(Coconut disease management) নারকেলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ করুন বিশেষ সহজ পদ্ধতিতে

যে সব রাজ্যে কম-বেশি নারকেল চাষ হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে আন্দামান, লাক্ষাদ্বীপ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি। গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল হওয়ার দরুণ আমাদের রাজ্যে বাণিজ্যিকভাবে নারকেল চাষ যথেষ্ট লাভজনক।

KJ Staff
KJ Staff
Coconut pest control
Coconut tree (Image Credit - Google)

যে সব রাজ্যে কম-বেশি নারকেল চাষ হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে আন্দামান, লাক্ষাদ্বীপ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ইত্যাদি। গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল হওয়ার দরুণ আমাদের রাজ্যে বাণিজ্যিকভাবে নারকেল চাষ যথেষ্ট লাভজনক।

আমাদের রাজ্যে যদিও অপরিপক্ক নারকেল অর্থাৎ ডাবের ব্যবহার সব থেকে বেশি। রোগীর পথ্য হিসাবে অন্যান্য পানীয়র পাশাপাশি ডাবের জলের ব্যবহার প্রচলিত, বিশেষত গ্রীষ্মের তপ্ত দিনগুলিতে। বাণিজ্যিকভাবে আমাদের দেশের যে কয়টি রাজ্যে নারকেলের ব্যাপক চাষ হয় সেখানে ভোজ্য তেল (৫০-৭০ শতাংশ) নিষ্কাশন ছাড়াও এর খোলা ও ছোবড়াটিকে দড়ি, ম্যাট্রেস, বিভিন্ন হস্তশিল্প ও অন্যান্য শিল্পে ব্যবহার করা হয়। নারকেলের তেল মার্জারিন, ঘি, সাবান উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও, নারিকেলের খইল গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। নারকেল গাছের পাতা মাদুর, গৃহের আচ্ছাদন, ঝুড়ি, পর্দা ও ঝাঁটা তৈরিতে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা হয়। মূল গাছটি কাঠ ও জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং নারকেলের জনপ্রিয়তা শুধু খাদ্য হিসাবেই নয় তন্তু এবং তৈলবীজ হিসাবেও, আর ঠিক সে কারণেই কল্পবৃক্ষ হিসাবে এর নামকরণও সার্থক।

আমাদের রাজ্যে বাণিজ্যিকভাবে নারকেল চাষ যথেষ্ট লাভজনক। যদিও আমাদের দেশে ফসলের উৎপাদন ৫০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় রোগ-পোকার কারণে। রোগ পোকানিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ফলন অনেক বৃদ্ধি পাবে, এতে কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে।

নারকেল চাষে রোগ নিয়ন্ত্রণ (Disease control) -

১) ডগা পচা বা কুঁড়ি পচা- গাছের ডগার দু-একটি পাতা প্রথমে ধূসর বাদামি থেকে বাদামি ও পরে হালকা বাদামি হয়ে ঝিমিয়ে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত অংশ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত আঠালো রস বের হয়। প্রতিকারস্বরূপ আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার করে ১০% বোর্দো বা ব্লাইটক্স এর প্রলেপ দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

২) ফল ঝরা- ছত্রাকঘটিত এই রোগে ছোট বড় ফল সকল পচে ঝরে পড়ে। সাধারণত বর্ষার আগে ও পরে এই রোগ বেশি হয়। সেক্ষেত্রে বর্ষার আগে ও পরে কাঁদিতে ০.৫% কপার অক্সি-ক্লোরাইড বা ০.৫% বোর্দো মিশ্রণ বা ০.১% কার্বেন্ডাজিম স্প্রে করতে হবে। শিকড়ের সাহায্যে ছত্রাকনাশক ট্রাইডেমর্ফ এর জলীয় দ্রবণ ৫ মিলি প্রতি ১০০ মিলি জলে মিশিয়ে দিতে হবে।

