আমাদের মানবদেহের জন্য কলা অত্যন্ত উপকারী, তা আমরা সকলেই জানি। তবে এই ফলটি আমাদের দেহে বিশেষভাবে কোন কাজ করে, সেই সম্পর্কে আজ আপনাদের তথ্য প্রদান করব। পটাসিয়াম থেকে শুরু করে একাধিক পুষ্টির উৎস, এই ফলটি হ'ল স্বাস্থ্যকর খাবারগুলির অন্যতম। সারাবছরই আমাদের খাদ্যতালিকায় এই ফলটি অনায়াসে রাখা যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলায় রয়েছে- জল- ৭০.১%, আমিষ- ১.২%, ফ্যাট- ০.৩%, খনিজ লবণ- ০.৮%, ক্যালসিয়াম- ৮৫মি.গ্রা., ফসফরাস- ৫০মি.গ্রা., আয়রন- ০.৬মি.গ্রা., ফাইবার- ০.৪%, শর্করা- ৭.২%।
জেনে নিন আমাদের শরীরের জন্য কলা কেন প্রয়োজন (Benefits of Banana)-
১) হার্টের সুরক্ষায়- কলা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ, এমন আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখতে গেলে অন্যান্য উপাদানের মতো প্রয়োজন রয়েছে পটাশিয়ামেরও৷ যার ফলে আমাদের হৃদযন্ত্র শুধু সুস্থই থাকে না, এর কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়, এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে৷
২) হজমশক্তি বাড়াতে- কলাতে ফাইবার বিদ্যমান, যা আমাদের হজমে খুবই সাহায্য করে এবং পরিপাকক্রিয়াতেও সাহায্য করে৷ গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানেও এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়াও কলার মধ্যে থাকা উপাদানগুলি আমাদের শরীর থেকে মেদকে দূরে রাখে৷ এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে থাকে৷
৩) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে- পটাশিয়ামের পাশাপাশি কলাতে সোডিয়াম এবং কার্বোহাইড্রেট এই দুটি উপাদানও বিদ্যমান, যা আমাদের শরীরের প্রতিদিনের এই উপাদানের যে চাহিদা তার জোগান দেয় এবং সেই সঙ্গে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে।
৪) ওজন নিয়ন্ত্রণে- কলার মধ্যে বিদ্যমান ফাইবার এক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজন৷ প্রতিদিন নিয়ম করে একটি বা দুটি কলা শরীর থেকে বাড়তি মেদ যেমন দূরে রাখে তেমনই ওজনও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে৷
৫) হাড়ের শক্তিবৃদ্ধিতে- কলাতে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম হাড়ের গঠন মজবুত করতে খুবই প্রয়োজনীয়৷ আমাদের শরীরকে অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে এই উপাদানগুলি৷ তাই খাবারের তালিকায় রোজ একটা করে কলা থাকা আবশ্যক৷
৬) রক্তাল্পতার সমস্যা সমাধানে- অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন৷ কলাতে থাকা ভিটামিন এই সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে৷ কলাতে থাকা তামা এবং লোহাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷
৭) ডায়েরিয়া নিয়ন্ত্রণে- ছোট থেকে বড় সকলকেই ডায়েরিয়ার মতো সমস্যা থেকে বাঁচাতে কলার জুড়ি মেলা ভার৷ পেটের কোনও সমস্যা, কোষ্ঠাকাঠিন্য দূর করতে কাঁচা কলা, পাকা কলা উভয়ই খুব কার্যকরী৷
৮) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে- কলাতে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে, যা, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে৷
রূপচর্চায় কলার ব্যবহার -
৯) ত্বকের সুরক্ষায়- ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে, ব্রণর সমস্যা কমাতে, বলিরেখা পড়া রুখতে, পাকা কলা চটকে, বা তার সঙ্গে কিছুটা মধু মিশিয়ে অনেকে মুখে ২০ মিনিট ফেসপ্যাক হিসেবে মেখে তা ধুয়ে ফেলেন৷
১০) চুলের সুরক্ষায়- চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় অনেকে পাকা কলা ব্যবহার করেন৷ পাকা কলার সঙ্গে দই মিশিয়ে চুলে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে দিলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো হয়৷ মজবুত হয়৷ এছাড়া পাকা কলা, নারকেলের দুধ, অ্যাভোক্যাডো মিশিয়ে, সেই পেস্ট চুলে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে দিলে চুল নরম হয়৷
আরও পড়ুন - সুস্থ থাকতে হলে খাদ্যতালিকায় যোগ করুন পেঁপে (Papaya Health Benefits)
Share your comments