রঙিন ক্যপসিকাম চাষ সর্বদা লাভজনক

চাল কিংবা শমের পরেই পরিমানগত ও পুষ্টির দিক থেকে স্থান রয়েছে সব্জির রুচি, পুষ্টি ও ....

Saikat Majumder
Saikat Majumder

চাল কিংবা শমের পরেই পরিমানগত ও পুষ্টির দিক থেকে স্থান রয়েছে সব্জির রুচি, পুষ্টি ও ভিন্নতার দরুন সবজির প্রজাতিগত প্রকারভেদ অসীম। কৃষিবিজ্ঞানে সংকরায়ন শাখার অভাবনীয় উন্নতির ফলে প্রয়োজন ভিত্তিক নতুন প্রজাতির উদ্ভাবনের সমস্যা সুর হয়েছে, তাই আঞ্চলিক জলবায়ু ও রুচিভিত্তিক নতুন নতুন প্রজাতি উদ্ভাবনের কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত লয়ে। সবজির ফলন বাড়াতে রোগ পোকার অনাক্রম্য প্রজাতি তৈরীর গুরুত্ব সবজি উৎপাদক ও কৃষি প্রজনন বিজ্ঞানী উভয়েই অনুভব করেতে পেরেছেন। তাই আজকাল রোগ প্রতিরোধক্ষম প্রজাতির চাহিদা বাড়ায় অসংখ্য কৃষিবিজ্ঞানী একাঙ্গে যুক্ত থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন।

ক্যপসিকাম বা সিমলা মরিচ একটি অতিসুন্দর সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি ও মশলা। উৎসবের মরসুমে শুধু নয় সারা বছরই এর কদর ও দাম থাকে অতি উচ্চ। পুষ্টিগুণে ভরপুর তাজা স্বাদের এই সিমলা লম্বার চাহিদা আকাশছোঁয়া। স্বাস্থ্য সচেতন আধুনিক মনস্ক ক্রেতারা বেশী দাম থাকলেও এই সবজি কিনতে পিছপা হননা, অসময়ের মরসুমে ভারতের জন্য রাজ্য থেকেও ক্যাপসিকাম আমদানি করা হয়ে থাকে আমাদের এই রাজ্যে।

আরও পড়ুনঃআতাফল এটি চাষ করে আপনিও হতে পারেন ধনী!

আর্ন্তজাতিক সার্বিক পুষ্টির মাত্রামানে এই রঙিন ক্যাপসিকাম পাঁচতারার মান্যতাপ্রাপ্ত রঙিন ক্যপসিকাম যথেষ্ট ভিটামিন সি আর অন্যদিকে জিঙ্ক সমৃদ্ধ, যা মানব দেহের সুষ্ঠু প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়ক। রঙিন এই সবজিটির ঝুলিতে আরো অনেক উপকারিতার রসদ আছে। এটি খেলে ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক থাকে বলে ডাকার বাবুরা মনে করেন।

চাষের সময়

লঙ্কার মতই সিমলা মরিচ বা ক্যাপসিকাম বীজ থেকে চারাতলায় চারা তৈরী করে মূলজমিতে রোয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের বেশীরভাগ জেলায় আশ্বিন মাস থেকে কার্তিক মাস অবধি বীজ বোনা চলবে। আর এক মাস বা ১ মাস ১০ দিনের চারা মূল জমিতে খোয়াতে হবে। পরবর্তী ৪-৫ মাস পর্যন্ত আবাদ রাখা যায়। যে সব অঞ্চলে হালকা শীত চৈত্র মাসের প্রথমে ও কিছুটা থাকে, সেখানে ছায়া বোয়ার পর পাঁচমাস সাড়ে পাঁচমাস অবধি ফসল রাখা ও ফল বাজারজাত করা চলবে। পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যে পার্বত্য অঞ্চলে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বীজ বুনে পরবর্তী বৈশাখ থেকে শ্রাবনের প্রথমার্ধ অবধি আবার ভাদ্র মাসে বীজ বুনে অহায়নের প্রথমার্ধ অবধি রঙিন ক্যপসিকামের আবাদ করা যাবে। সমতলের ক্ষেত্রে শেষ-নেট হাউসের আচ্ছাদনের মধ্যে অসময়ে অনায়াসেই রঙিন উঁচু নামের এই সবজি থেকে চাষ করে বাজার জাত করা চলে।