৩) থাঞ্জাভুর উইল্ট বা পাতা ঝিমানো রোগ- ছত্রাকঘটিত এই রোগে আক্রান্ত শিকড় লম্বা হয়ে যায়। পাতা শুকিয়ে হলদে থেকে বাদামী বর্ণ ধারণ করে, পরিশেষে শুকিয়ে গাছকে বেষ্টন করে নীচের দিকে ঝুলে পড়ে। কান্ডের গোড়ায় বৈশিষ্ট্যমূলক বাদামী রঙের দাগ হয় এবং বাদামী রঙের রস/ তরল নির্গত হয়। গাছের ফল ঝরে পড়ে এবং ফলের সংখ্যা কমে যায়, পরিশেষে গাছ মারা যায়।  প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না গেলে এই রোগের নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য। শিকড়ের সাহায্যে ছত্রাকনাশক ট্রাইডেমর্ফ এর জলীয় দ্রবণ ৫ মিলি প্রতি ১০০ মিলি জলে মিশিয়ে ১৫দিন অন্তর ৩ বার দিতে হবে।

নারকেল চাষে রোগ নিয়ন্ত্রণ (Disease control) -

১) ডগা পচা বা কুঁড়ি পচা- গাছের ডগার দু-একটি পাতা প্রথমে ধূসর বাদামি থেকে বাদামি ও পরে হালকা বাদামি হয়ে ঝিমিয়ে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত অংশ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত আঠালো রস বের হয়। প্রতিকারস্বরূপ আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার করে ১০% বোর্দো বা ব্লাইটক্স এর প্রলেপ দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

২) ফল ঝরা- ছত্রাকঘটিত এই রোগে ছোট বড় ফল সকল পচে ঝরে পড়ে। সাধারণত বর্ষার আগে ও পরে এই রোগ বেশি হয়। সেক্ষেত্রে বর্ষার আগে ও পরে কাঁদিতে ০.৫% কপার অক্সি-ক্লোরাইড বা ০.৫% বোর্দো মিশ্রণ বা ০.১% কার্বেন্ডাজিম স্প্রে করতে হবে। শিকড়ের সাহায্যে ছত্রাকনাশক ট্রাইডেমর্ফ এর জলীয় দ্রবণ ৫ মিলি প্রতি ১০০ মিলি জলে মিশিয়ে দিতে হবে।

৩) থাঞ্জাভুর উইল্ট বা পাতা ঝিমানো রোগ- ছত্রাকঘটিত এই রোগে আক্রান্ত শিকড় লম্বা হয়ে যায়। পাতা শুকিয়ে হলদে থেকে বাদামী বর্ণ ধারণ করে, পরিশেষে শুকিয়ে গাছকে বেষ্টন করে নীচের দিকে ঝুলে পড়ে। কান্ডের গোড়ায় বৈশিষ্ট্যমূলক বাদামী রঙের দাগ হয় এবং বাদামী রঙের রস/ তরল নির্গত হয়। গাছের ফল ঝরে পড়ে এবং ফলের সংখ্যা কমে যায়, পরিশেষে গাছ মারা যায়।  প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না গেলে এই রোগের নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য। শিকড়ের সাহায্যে ছত্রাকনাশক ট্রাইডেমর্ফ এর জলীয় দ্রবণ ৫ মিলি প্রতি ১০০ মিলি জলে মিশিয়ে ১৫দিন অন্তর ৩ বার দিতে হবে।

কীট নিয়ন্ত্রণ (Pest control) -

১) গন্ডারে পোকা- এই পোকা গাছের নরম অংশে গর্ত করে নালি তৈরি করে ও এই নালিতে লুকিয়ে থাকে। কচি পাতা ও ফুল চিবিয়ে খায়, আক্রান্ত গাছের নতুন পাতা কাটা কাটা দেখায়। নালি খুঁজে তারের হুক ঢুকিয়ে পোকাকে মারতে হবে। কেরোসিন ভেজানো তুলো দিয়ে নালি বন্ধ করে দিতে হবে। নিকটবর্তী স্থানে গোবরের গাদা রাখা চলবে না।

