গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে কৃষি গোষ্ঠীগুলির অবদান অনস্বীকার্য। একক দক্ষতায় কৃষি কাজ এর মাধ্যমে সাফল্য লাভের প্রমাণ অনেক থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ব্যবস্থায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এর সংখ্যা বেশি থাকার দরুন এখানে কৃষি গোষ্ঠীর গুরুত্ব অপরিসীম।
জমির পরিমাণ কম হওয়ার জন্য এখানে মাথাপিছু উৎপাদন কম হয় এবং ফসলের দাম পাওয়ার সার্বজনীন সমস্যা তো আছেই, ফলে কৃষকের আয় ব্যহত হয় আর নাবার্ড, এসএফএসি- র মত সংগঠন গুলি এই কৃষি গোষ্ঠী গুলিকে অনেক সাহায্য করছে ফলে সহজে ঋণ, বীজ, সার, যন্ত্রপাতি পাওয়া যাচ্ছে গোষ্ঠী গঠনের মাধ্যমে।
বিশেষ করে করোনা আবহয়ে আমাদের রাজ্যে কৃষকরা আজ ঋণে আবদ্ধ, সঙ্গে আছে অপুষ্টি, অশিক্ষার মত কঠিন সমস্যা। আর্থিক উন্নয়ন হলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কৃষকদের স্বল্প জমি থেকে আয় করতে গেলে চাই বিজ্ঞানসম্মত চাষ আবাদ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার, উন্নতমানের ফসলের চাষ ও তার ন্যায্য মূল্য। বাণিজ্যকরণের মাধ্যমে চাষিরা সংঘবদ্ধ ভাবে পেতে পারে প্রচুর লাভ কিন্তু এই উদ্যোগ সফল করতে গেলে কোম্পানি গুলিকে সঠিক দিশা দেখাতে হবে।
চাষিদের সংগঠিত করার মাধ্যমে তাদের উৎপাদন বাণিজ্যিক সংস্থার হাতে বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এখনও আমাদের কৃষি সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতা কিন্তু বলছে অবস্থার উন্নতি বিশেষ হয়নি দায়সারা কৃষক গোষ্ঠী গঠন করেই চলেছে সরকার, কিন্তু তাদের দেখভালের বিষয়টিতে রয়েছে এখনও গাফিলতি।
সম্প্রতি ‘কৃষি বিল’-এর প্রতিবাদে তোলপাড় সমগ্র বিশ্ব। প্রাচীন প্রবাদে আছে ‘একতাই বল’, বিশ্বে যখনই শোষিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষ একত্রিত হয়েছে তখনই ঘটেছে বিপ্লব। প্রান্তিক মানুষগুলি ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের হকের পাওনা। আমাদের রাজ্যেও কৃষকদের উচিত সংঘবদ্ধ হওয়া সাম্প্রতিক রাজ্য নির্বাচন গুলির ফল কিন্তু আমাদের কৃষক অসন্তোষ এর দিকেই নির্দেশ করছে।
নতুন বছরের শুরুতেই তাই আমরা কৃষক সংগঠন গুলির ওপরেই আলোকপাত করছি। নতুন বছরে আমাদের কৃষক ভাইরা ভালো থাকুন , আর আসুন আমরা গ্রাম বাংলার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। কৃষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অঙ্গীকার করে তাদের সাথে এগিয়ে চলি।
আরও পড়ুন - খরিফ মরসুমে আগাছা নিয়ন্ত্রণ – ফসল উৎপাদনে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
Share your comments