্যান্য কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কলা চাষের জন্য এক একরের জন্য ব্যয় হয় প্রায় ৫০ হাজার এবং ড্রিপ পদ্ধতিতে মোট ব্যয় হয় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। একটি উদ্ভিদ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি ফলন দিতে সক্ষম, বাজারে একর প্রতি কলা ১৫-২০ টাকা লাভে বিক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া একটি উদ্ভিদ থেকে প্রথম তিন বছরে আরও ভাল উত্পাদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, তিনি অন্য কৃষকদের অন্যান্য শস্য চাষের সাথে কলা চাষেরও পরামর্শ দিয়েছেন।

অপর কৃষক পশ্চিমবঙ্গের করিমপুর-২ ব্লকের কাঠালিয়া গ্রামের শ্রী মৃণাল কান্তি সিকদার জানিয়েছেন, তিনি শুধু কলার চাষ করেই প্রায় লাখেরও বেশি মুনাফা অর্জন করেছেন। তবে তিনি কৃষকদের কয়েকটি বিষয় মনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন, কলার গুরুতর কিছু রোগ, যেমন, ঢলে পড়া রোগ, বা ছত্রাকঘটিত পানামা উইল্ট ও ব্যাকটেরিয়া ঘটিত ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট, পাতায় দাগ ও পুড়ে যাওয়া রোগ, লিফ স্পট এবং ভাইরাস ঘটিত রোগ, যেমন বাঞ্চি-টপ, স্ট্রেক ভাইরাস, ব্র্যাকট মোজাইক ভাইরাস এবং ছত্রাক সংক্রমণ দেখলেই আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

তিনি আরও বলেছেন যে, কলার উৎকৃষ্ট গুণমানের জন্য কীটপতঙ্গের আক্রমণ মুক্ত ও রোগ-পোকা মুক্ত স্বাস্থ্যকর চারা রোপণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে চারা সম্পূর্ণ রোগমুক্ত হলেও, লাগানোর পর পরিবেশে রোগ-জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে অথবা সঠিক পদ্ধতিতে পরিচর্যা না করলে রোগ-পোকার সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাই চাষের সময়কালে কৃষকদের যত্নবান হতে হবে এবং সঠিক ভাবে উদ্ভিদটির পর্যাপ্ত খেয়াল রাখতে হবে। এতে তার মতো অন্যান্য কৃষকরাও লাভবান হতে পারবেন।

স্বপ্নম সেন

Published On: 05 May 2020, 09:16 PM English Summary: Farmers are earning up to five lakh rupees from one acre of land by cultivating banana

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters