গোটা বিশ্বের মধ্যে ধান চাষের দিক থেকে ভারত প্রথম থেকেই এক অন্যতম স্থানে নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছে। ধান চাষের দিক থেকে ভারতবর্ষ এশিয়ার অন্যান্য দেশের থেকে অনেকাংশে এগিয়ে। নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক কৌশল অবলম্বন করে, দেশ জুড়ে ধানের বিভিন্ন জাতের উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ধানের উৎপাদনশীলতায় বিভিন্ন জাতের এই নয়া উদ্ভাবন ভীষণ ভাবে কাজে লাগছে। ডি আর আর ধান ৪৪ হল এমনই এক উচ্চ প্রজাতির ধান যা কম বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে খুব সহজেই চাষ করা যেতে পারে।
ডি আর আর ৪৪ ধানের উদ্ভাবন (Innovation of DRR 44)
এই সময়ে দাঁড়িয়ে ধানের উন্নত ফলনশীল প্রজাতির মধ্যে ডি আর আর ধান ৪৪ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অল্প জলেই এই ধানের চাষ করা সম্ভব। এই বিশেষ প্রজাতির ধান খরা সহনশীল এবং উচ্চফলনশীল। এছাড়াও এই বিশেষ প্রজাতির ধান আগাছার অতিরিক্ত উৎপাতও সহ্য করে নিতে পারে। ধানের এই বিশেষ জাত ২০১৪ সাল নাগাদ বাজারে আসে। উত্তরাখন্ড, হরিয়ানা, বিহারের মতন জায়গায় এই ধানের ফলন খুবই ভালো হয়। অল্প বিনিয়োগেই এই ধানের চাষ ভালো হয় বলে, চাষিদের কাছে এই জাতের ধান খুবই প্রিয়।
এই জাতের ধান চাষের উপযুক্ত অঞ্চল (Suitable cultivation area of DRR 44)
খরা সহনশীল এই বিশেষ প্রজাতির ধানের ফলন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়া নিচু অঞ্চলে ভালো হয় না। হায়দরাবাদের রাজেন্দ্রনগরে ইন্ডিয়ান ইন্সিটিউট অফ রাইস রিসার্চ সেন্টারে ডি আর আর ধান ৪৪-এর উন্নতিকরণ হয়েছে। অল্প পরিমাণে জলে এই চাষ করা গেলেও, সেচ ব্যবস্থা যেখানে ভালো সেখানেও এই বিশেষ প্রজাতির ধানের ফলন ভালো হয়।
দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় এই জাতের ধান চাষ হয়। তার মধ্যে উত্তরাখন্ড, হরিয়ানা এবং বিহারে এই ধানের ফলন খুবই ভালো। এই ধানের প্রজাতির নাম অঞ্চলভেদে বদলেও গেছে।
পোকামাকড় ও রোগবালাই (Pest control)
এই বিশেষ প্ৰজাতির ধানে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, উচ্চফলনশীল এই ধান অল্প জলে চাষ করার সুবিধা ছাড়াও, এই ধান পোকামাকড় অথবা বিভিন্ন রোগ বালাই থেকেও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। ব্যাকটেরিয়াল লিফ হপার অথবা প্ল্যান্ট হপার পোকারাও এই ধানের তেমন ক্ষতি করতে পারে না। খরাপ্রবণ অন্ঞ্চলের জন্য আদর্শ এই ধানের জাত পুষ্টিগত দিক থেকেও অন্যান্য ধানের থেকে অনেকটা এগিয়ে।
আরও পড়ুন: Dwarf Cow Rani: পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম গরু "রানী"
দেশের ধান চাষিরাও এই বিশেষ জাতের ধান ফলিয়ে অত্যন্ত খুশি। ২০১৬ সালে তেলেঙ্গানার ৯ জন চাষি মিলে পাঁচ হেক্টর জমি জুড়ে ডি আর আর ধান ফলিয়েছিলেন। এই চাষে ফলন হয়েছিল মারাত্মক। চাষিদের ঘরে সেইসময় এই ধান বপন করে লক্ষ্মী উপচে পড়েছিল।
ডি আর আর ধান ৪৪-এর দিনকে দিন চাষের চাহিদা বেড়েই চলছে। গত মরসুমগুলিতেও এই ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে পরবর্তীতেও এই ধানের চাষ চাষিদের নিরাশ করবে না।
আরও পড়ুন: WB Budget 2021: রাজ্যে কোভিড ও স্বাস্থ্যসাথী খাতে বাজেট বরাদ্দ
Share your comments