কৃষিজাগরন ডেস্কঃ মাশরুম চাষের জন্য সর্বপ্রথমে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্য সম্মত উপায় অবলম্বন করা উচিৎ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমান স্বাস্থ্য সম্মত পরিচ্ছন্নতা মেনে না চলার দরুন মাশরুম চাষে বিভিন্ন প্রকার অসুবিধা দেখা যায়। তাই আমাদের নিম্নে উল্লেখিত বিষয়গুলির উপর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
১। মাশরুম তৈরীর ঘরকে পরিষ্কার করে ধুয়ে চুন দিয়ে রং করে নিতে হবে। মেঝেতে সাদা চুন জল দিয়ে মুছে নিতে হবে।
২। ঘরের চারপাশ যাতে কোন ড্রেন এবং আগাছা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা ড্রেন এবং আগাছায় ক্ষতিকারক কীট-পতঙ্গ থাকতে পারে মাশরুম চাষের পক্ষে ক্ষতিকারক।
৩। ঘরের প্রবেশ পথে একটি গামলাতে জলের সাথে ২% ফরমালিন মিশিয়ে রাখতে হবে। যাতে জুতো অথবা পা ভিজিয়ে ভেতরে ঢুকতে হবে। এতে রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যাবে।
৪। মাশরুম চাষের সাথে যুক্ত লোকেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতে হবে।
আরও পড়ুনঃ পোয়াল মাশরুম চাষ পদ্ধতি
৫। অব্যবহৃত খড় যাতে ঘরের চারদিকে না পড়ে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৬। যদি কোন মাশরুম বেড রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সেটিকে দূরে কোন যায়গায় মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
৭। একবার মাশরুম চাষ করার পর আবার নতুন করে চাষ শুরু করার আগে ঘরকে পরিস্কার করে ধুয়ে চুন দিয়ে হোয়াট ওয়াস করার পর ফরমালিন দ্রবন দিয়ে ঘরকে রোগ মুক্ত করতে হবে।
৮। মাশরুম চাষে ব্যবহৃত প্রাস্টিকের ট্রে প্রতিবার চাষের আগে ধুয়ে ২% ফরমালিন দ্রবনে ডুবিয়ে রোগ মুক্ত করতে হবে।
৯। মাশরুম চাষের জন্য ব্যবহৃত এবং উদ্বৃত্ত খড় দূরে ফেলে দিতে হবে। ঘর অপরিস্কার রাখা চলবে না।
১০। মাশরুমের ভাঙ্গা অংশ কোনভাবেই যেন মাশরুমের ঘরে পড়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মাশরুমের রোগ জীবানু ও তার প্রতিকার
১১। মাশরুম চাষের জন্য পরিস্কার খন্ড ব্যবহার রতে হবে। খড়ের ড্রাম (সিলিন্ডার) তৈরীর সময় খড় যত শক্ত করে করে বাঁধা হবে, মাশরুমের বৃদ্ধি তত ভালো হবে ।
১২। অতিরিক্ত আর্দ্রতা মাশরুষের বৃদ্ধির জন্য ভালো নয়। আবহাওয়া যেন আর্দ্র থাকে কিন্তু অতিরিক্ত আর্দ্র অর্থাৎ ভেজা আবহাওয়া মাশরুমের ভালো ফলনে অন্তরায় হয়ে দাড়ায়। সে জন্য ভালো মানের স্প্রেয়ার দিয়ে জল স্প্রে করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে স্পে করার সময় যাতে বৃষ্টির ফোটার মতো জলের ফোঁটা মাশরুমের সিলিন্ডার এ না লেগে থাকে। এতে মাশরুমের বৃদ্ধি ব্যাহত হবে এবং অনাবশ্যকীয় রোগ আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
১৩। ঘরের তাপমাত্রা যাতে হঠাৎ করে বেড়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাপমাত্রা বাড়ানোর দরকার হলে তা যেন ধীরে ধীরে বাড়ানো হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
১৪। দুটি সিলিন্ডারের মাঝখানে কিছুটা ফাকা জায়গা রাখতে হবে। উপযুক্ত ফাঁকা জায়গা না রাখলে ঘরের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে এবং এতে মাশরুমের উৎপাদন মার খাবে।
১৫। সিলিন্ডারে মাশরুমের বীজ লাগানোর ২৪ ঘন্টা মধ্যে পলিথিনের ঢাকা খলে রাখা যাবে না। দরকারে কিছুটা বেশি সময় পলিথিনের ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে।
১৬। ঘরের মধ্য কিছুটা হাওয়া বাতাসের প্রবাহ আর্দ্রতার ভারসাম্য বজার রাখতে সাহায্য করে এবং কম বৃদ্ধি প্রাপ্ত মাশরুমের পরিপূর্ণতা আনতে সাহায্য করে।
Share your comments