২) ইরিওফাইড মাকড়- নারকেল চাষের ক্ষেত্রে এই মাকড়ের আক্রমণ এক মারাত্মক সমস্যা যার ফলে ১০-৮০% পর্যন্ত উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। দলবদ্ধভাবে বোঁটার নীচে সবুজ কচি অংশের রস চুষে খায় ফলস্বরূপ কচি ডাবের বোঁটার নীচে ত্রিকোণ আকারের সাদা দাগ দেখা যায়। বাড়ন্ত ডাবের উপর লম্বা লম্বা তামাটে বা বাদামি ফাটল দেখা যায়। প্রতিকারস্বরূপ নারকেলের বাগান পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিকড়ের সাহায্যে ১০ মিলি এজাদিরাকটিন + ১০ মিলি জল অথবা ১৫ মিলি মনোক্রটোফস/ কার্বোসালফান +১৫ মিলি জলের মিশ্রণ বছরে তিনবার প্রয়োগ করতে হবে।

৩) লাল কাড়িপোকা- পূর্ণ বয়স্ক পোকা ও এর শূককীট গাছের কান্ডের ভিতরের নরম অংশ কুড়ে কুড়ে খায়। কান্ডের চারদিকে ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যায়, অনেক সময় সেই ছিদ্র দিয়ে পোকার বিষ্ঠা ও কাঠের গুঁড়া বের হয়ে আসে। গাছের ডগার নীচ থেকে পাতাগুলো ঝুলে পড়ে এবং আস্তে আস্তে গাছ মারা যায়। গাছের কাণ্ডে কোনো ক্ষত হলে সেখানে পরিষ্কার করে বোর্দু লেই দিতে হবে, ক্ষত বড় হলে সেখানে সিমেন্ট ও বালি দিয়ে প্লাস্টার করে দিতে হবে। ১০ মিলি মনোক্রটোফস + ১০ মিলি জলের মিশ্রণ গাছের ৪-৫ দিক থেকে শিকড়ের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হবে।

সাদা মাছি নিয়ন্ত্রণ কৌশল:  

১. যেসব পাতায় কালো ছোপ বা ‘Black Sooty Mould’ রয়েছে, সেখানে ১% স্টার্চের দ্রবণ স্প্রে করুন। স্টার্চ শুকিয়ে গেলে তা পাঁপড়ের মত কালো ছোপ গুলি সমেত উঠে আসবে।  

২. বাগানে প্রতি নারিকেল গাছে হলুদ রঙের আঠালো ফাঁদ/Sticker ব্যবহার করুন। যেকোনো নিকটবর্তী সার-কীটনাশকের দোকানে এটি পাওয়া যায়।  

৩. বাগানে বন্ধু পোকা/natural predator নিয়ে আসুন।  

৪. অযাচিত ভাবে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করুন। প্রকোপ খুব বেশি হলে পাতায় এবং গাছের কাণ্ডে ০.৫% নিম তেলের মিশ্রণ স্প্রে করতে পারেন।  

আরও পড়ুন - মাছের ক্ষত রোগ কীভাবে পরিচর্যা করবেন

৫. যেহেতু, এটি নতুন ধরনের একটি কীট, তাই কোনভাবেই একই কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। একই রাসায়নিক বারংবার ব্যবহার করলে এরা সহজেই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। তার ফলে পরবর্তীকালে তাদের নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। যদি, নিম তেল প্রয়োগে একান্তই সুফল না পাওয়া যায়, তবে এই নিম্নলিখিত, রাসায়নিকের মিশ্রণ যেমন,  Acephate ৫০ + Imidacloprid ১.৮ SP (১ মিলিলিটার/লিটার জলে), Buprofezin ১৫ + Acephate ৩৫ WP (১ মিলিলিটার/ লিটার জলে) অথবা Thiamethoxam ১২.৬ + Lambda cyhalothrin ৯.৫ ZC (০.৫ মিলিলিটার/ লিটার জলে) আঠা সহযোগে ব্যবহার করতে পারেন। 

আরও পড়ুন - কার্প জাতীয় মাছের কম্পোজিট ফার্মিং এ সরপুঁটি মাছের চাষে বাড়তি লাভ

Published On: 20 May 2021, 09:52 AM English Summary: Control coconut disease pests in a very simple way

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters