
ভুবনেশ্বরী আম্মা ৬২ বছর বয়সী এই মহিলা কৃষক জৈব উপায়ে (Organic cultivation) চাষবাস করেন | বয়স বেশি হলেও তার মনোবল ও ইচ্ছা শক্তি বয়সের কাছেও হার মানছে | তিনি খালি পায়ে তার ২৪ একর জমিটির ওপর নির্মিত জৈব খামারে (Organic farm) হেটে বেড়ান, সমস্ত দেখাশোনা করেন | তিনি স্বল্প ধানের চারা প্রথমে জমিতে লাগিয়েছিলেন | তিনি শ্রমিকদের সাথে একসাথে আগাছা পরিষ্কার করেন, আবার একইসাথে মাঠে বসে খাবার ভাগ করে নেন |
এছাড়াও, এই মহামারীর সময়ে তিনি করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে খাবার, ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন | এবং আক্রান্তদের অনেকসময় হাসপাতালেও পৌঁছে দিয়েছেন |কোলায়াকোড়ের বাসিন্দা, ভুবনেশ্বরীর কৃষিক্ষেত্র এবং দাতব্য কাজের প্রতি অনুরাগ তাকে অতিরিক্ত পথ যেতে বাধ্য করেছিল। তিনি যখন হাঁটেন অনেকেই তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তার জুতো কোথায়? তিনি উত্তরে বলেনা জুতো পড়লে তার মনে হয় তিনি নিতান্তই প্রকৃতি থেকে অনেক দূরে আছেন |
তিনি কি কি চাষ করেন (What she cultivates)?
তার ১০ বিঘা জমিতে ধান (Paddy) চাষ হয়, এছাড়া তারা একটি আমের বাগান (Mango)আছে | এছাড়াও, বিভিন্ন ফুল, হলুদ, কাঁঠাল, ছোলা, তিল (Sesame farming) ইত্যাদির চাষাবাদ তিনি করেন | তিনি মুরগী, হাঁস (Poultry farm) এবং দেশী জাতের গরু যেমন ভেচুর, কাসারগোদ কুল্লান এবং গিরেরও লালন পালন করেন।
আরও পড়ুন - Rice Farmers: "রেটুন শস্য" আবাদে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন ভূরুঙ্গামারীর কৃষকরা
ফসলের সার গবাদি পশু থেকে আসে। এছাড়াও, দেড় একর জলাশয়ও রয়েছে যেখানে মাছ লালন করা হয়। পারিবারিক সহায়তা তাকে কাজের শক্তি জোগায় |
ভুবনেশ্বরী আম্মার সেবামূলক কর্ম (Her Social work):
এক বাসিন্দা পশুপালন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডাঃ এন শুধোদানন বলেছেন, ভুবনেশ্বরী অসুস্থ ও অভাবীদের সুবিধার্থে উদারভাবে ব্যয় করেন। প্রতি সপ্তাহে, তিনি মহামারীর সাথে লড়াই করা পরিবার এবং বৃদ্ধাশ্রম বাড়িতে ১০০ টিরও বেশি ত্রাণ কিট এবং খাবার সরবরাহ করেন। অতীতে, এলাকার লোকেরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে তাদের বাড়ির এক কোণে পরিত্যক্ত হত।
এখন, তিনি এই ধরনের ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলিতে নিয়ে যেতে এবং চিকিৎসা অনুশীলনকারীদের সাথে পরামর্শ করে তাদের ওষুধ দিতে সহায়তা করেন |
কিভাবে তিনি কৃষিকাজ শুরু করেন (How she starts agriculture):
তিনি এটি তার স্বামীর সাথে শুরু করেছিলেন | তার স্বামী ভেঙ্কটচলপাঠী ছিলেন কোলাইকোডে সরকারি স্কুলের একজন অবসরপ্রাপ্ত গণিতের শিক্ষক | তাদের দুই সন্তান বাইরের দেশে কাজ করে মা বাবার জন্য সংলগ্ন এলাকার জমি কিনে দিয়েছিলেন |
শুধোদননের মনে আছে, ২ দশক আগে জমিটি বন্য জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। এই দম্পতি প্রথমে ধীরে ধীরে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে জমিটিকে একটি উর্বর জমিতে রূপান্তরিত করেন | সেই সময় জৈব কৃষিকাজের বিশেষ প্রচলন ছিলোনা | কিন্তু তিনি ও তার স্বামী তারাই প্রথমে এই উদ্যোগ নেন | এবং বর্তমানে তিনি জৈব সংরক্ষণ সমিতির সদস্য |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Areca Nut Farming: জেনে নিন বাংলাদেশে কোন জাতের সুপারি গাছ চাষ লাভজনক
Share your comments