আমাদের দেশে ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন। শুধুমাত্র কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তবে কৃষিক্ষেত্রে আগের তুলনায় এসেছে পরিবর্তন। কৃষকদের ক্ষেতে কাজের সুবিধার্থে এবং শারীরিক ও আর্থিক ব্যয় কমাতে এখন বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ (Farm Equipment)। কিন্তু এই যন্ত্রাংশগুলিও ক্রয় অনেক কৃষকের পক্ষে ব্যয়সাধ্য হয়ে ওঠেনা। তাই দেশের কৃষিখাতকে উন্নীত করতে, কৃষকদের মঙ্গলার্থে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার কৃষি যান্ত্রিক প্রকল্প বা কৃষি যন্ত্রে ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা করে থাকেন। এই প্রকল্পের আওতায় কৃষক যে ভর্তুকি এবং অন্যান্য সুবিধা পাবেন, তা সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগগুলি সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে থাকে।
কৃষি যন্ত্রে ভর্তুকি (Farm equipment) -
সরকারী সহায়তায় এখন দেশের সমস্ত জায়গার কৃষকবন্ধুরা বিভিন্ন ধরণের ট্র্যাক্টর, ফসল কাটার মেশিন, সকল ধরণের স্টিম ড্রায়ার, রোপণ মেশিন, ওয়াশিং মেশিন, অ্যালুমিনিয়ামের মই, ইলেকট্রনিক সোলার ফার্ম, ক্লিনিং মেশিন, লন মোয়ার সহ গ্র্যান্ডিং মেশিন এবং অন্যান্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে পাবেন ভর্তুকি। আজ থেকেই শুরু হয়েছে আবেদন, ১ লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা যাবে এই আবেদন।
শর্তাবলী –
১) FSSM ও CHC প্রকল্পের জন্য অনলাইনে এবং OTA-SFI প্রকল্পের জন্য অনলাইন ও অফলাইনে আবেদন করা যাবে।
২) কৃষিযন্ত্রাদি ভাড়া কেন্দ্র (CHC) ছাড়া অনলাইনে আবেদনের প্রিন্টকপি এখন অফিসে জমা নেওয়া হবে। তবে অফলাইনে করা OTA-SFI প্রকল্পের আবেদনপত্র অফিসের ড্রপ বক্সে জমা দিতে হবে।
৩) কৃষিযন্ত্রের সর্বাধিক ক্রয়মূল্য পশ্চিমবঙ্গ এগ্রো-ইন্ডাস্ট্রিস কর্পোরেশন লি. নির্ধারিত মূল্যের অধিক হবে না।
৪) পাওয়ার টিলার ও সোলার পাম্প নিতে আগ্রহী কৃষকের ১.৫ একর জমির মালিকানা থাকতে হবে।
৫) কৃষিযন্ত্রাদি ভাড়া কেন্দ্র (CHC) ছাড়া ট্র্যাক্টর বিতরণের সুযোগ এ বছর থাকছে না।
উপভোক্তার পক্ষে ভর্তুকি প্রদানের আদেশনামা প্রদান করার ১৫ দিনের মধ্যে (৪৫ দিন সোলার পাম্প ও মিনি ডালমিলের জন্য) নির্ধারিত কৃষিযন্ত্র অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকে কিনে সংশ্লিষ্ট নথি সহকারে ব্লক কৃষি করণে জমা করতে হবে।
৬) কৃষিযন্ত্র ক্রয় যাচাই এরপর নির্ধারিত ভর্তুকির টাকা উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি প্রদান করা হবে।
৭) ভর্তুকির পরিমাণ শক্তিচালিত যন্ত্রের জন্য (FSSM) মোট দামের কমপক্ষে ৪০% থেকে ৭৫% বা সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
৮) ভর্তুকির পরিমাণ ছোট যন্ত্র ক্রয়ের জন্য (OTA-SFI) মোট দামের ৫০% বা সর্বোচ্চ ১০০০০ টাকা।
৯) কৃষিযন্ত্রাদি ভাড়া কেন্দ্র (CHC) স্থাপনের জনা ২০ লক্ষ টাকা থেকে ২৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রকল্পব্যয়ের ৪০% বা সর্বোচ্চ ১০০ লক্ষ টাকা ভর্তুকি প্রদানের সুযোগ আছে। এ বছর মাইক্রো-ইরিগেশন ও পোস্ট-হারভেস্ট বিষয়ক CHC স্থাপনের জন্য পৃথক আবেদনপত্র নেওয়া হবে।
কৃষি যন্ত্রাংশে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি- (Agriculture machinary) কৃষিকাজ এখন আরও সহজ, কৃষি যন্ত্রাংশে পেয়ে যান ৫০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি, আবেদন পদ্ধতি নিম্নে উল্লিখিত
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া (Online application) -
১) মাটির কথা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লগ ইন করে আবেদনকারীকে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ২০২০-২১ চয়ন করতে হবে।
২) এখান থেকে কৃষক নিজের EPIC বা ভোটার কার্ড নম্বর দিয়ে লগ ইন করে আবেদন জানাতে পারেন।
৩) রেজিস্ট্রেশন না করা থাকলে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করুন।
৪) রেজিস্ট্রেশনের প্রারম্ভে আপনার ভোটার কার্ডের নম্বর প্রদান করুন। ভোটার কার্ডের নম্বরটি আপনার লগইন আইডি।
(৫) আবেদনের সময় ভোটার কার্ডের নম্বর এবং ব্যাংকের তথ্য আপনাকে আপলোড করতে হবে JPEG/JPG ফরম্যাটে (সাইজ ২০০ কেবির মধ্যে)।
(৬) প্রদত্ত ভোটার কার্ডের নম্বর ও আপলোড হওয়া কার্ডের তথ্য এক হতে হবে, নতুবা আপনার আবেদন গৃহীত হবে না।
(৭) রেজিস্ট্রেশনের সময় মৌজা ও খতিয়ান নম্বর প্রদান করতে হবে।
সরাসরি আবেদনের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে - https://wbfarm.matirkatha.net/applicant
বিশেষ দ্রষ্টব্য -
১. খামার যান্ত্রিকীকরণের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রকল্প (FSSM)।
২. ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের ক্ষুদ্র খামার সামগ্রী ক্রয়ের জন্য এককালীন আর্থিক সহায়তা (OTA-SFI)।
৩. গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের ফার্ম সংক্রান্ত কাস্টম হিয়ারিং সেন্টার (কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া কেন্দ্র) স্থাপনের জন্য ক্রেডিট লিংকড সাবসিডি স্কিম(CHC)।
কোন সমস্যা হলে হেল্পলাইন নম্বর – ৮৩৩৬৯৫৭২৯৮ -এ যোগাযোগ করতে পারেন সকাল ১০-৬ টার মধ্যে।
Image source - Google
Related link - (Agricultural implements) পশ্চিমবঙ্গে কৃষিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রের কাজ ও তার মূল্য
Share your comments