আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা মধ্য পাকিস্তান থেকে পশ্চিমবঙ্গের ওড়িশা উপকূল হয়ে, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, অসম হয়ে মণিপুর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আর এই কারণেই রাজ্যে ঢুকছে জলীয় বাষ্প, যা সক্রিয় করে চলেছে মৌসুমি বায়ুকে। তার জেরেই রাজ্যে কিছুদিন যাবৎ চলছে এই বৃষ্টিপাত। তবে আইএমডি-র তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় এখন উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশী।
উত্তরবঙ্গের বাতাসে আজ আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৫ শতাংশ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি। দক্ষিণবঙ্গে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি।
তবে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশী থাকায় দিনের বেলা আকাশ মেঘলা হলেও রাতের আবহাওয়া যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক নয়। আইএমডি-র মতে বিগত কয়েক বছর ধরে জুনে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত হয়েছে, এতে ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের, কারণ কৃষিকাজের সাথে বর্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে এবছর রাজ্যে সঠিক সময়ে বর্ষার অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলেই অভিমত আবহাওয়া দফতরের। বর্ষা আসার পর থেকে যে-ভাবে নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে, কৃষকেরা তার সুফল পেতে পারেন। নিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় নদীতে ইলিশের ঝাঁক ঢোকার আশাও দেখছেন মৎস্যজীবীরা। তাদের মতে, মোহনার কাছে মিষ্টি জলের পরিমাণ বাড়লে ইলিশ বেশী পরিমাণে নদীতে আসে এবং নোনা জল থেকে মিষ্টি জলে প্রবেশেই তার স্বাদ বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
অন্যান্য রাজ্যের আবহাওয়া -
অনুকূল অবস্থার কারণে আগামী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ২৩ শে জুনের মধ্যে দক্ষিণ পশ্চিম বর্ষা মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের কিছু অংশে এবং হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি –তে এবং পাঞ্জাবের বেশীরভাগ অংশে ২৪ -২৫ শে জুনের মধ্যে অনুকূল অবস্থার কারণে আরও অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি) তার সকালের প্রকাশিত রিপোর্টে। বর্ষার প্রভাবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি স্থানে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়ার বিশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ভারী থেকে অতি ভারী বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাত উত্তর-পূর্ব ভারতে আগামী ৫ দিনের জন্য এবং পূর্ব এবং পার্শ্ববর্তী মধ্য ভারতে পরবর্তী ২-৩ দিনের জন্য অব্যাহত থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অগ্রসর হতে চলেছে এই স্থানগুলিতে -
২৩ শে জুনের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের আরও কিছু অংশ এবং উত্তরাখণ্ডের কিছু অংশে দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষা আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য পরিস্থিতি অনুকূল হয়ে উঠছে; ২৪ ও ২৫ শে জুনের মধ্যে সমগ্র পশ্চিম হিমালয়ান অঞ্চল, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় ও দিল্লি, পাঞ্জাবের বেশিরভাগ অংশ, আরব সাগরের অবশিষ্ট অংশ, গুজরাট রাজ্য, মধ্য প্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের কিছু অংশে
গতকাল এই স্থানগুলিতে পরিলক্ষিত হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত (Heavy rainfall) -
পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, লাক্ষাদ্বীপ এবং কেরালা ও মাহে জুড়ে বেশিরভাগ জায়গায়; কোঙ্কন ও গোয়া, পূর্ব মধ্য প্রদেশ, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ, উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশ এবং ইন্নাম এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অনেক জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং উপকূলীয় কর্ণাটকের কয়েকটি স্থানে এবং রাজস্থান, পশ্চিম মধ্য প্রদেশ, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, গুজরাট অঞ্চল, মধ্য মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় ও দিল্লি, রায়লসিমা এবং দক্ষিণ অভ্যন্তর কর্ণাটকের বিচ্ছিন্ন জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা গেছে।
Related link - #বর্ষা ২০২০, একদিকে তাপপ্রবাহের সতর্কতা, অন্যদিকে উত্তরে বর্ষার আগমনে রাজ্যের কৃষকদের মনে খুশির জোয়ার
#বর্ষা ২০২০, খরা প্রবণ অঞ্চলগুলিতে অপর্যাপ্ত বৃষ্টি মোকাবেলায় শীর্ষ পাঁচটি পদক্ষেপ
বর্ষায় এইসব ঔষধি গুন (Medicinal Crops ) সম্পন্ন গাছের চাষ করুন, হতে পারে প্রচুর লাভ