বর্তমানে রসুন পৃথিবীর বহু স্থানে উৎপাদিত হয়। সাধারণত ঠাণ্ডা ও অন্ধকার আবহাওয়ায় রসুন উৎপাদন খুব ভালো হয়। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ জড়িবুটি হিসেবে বিভিন্ন প্রকার খাদ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং যে কোনো অবস্থাতে এটি অ্যান্টিসেপ্টিক হার্ব হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
অস্থিকলার পক্ষে উপকারী প্রভাব -
রসুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে খনিজের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়, তাই রসুনের দ্বারা আমাদের অস্থিমজ্জার স্বাস্থ্য ঠিক রাখা সম্ভব, আসলে এই অস্থিমজ্জার স্বাস্থ্য বিষয়ে আমাদের কোনো যান্ত্রিক সহায়িকা নেই।
রক্ত শোধক -
রসুন এমন একটি উপকরণ যা আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে রক্তকে ও শরীরের বহির্ভাগে চর্মকে পরিশোধিত করে। যদি প্রতিদিন এক কোয়া রসুন উষ্ণ জলের সাথে খাওয়া যায় এবং সারাদিন যদি প্রচুর জল খাওয়া যায় তবে এই রসুনের সামান্য কোয়াগুলি মানবশরীরের রক্ত শোধনে এক উপকারি সেবক হিসেবে কাজ করে যাবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এক্ষেত্রে রসুন কে ঈষদ-উষ্ণ জলে লেবু মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া সম্ভব এবং সেটি খুব সকালে খালি পেটে গ্রহণ করতে হবে।
সর্দি-কাশিতে উপকারী -
রসুনের কোয়া বেটে মধু ও আদা মেশানো চায়ের সাথে খেলে তা সর্দি কাশি থেকে আরাম প্রদান করে। কোনো কারণে যদি নাক বন্ধ হয়ে যায় বা হালকা জ্বর থাকে তবে এই চায়েতেই কাজ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে যদি শুধু গরম রসুনের স্যুপ খাওয়া সম্ভব হয় তাহলে সেটি যেমন উপকারী তেমনি সুস্বাদু ও দৈহিক আরামদায়কও বটে।
হৃদয়ের স্বাস্থ্যরক্ষক -
হৃদ-স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রসুন একটি কার্যকরি মহৌষধ। বহু গবেষণায় দেখা গেছে রসুন রক্তের কোলেস্টেরল ও ফ্যাটকে প্রশমিত করে, ফলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে। এছাড়াও রসুন ব্যবহারের ফলে আরও কিছু রোগ প্রতিহত হয় যেমন-অ্যাথেরোক্লেরোসিস, হাইপারলিপিডিমিয়া, হাইপারটেনসন এবং থ্রম্বোসিস ইত্যাদি। এছাড়াও শিরা বা ধমনিতে রক্ত জমাট বাধার থেকেও রক্ষা করে এই সামান্য রসুন।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ -
গবেষণার থেকে জানা গেছে রসুন, মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে উচ্চ-রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। অবাক করার মতো ব্যাপার হলো এক ফোঁটা রসুনের নির্যাস দিয়ে খুব সহজেই রক্তচাপ কমানো যায়। রসুনের মধ্যে থাকে অ্যালিসিন যৌগ যা পাল্মোনারি আর্টারির পেশিকে স্থিতিস্থাপক রাখতে সাহায্য করে এবং আর্টারির মুখকে প্রশস্ত করে ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক -
রসুনের মধ্যে যে সমস্ত পুষ্টি উপাদান গুলি নিহিত থাকে সেগুলি ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমতে সক্ষম। রসুনের প্রাত্যহিক ব্যবহারে পাকস্থলী, বৃহদন্ত্র, এসোফেগাস, অগ্ন্যাশয়, প্রোস্টেট ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের মতো ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট এর মতে রসুনের মধ্যে সবথেকে বেশী ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্ষমতা রয়েছে।
মধুমেহ ও রসুন -
মধুমেহ রোগাক্রান্ত মানুষরাও রসুনের থেকে বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন। পরীক্ষামূলক গবেষণা থেকে জানা গেছে এই রসুন রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখে ও মধুমেহ রোগীদের ক্ষেত্রে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
রসুন খাওয়ার নিয়ম -
রসুন এর বিভিন্ন রোগহরণকারী গুরুত্বের জন্য একে “সর্বরোগহর” বলা হয়। তাই একে বিশেষ নিয়মানুসারে গ্রহণ করলে তা যথেষ্ট উপকারি। তেল ঝাল মশলার সাথে কষিয়ে রান্না করা রসুনের কোনো গুণবত্তা থাকে না, তাই কাঁচা রসুনের গন্ধ অসহ্য হলেও এই অবস্থায় রসুন খাওয়াই উচিত, কারণ কাঁচা অবস্থায় এর মধ্যেকার ভিটামিন ও খনিজগুলির কাজ অনেক বেশী হয়।
Image source - Google
Related link - (Health benefits of papaya) পেঁপের স্বাস্থ্যগুণ - চোখের দৃষ্টি সঠিক রাখতে খাওয়া শুরু করুন পেঁপে
Share your comments