বীজের হার

উন্নত অথচ হাইব্রিড এরকম জাতগুলির ক্ষেত্রে বিঘাপ্রতি ৫০ গ্রাম, আর হাইব্রিড জাতের ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ গ্রাম বীজই একবিঘা চাষের পক্ষে যথেষ্ট।

চারা লাগানোর দূরত্ব

রঙিন ক্যপসিকামকে ভালোভাবে বাড়বৃদ্ধির সুযোগ দিতে হবে। ৬০ সেমি X ৪৫ সেমি বা ২ ফুট × ১.৫ ফুট দুরত্বে যথাক্রমে সারি ও চারার মধ্যে ব্যবধান রাখতে হবে।

চারা রোয়া

বিকালের দিকে চারা রোয়া সবথেকে ভালো, এতে রাতের শিশিরে চারা চট করে দাঁড়িয়ে যায়। চারা রোয়ার আগে চারার শিকড় থেকে মাটি করিয়ে, শিকড় পরিষ্কার জলে ধুয়ে ইমিডাক্লোপ্রিতা ৭০% .. ২थाম প্রতি ১০ লিটার জলেগুলে তাতে শিকড় ২০-২৫ মিনিট ডুবিয়ে রোয়া করলে, পরবর্তী বেশ কিছুদিন শোষক পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সাধারনভাবে ১২-১৪ দিনের ব্যাবধানে সেচ দেওয়া হয়। সবথেকে আদর্শ হল ড্রিপ সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে জল দেওয়া। চারা বোয়ার ২০-২৫ দিনের মধ্যে একবার ও ৪০-৪৫ দিনের মাথায় আরেকবার হাত নিড়ানি দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ একটি গাছে ৩০০ প্রজাতির আম ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ম্যাঙ্গোম্যান

ফসল তোলা বিপনন

চারা বসানোর পর দুমাস বা ফুল আসার একমাস পর থেকে সবুজ ক্যপসিকাম তোলার উপযুক্ত হয়। রঙিন জাতের ক্ষেত্রে আরো একহন্তা বা তার কম দিন রাখলে, যখন রঙে পরিবর্তন আসে তখনই ফল তুলতে হবে। ফলকে সরাসরি না টেনে, মোচড় দিয়ে তুললে গাছের ক্ষতি হয় না। এটি যেহেতু যথেষ্ট দামি ফল তাই ফসল তোলা ও পরিবহনের সময় যত্নবান হয়ে এ কাজ করতে হবে। ক্যপসিকাম ফ্রায়েড রাইস তৈরীতে অপরিহার্য্য অন্যান্য রিচ খাবার তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। উৎসব মরসুমে এর দাম কেজিতে ১৬০-২০০ টাকা পর্যন্ত উঠে।

ফলন

বর্তমানে হাইব্রিড জাতগুলি যথেষ্ট উচ্চফলন ক্ষমতা সম্পন্ন আর এক্ষেত্রে বিঘা প্রতি সহজেই ২.৫-৩.৫ টন ফলন পাওয়া অসম্ভব নয়। উন্নত জাতগুলি হল আম্ব্রেলা, স্বর্ণ, বি.এস.এস ২২, বিধান ক্যাপসিকাম গোল্ড। লানজাত গুলি হল নাতাশা, আশা এছাড়া অন্য জাত গুলি হল, ভারত, ভিসেছেন, বুলগোল, আর্লি বাউন্টি, সাটন গ্রাম জায়ান্ট, সুইট পাস, ওয়াকাস ইত্যাদি।

এটি ভালোভাবে চাষ করতে পারলে কৃষকরা খরচ বাদ দিয়েও বিষায় লক্ষাধিক টাকা মুনাফা পেতে কোন বাধা হবেনা বলেই কৃষিবিদরা মনে করছেন।

Published On: 22 July 2022, 05:26 PM English Summary: Cultivation of colorful capsicum is always profitable

Like this article?

Hey! I am Saikat Majumder. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters