Paddy Disease – ধান চাষে বৈজ্ঞানিক উপায়ে কীট ও রোগ ব্যবস্থাপনা

আমাদের রাজ্যে বহু জায়গায় ধান চাষ হয়। ভারতবর্ষে ফসলের মোট সম্ভাব্য উৎপাদনের ১৫-২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয় কীটশত্রুর কারণে। আর সাধারণভাবে আমরা কীটশত্রু বলতে রোগ এবং পোকাকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকি কারণ তার আক্রমণের স্পষ্ট চিহ্ন আমরা খালি চোখে দেখতে পাই আক্রান্ত গাছের মধ্যে দিয়ে।

স্বপ্নম সেন
স্বপ্নম সেন
Paddy disease management
Paddy Disease (Image Credit - Google)

আমাদের রাজ্যে বহু জায়গায় ধান চাষ হয়। ভারতবর্ষে ফসলের মোট সম্ভাব্য উৎপাদনের ১৫-২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয় কীটশত্রুর কারণে। আর সাধারণভাবে আমরা কীটশত্রু বলতে রোগ এবং পোকাকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকি কারণ তার আক্রমণের স্পষ্ট চিহ্ন আমরা খালি চোখে দেখতে পাই আক্রান্ত গাছের মধ্যে দিয়ে।

কীটশত্রুর দ্বারা আমাদের ফসলের মোট যে ক্ষতিসাধন হয়, তার বেশীরভাগটাই সংঘটিত হয় আগাছার দ্বারা প্রায় ৩৩ শতাংশ, যেখানে পোকার দ্বারা ২৬ শতাংশ, রোগের জন্য ২০ শতাংশ এবং অন্যান্যর জন্য ২১ শতাংশ - Directorate of Weed Science Research (DWSR) এর এই তথ্যই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, রোগ নিয়ন্ত্রণ কে আমাদের কতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

বীজতলায় আগাছা দমন (Weed control in seedbed) -

অনেক ক্ষেত্রেই ধানের বীজতলায় আগাছা দমন একটা প্রকট সমস্যা। সেক্ষেত্রে আগাছানাশক হিসেবে বিস পাইরিব্যাক সোডিয়াম (নমিনি গোল্ড/তারাক/আ্যাডোরা/ম্যাচো) ৩৫ মিলি/বিঘা বা প্রোটিলাক্লোর + সেফনার (সফিট/ইরেজ এন) ১৭০ মিলি/বিঘা জমির জন্য বীজ বোনার ১ দিন পর আর্দ্র মাটিতে স্প্রে করতে হবে।

চাষে আগাছা দমন (Weed Management) :

আগাছা সঠিক সময়ে নিয়ন্ত্রণ না করলে ধানের ফলন ২০-৩০ শতাংশ নষ্ট করে দিতে পারে। রোয়ার ২০ ও ৪০ দিন পর নিড়ান দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে অপ্রতুল কৃষি শ্রমিক এবং অত্যাধিক মজুরীর কারণে উৎপাদন খরচ অনেক বেশী হয়ে যাচ্ছে বলে আগাছা নাশকের ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জমিতে আগাছা প্রাদুর্ভাবের সময় অনুযায়ী রোয়ার ১-৩ দিনের মধ্যে বিঘা প্রতি ১৩৫ মিলি প্রেটিলাকোর বা ৪-৫ দিনের মাথায় ৩৩৫ মিলি বিউটাক্লোর বা ১৪ দিনের মাথায় ৩৫ মিলি বিসপাইরিব্যাক সোডিয়াম বা ২১ দিনের মাথায় ৯.৩ গ্রাম অ্যাজিমসালফিউরন ৪ ব্যারেল তথা ৬০ লিটার জলে মিশিয়ে ছিপছিপে আর্দ্র জমিতে প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

 পরিচর্যা (Crop Care) -

ভালো ফলন ও ভালো লাভের জন্য শস্য সুরক্ষা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কারণ, সঠিক সময়ে তা নিয়ন্ত্রণ না করলে প্রভূত ক্ষতির সম্ভবনা থাকে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কীটশত্রু ও তার দমন ব্যবস্থা সম্পর্কে উল্লেখ করা হল –

১) মাজরা পোকা – রোয়ার সময় দানাদার কীটনাশক যেমন কারটাপ ৩ কেজি/বিঘাতে প্রয়োগ করুন। আর মূল জমিতে প্রথমে নিমতেল ও পরে ফ্লুবেন্ডিয়ামাইড ২.৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার জলে স্প্রে করুন।

২) বাদামী শোষক পোকা – প্রতি ১০ সারি রোয়ার পর ২ সারি বাদ দিন এবং প্রয়োজনে বুপ্রোফেজিন ১ মিলি/লি জলে স্প্রে করুন।

৩) গন্ধী পোকা ¬– বিষ টোপ ব্যবহার করুন।

৪) পামরী পোকা – কেরোসিন ভেজা দড়ি গাছের উপর দিয়ে টানুন।

৫) পাতামোড়া পোকা – এক্ষেত্রে ফিপ্রোনিল ১ মিলি/লি জলে মিশিয়ে স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

৬) শ্যামাপোকা ও টাংরো ভাইরাস – চারা তোলার আগে ফিপ্রোনিল ১ মিলি এবং মূল জমিতে ইমিডাক্লোরপ্রিড ৩ মিলি/১০ লি জলে ব্যবহার করা হয়।

৭) বাদামী দাগ – অবশ্যই বীজ শোধন করুন আর প্রয়োজনে কার্বেন্ডাজিম ১ গ্রাম/লি জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন।

৮) খোলা ধ্বসা – ভ্যালিডামাইসিন ২.৫ মিলি/লি জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন।

আরও পড়ুন - Low Cost Cultivation - স্বল্প খরচে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করে আয় করুন দ্বিগুণ মুনাফা

৯) ঝলসা রোগ – এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। সকালের দিকে দড়ি টেনে পাতার শিশির ঝেড়ে ফেলুন। ট্রাইসাইক্লাজোল ০.৫ গ্রাম/লিটার জলে মিশিয়ে ভালো করে স্প্রে করুন।

১০) কলম স্পট বা ভুষো রোগের জন্য বীজ শোধন অবশ্যই করুন আর ফুল আসার আগে কপার হাইড্রক্সাইড ২ গ্রাম/লি জলে মিশিয়ে স্প্রে করুন।

তথ্যসূত্র - ড.কিরনময় বাড়ৈ (বরিষ্ঠ বিজ্ঞানী ও প্রধান, হাওড়া কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগৎবল্লভপুর, হাওড়া)

আরও পড়ুন - Intercropping – অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে একই জমিতে দুই ফসলের চাষ পদ্ধতি

Published On: 04 July 2021, 05:43 PM English Summary: Pest and disease management in scientific way in paddy cultivation

Like this article?

Hey! I am স্বপ্নম সেন . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters