শৈশব থেকেই কৃষির প্রতি তার ভালোবাসা । ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া শেষ করার পরেও কৃষির প্রতি তাঁর ভালোবাসা কমেনি । এরপর তিনি কৃষি ক্ষেত্রে তার ভবিষ্যৎ তৈরি করেন। এখন জৈব চাষের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে শত শত অপুষ্ট দরিদ্রদের বিনামূল্যে সবজি দিচ্ছেন ।
বিহারের মুজাফফরপুর জেলার ইয়াজুয়ার গ্রামের বাসিন্দা যতেন্দ্রনাথ ঝা, মিলেনিয়াম শহরের মানুষকে জৈবভাবে উৎপাদিত সবজি খাওয়াচ্ছেন এবং শত শত কৃষককে জৈব চাষে উৎসাহিত করছেন।
অর্গানিক গুরুগ্রাম নামে নিজের সংস্থা চালাচ্ছেন যতেন্দ্রনাথ ঝা। এ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সময়ের সাথে সাথে মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ঘটছে। সে সম্পর্কে কৃষকদের জানা উচিৎ । অধিকাংশ রোগের কারন ফসলে রাসায়নিক সার প্রয়োগ । এ কথা মাথায় রেখে কৃষকদের জৈব চাষে উৎসাহিত করা শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ কৃষকদের ফুল চাষ এড়িয়ে চলা উচিৎ,জেনে নিন কেন
মিলেনিয়াম শহরের মানুষ এখন সহজে প্রাকিতিক উপায়ে চাষ করা সবজি পাবে । গুরুগ্রামের অধীনে, ১২ জন কৃষকের একটি দল চারটি গ্রামে ৮০ একর জমিতে জৈব চাষ শুরু করে। কোনো প্রকার রাসায়নিক সার ও ওষুধ ব্যবহার না করেই সবজি চাষ করছেন কৃষকরা। মানুষ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে প্রাকিতিক উপায়ে চাষ করা সবজি কিনতে পারে । তাদের জন্য তাদের মন্ডি ও দোকানে যেতে হবে না । এ মৌসুমে জমিতে পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, আদা, রসুন, পালংশাক, টমেটো, লাউ, কুমড়ো, শসা, ও শাক চাষ হচ্ছে ।
জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত সব্জি রাসায়নিকের চেয়ে বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায়। একইভাবে, এর স্বাদে কিছুটা মিষ্টিতা আছে, যা এটির বিশেষ গুন । যতেন্দ্রনাথ ঝা-এর সংস্থা হিমালয় ফাউন্টেন এখন একটি MSME কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে । বছরে এক থেকে দেড় কোটি টাকা আয় হয় । জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে মানুষকে সচেতন করতে লোকজন তাদের কাছে আসে এবং কম খরচে সবজি চাষের তথ্য দেয়। এখান থেকে কৃষকরা ঠিক করে যে তারা কখনই জমিতে রাসায়নিক সার দেবেন না। আজাদ সিং নামে এক কৃষক জমিতে বীট, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদি সবজি চাষ করছেন। যে জমিতে এসব সবজি চাষ হয়েছে সেখানে এক বছর ধরে রাসায়নিক সার ও সার প্রয়োগ করা হয়নি। এই সবজি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ এদের পুষ্টিগুণও বেশি।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন জৈব সার ব্যবহার করে কম খরচে বেশি আয় করার উপায়
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার যতেন্দ্রনাথ ঝা অর্গানিক গুরুগ্রামের অধীনে রাসায়নিকমুক্ত সবজি চাষের প্রচার শুরু করেছিলেন। প্রথমে তিনি ঘাটা গ্রামের কাছে একটি জমি নিয়ে জৈব চাষ শুরু করেন। এরপর বজরা গ্রামের টিকলি, আকলিমপুর ও বাদশাপুরের ১২ কৃষকের একটি দল সবজি চাষ শুরু করেছে।
কৃষকদের মতে, জৈব সবজি চাষের জন্য জমিতে গোবর সার ও নিমের তেল যোগ করা হয়। এ ছাড়া এখানকার হাউজিং সোসাইটিতে রান্নাঘর থেকে তৈরি কম্পোস্ট ব্যবহার করা হয়।
Share your comments