কৃষকদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে লোন দেওয়া হয় যা কৃষকবন্ধুদের জন্য খুবই সুবিধাজনক | এমনকি স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি তাদের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ গ্রহন করে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের সুদ লাঘবের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি সুদ ভর্তুকি প্রকল্প চালু করেছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই অভিনব প্রকল্পটির রুপায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার নিগম লিমিটেডকে। এই প্রকল্পটির নাম “পশ্চিমবঙ্গ স্বনির্ভর সহায়ক প্রকল্প বা WBSSP”। তবে দেখে নিন, কি কি প্রকল্প (Bank loan schemes) বিদ্যমান;
কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (Kisan Credit Card):
এটা এমন একটা যোজনা যার মাধ্যমে কৃষক তাঁর সারা বছরে বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের সমস্ত খরচ মেটানোর জন্য ঋণ পাবেন।
কারা এই সুবিধা পাবেন?
১)যাদের চাষযোগ্য জমি আছে
২) বর্গাদার, পাট্টাদার, ভাগচাষি, মৌখিক ইজারা চাষি
৩) স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং যুগ্ম ঋণ দায় গোষ্ঠীর চাষিরা
কি জন্য ঋণ পাবেন?
১) কৃষিকাজে ব্যবহার্য সরঞ্জাম সারানোর জন্য |
২) কৃষিকাজে ব্যবহৃত সারের দাম, শ্যালো ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিদ্যুতের বিল এবং ডিজেল বা কেরোসিনের দাম মেটানোর জন্য।
৩) কৃষিকাজের বিভিন্ন খরচ যেমন বীজ, সার ইত্যাদি কেনার খরচ |
সুবিধা (Scheme benefits):
১) ১ লক্ষ টাকা ঋণ প্রর্যন্ত কোনও আমানত লাগবে না।
২) সুদ মাত্র বাৎসরিক ৭ শতাংশ এবং সময়মতো ঋণশোধে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ সুদ ছাড়।
৩) ৫০ হাজার টাকা ঋণ পর্যন্ত কোনও নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট লাগবে না।
ফসল উৎপাদনের জন্য সোনা বন্ধকী ঋণ:
এটি এমন একটা যোজনা যার মাধ্যমে কৃষক যে কোনও সময় তাঁর কৃষিকাজের জন্য যে কোনও প্রয়োজনে ঋণ পাবেন। ঋণ পরিশোধ স্বেচ্ছানুসারে।
কারা এই ঋণ পাবেন?
১) যাদের চাষযোগ্য জমি আছে
২) বর্গাদার, পাট্টাদার, ভাগচাষি, মৌখিক ইজারা চাষি
৩) স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং যুগ্ম ঋণ দায় গোষ্ঠীর চাষিরা
সুবিধা:
১) সুদ মাত্র বাৎসরিক ৪ শতাংশ।
২) কোনও প্রতীক্ষার দরকার নেই।
৩) জমি বন্ধক রাখার দরকার নেই।
স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রকল্প:
এই যোজনা যার মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী (যাতে ১০ থেকে ২০ জন সদস্য আছেন) ব্যাঙ্ক থেকে বিনা জামানতে ঋণ পাবেন তাঁদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য। এ ছাড়া গোষ্ঠীর প্রতিটি সদস্য ব্যাঙ্কের সহযাগ নিবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। এবং গোষ্ঠীর সদস্যরা কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার, শ্যালো, বীজ ইত্যাদির যাবতীয় খরচ মেটানোর জন্য ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক ঋণ অনুমোদন:
গোষ্ঠীর সঞ্চিত মূলধনের ১ থেকে ৪ গুন টাকা ঋণ হিসাবে মঞ্জুর করা হয়। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে তার সদস্যদের জন্য ঋণ মঞ্জুর করা যেতে পারে। গোষ্ঠী তার সদস্যদের যে কোনও জরুরি প্রয়োজনে যেমন চিকিৎসা, বিবাহের খরচ এবং উৎপাদনের সাহায্যকারী কোনও সম্পদ ক্রয়ে ঋণ দেওয়া যায় তার সিদ্ধান্ত নেবে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ব্যাঙ্কের সহযোগ নিবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঋণ পরিশোধ:
দল সমষ্টিগত ভাবে ঋণ পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দেওয়া ব্যাঙ্কের ঋণের উপর সুদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ অনুযায়ী নেওয়া হয়। কিন্তু সদস্যদের ঋণের জন্য কত হারে সুদ দিতে হবে তা দলই ঠিক করবে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যাঙ্ক থেকে নগদে অথবা চেকে টাকা তুলবেন।
আরও পড়ুন - PM KISAN - প্রধানমন্ত্রী কিষাণের কিস্তি পাননি? এই নম্বরগুলিতে কল করুন এবং অবিলম্বে ২০০০ টাকা পান
কিষাণ গোল্ড কার্ড প্রকল্প (Kishan Gold Card scheme):
এটা এমন একটা যোজনা যার মাধ্যমে চাষিবন্ধুরা ব্যাঙ্ক থেকে কৃষিজমি কেনার জন্য/নিজস্ব ফার্মশেড তৈরি করার জন্য/চিকিৎসার জন্য/ছেলে মেয়ের বিবাহের জন্য এবং সর্বোপরি যখন উৎপাদিত ফসলের দাম বাজারে পাওয়া যায় না সেই সময় কাজ চালানোর জন্য ঋণের ব্যবস্থা করে থাকেন। অনুর্বর কৃষিজমিকে উর্বর করার জন্যও এই পরিকল্পের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে থাকেন |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Jan Dhan AC - ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে? পাবেন ২ লাখ টাকার বীমা কভারেজ, কীভাবে জানুন বিস্তারিত
Share your comments