নিরামিষ খাবারের কথা শুনেই অনেকের খাওয়ার ইচ্ছেটাই চলে যায়। কিন্তু জানেন কি নিয়মিত নিরামিষ খেলে কমবে হৃদরোগের ঝুঁকি? সম্প্রতি আমেরিকা থেকে প্রকাশিত একটি জার্নালে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক স্তরের এই গবেষণার কথা। একটি ঠিকঠাক ডায়েট আপনাকে দিতে পারে সুস্থ রোগ-মুক্ত জীবন |
কি বলছে গবেষণা?
গবেষকদের মতে কমবয়সি তরুণ-তরুণীরা ও মাঝবয়সি মহিলারা নিয়মিত স্বাস্থ্যকর নিরামিষ খাবার খেলে হৃদ্রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমবে। প্রায় ৫০০০ জন পূর্ণবয়স্ককে নিয়ে ৩০ বছর ধরে সমীক্ষাটি করা হয়।
এঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ মানুষ, যাঁরা স্বাস্থ্যকর নিরামিষ খাবার খেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৫২ শতাংশ কম ছিল। তবে সকলেই যে প্রথম থেকে নিরামিষাশী হবেন, এমন তো কোনও কথা নেই। তাই গবেষকরা বলছেন, মানুষ নিজের জীবনের যে কোনও স্তরেই খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলতে পারে। এই বদলটিও যে হৃদযন্ত্রের পক্ষে উপকারি হতে পারে, এটিও ছিল গবেষণার অন্যতম প্রতিপাদ্য। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ২৫-৫০ বছর বয়সিদের মধ্যে যাঁরা খুব তাড়াতাড়ি নিজেদের খাবার অভ্যাসে বদল এনেছেন, তাঁদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যারা খাবারের মান তেমন বদলাতে পারেননি তাঁদের চেয়ে প্রায় ৬১ শতাংশ কমে গিয়েছে। কাজেই বোঝা যাচ্ছে কমবয়স থেকে ক্রমেই নিরামিষ খাবারের দিকে ঝুঁকছেন যাঁরা, তাঁদের হৃদরোগের আশঙ্কা কমছে।
আরও পড়ুন - Health benefits of Triphala: ত্রিফলার আশ্চর্য গুনে ভালো থাকবেন আপনিও
কি খাবেন আর কি খাবেননা?
গবেষণা বলছে খাবারে বেশি পরিমাণে ফল, শাক-সব্জি, দানা শস্য, কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার, বাদাম, মটরশুঁটি, উদ্ভিজ্জ তেল রাখুন। মাংস বা মাছ খেতে হলে চামড়া ছাড়ানো মুরগি ও মাছ খান। এগুলি সবকটিই হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সহায়তা করে। আর সবচেয়ে ক্ষতিকর খাবার, যেমন উচ্চ ফ্যাটযুক্ত রেড মিট, ফ্রায়েড পটেটো, প্রসেসড ফুড, চিনি ও মিষ্টিযুক্ত খাবার, সফট ড্রিংক ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
প্রোটিন:
হৃদরোগীর জন্য প্রোটিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা পুষ্টি উপাদান। যেসব হৃদরোগীর কিডনি ভালো থাকে তাঁদের জন্য শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য কমপক্ষে ১.২ থেকে ১.৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে হয়। মাছ হৃদরোগীদের প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। মাছ থেকে প্রোটিন ছাড়াও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা হার্টের জন্য উপকারী। এ ছাড়া মুরগির মাংস, ডাল, ডিম, লো ফ্যাট দুধ, দই, বাদাম প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। তবে কিডনির সমস্যা থাকলে ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শমতো প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত৷
শাকসবজি ও ফল:
ছোটবেলা থেকে যারা ফল ও শাকসবজি খায় তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তবে হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতেই শুধু নয়, হৃদরোগের প্রতিকারের জন্য শাকসবজি ও ফলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলের ও সবজির পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে আবার ফল ও সবজির ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে, ওজন ও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সবজির মিনারেল ও ভিটামিন, বিশেষ করে ভিটামিন সি, ই ও এ রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে যা, একজন হৃদরোগীর অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুন - Monsoon Veg and Fruits: বর্ষায় রোগ-প্রতিরোধ বাড়াতে খান এই কয়েকটি সবজি ও ফল
Share your comments